দুজন প্রবীন মুক্তিযোদ্ধার অনুরোধে পৌর কর্তৃৃপক্ষ সেদিন গাড়িটি দিয়েছিল। তা নাহলে একজন মুক্তিযোদ্ধার লাশ বহনে কখনই পৌরসভার বর্জ্য ফেলার গাড়ী ব্যবহার হতো না। শনিবার (২৯ জানুয়ারী) বিকেল ৫ টায় শেরপুর প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের সাথে এক মতবিনিময় সভায় এমন কথা জানান, শেরপুর পৌরসভার মেয়র গোলাম মোহাম্মদ কিবরিয়া লিটন। এসময় উপস্থিত সাংবাদিকদের মেয়র লিটন আরও জানান, আমি নিজেও একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। এছাড়াও আমি বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড শেরপুর জেলা ইউনিটের সভাপতি। সেদিন (২৭ জানুয়ারী) দুজন প্রবীন মুক্তিযোদ্ধার অনুরোধে মুক্তিযোদ্ধা তালাপতুফ হোসেন মঞ্জুর লাশ বহনে পৌরসভার ময়লা ফেলার গাড়ীটি পাঠানো হয়। এরপর এই ঘটনায় কয়েকটি বেসরকারী টিভি চ্যানেল ও অনলাইন নিউজ পোর্টালে খবর আসে। যেটির সাথে ব্যক্তিগতভাবে আমি ও পৌর কর্তৃৃপক্ষের কারও দায় নেই। ইতিমধ্যে শেরপুর পৌরসভায় একটি লাশবাহী গাড়ী কেনার জন্য ২২ লক্ষ টাকা জমা হয়েছে। আমি দুদফায় মন্ত্রনালয়ে গাড়ী ক্রয়ের অনুমোদন চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছি। সেটির অনুমতিপত্র পেলে আমরা যে কোনদিন একটি লাশবাহী গাড়ী কিনতে পারবো। এসময় বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সেক্টর কমান্ডার্স ফোরামের সাধারন সম্পাদক অধ্যক্ষ মো. আখতারুজ্জামান বলেন, সাংবাদিকরা একজন দেশপ্রেমিক মুক্তিযোদ্ধার শেষ বিদায়ের বিষয়টি অনুধাবন করে খবরটি করেছেন। ময়লার গাড়িতে করে একজন মুক্তিযোদ্ধার লাশ কবরস্থানে যায় এটা অনেকটা কষ্টের। তবে এঘটনায় পৌর কর্তৃপক্ষ বা শেরপুর পৌরসভার মেয়রের কোন ত্রুটি নেই। অন্যদিকে সাংবাদিকরাও অসত্য কিছু লেখেননি। মেয়র লিটনকে আমরা বারবার অনুরোধ করেছি বলেই, তিনি মুক্তিযোদ্ধা তালাপতুফ হোসেন মঞ্জুর লাশ বহনে পৌরসভার গাড়ীটি পাঠান। এখানে আসলে একটা ভুল বুজাবুজি হয়েছে। আর কিছু নয়। এব্যাপারে জেলা প্রশাসক মো. মোমিনুর রশীদের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঢাকা পোস্টকে জানান, বিষয়টি নিয়ে আমরাও লজ্জিত। তবে ঘটনাটি অনাকাক্সিক্ষত। আমি ইতিমধ্যে পৌর মেয়র লিটনের সাথে কথা বলেছি, যেন আজকের পর থেকে কারও অনুরোধে লাশ বহনে পৌরসভার গাড়ি পাঠানো না হয়। এই সিদ্ধান্তে গরীব অসহায় পরিবারের লোকজন কিভাবে কবরস্থান পর্যন্ত লাশ বহন করবে ? সেই প্রশ্নের উত্তরে জেলা প্রশাসক মো. মোমিনুর রশীদ বলেন, এবিষয়ে আমরা জেলা ট্রাক মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দের সাথে কথা বলেছি। তারা রাজি হলে পরবর্তীতে মৃতের পরিবারের অনুরোধে ট্রাকে করে লাশ বহন করা হবে। সেজন্য আর্থিক বিষয়টি জেলা প্রশাসন বা পৌরসভা দেখবে।