যে কয়টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে, তার থেকে বেশি সংখ্যকের দাম কমেছে। তবুও সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) প্রধান মূল্যসূচক কিছুটা বেড়েছে। মূলত ব্যাংকের কল্যাণে সূচকের এ ঊর্ধ্বমুখীতার দেখা মিলেছে।
প্রধান মূল্যসূচক বাড়লেও দুই বাজারেই কমেছে লেনদেনের পরিমাণ। তবে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের দরপতনের মধ্যেই দাম বাড়ার সর্বোচ্চ সীমা স্পর্শ করেছে ছয় প্রতিষ্ঠানের শেয়ার।
এদিন, ডিএসইতে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে ডিএসইতে লেনদেন শুরু হতেই প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ৯ পয়েন্ট বেড়ে যায়। লেনদেনের ২৬ মিনিটের মাথায় বাড়ে ২১ পয়েন্ট। তবে এর পরেই বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের দরপতন হতে থাকে। ফলে বেলা ১১টা ৫৪ মিনিটে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ২০ পয়েন্ট কমে যায়। এ পরিস্থিতিতেই ঘুরে দাঁড়ায় ব্যাংকখাত। বাড়তে থাকে একের পর এক ব্যাংকের শেয়ার দাম, যা অব্যাহত থাকে লেনদেনের শেষ পর্যন্ত। ফলে দিনের লেনদেন শেষে ২৭টি ব্যাংকের শেয়ার দাম বাড়ার তালিকায় নাম লেখায়। বিপরীতে দাম কমে ৫টির।
ব্যাংকের শেয়ারের এ দাম বাড়ার ক্ষেত্রে নেতৃত্ব দেয় নতুন তালিকাভুক্ত ইউনিয়ন ব্যাংক। অবশ্য লেনদেনের শুরুর দিকে এ ব্যাংকটির শেয়ার দাম কমে যায়। লেনদেনের অর্ধেক সময় পার হওয়ার পর টানা বাড়তে থাকে দাম এবং লেনদেনের শেষদিকে দাম বাড়ার সর্বোচ্চ সীমা স্পর্শ করে। এরপরও একপর্যায়ে ব্যাংকটির শেয়ারের বিক্রেতা উধাও হয়ে যায়। ইউনিয়ন ব্যাংকের পাশাপাশি দাম বাড়ার সর্বোচ্চ সীমা স্পর্শ করে নাহি অ্যালুমেনিয়াম, ইউনিয়ন ইন্স্যুরেন্স, বিডি থাই ফুড, কাট্টালী টেক্সটাইল এবং প্রাইম ইন্স্যুরেন্স। দিনের সর্বোচ্চ দামে লেনদেন হলেও একপর্যায়ে এ পাঁচ কোম্পানির শেয়ারের বিক্রয় আদেশের ঘর শূন্য হয়ে পড়ে।
দাম বাড়ার ক্ষেত্রে এ ছয় প্রতিষ্ঠান দাপট দেখালেও ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ১৬৬টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ১৭২টির। ৪২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। এতে দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৬ পয়েন্ট বেড়ে ৭ হাজার ২৩ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক আগের দিনের তুলনায় দশমিক ২৫ পয়েন্ট বেড়ে এক হাজার ৫০৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। তবে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক দশমিক ৪২ পয়েন্ট কমে দুই হাজার ৫৯২ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
দিনভার ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে এক হাজার ২৬১ কোটি ২৭ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় এক হাজার ২৬৬ কোটি ৮৭ টাকা। সে হিসেবে লেনদেন কমেছে পাঁচ কোটি ৬০ লাখ টাকা।
এদিকে, ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে বেক্সিমকোর শেয়ার। কোম্পানিটির ৮৫ কোটি ৯১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা বাংলাদেশ বিল্ডিং সিস্টেমের ৪৫ কোটি ৫৫ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ৪১ কোটি ১২ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ইউনিয়ন ব্যাংক। এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- ফরচুন সুজ, ব্রিটিশ আমেরিকান টোবাকো, আরএকে সিরামিক, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন, ওরিয়ন ফার্মা, লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ এবং এশিয়া ইন্স্যুরেন্স। অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ১০ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৪০ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩০২টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১২৫টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৩৫টির এবং ৪২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।