“ভর্তুকি কমিয়ে নয়, সরকারের দুর্নীতি, ভ্রান্তনীতি ও অব্যবস্থাপনার অদক্ষতা কমিয়েই গ্যাস-বিদ্যুৎ-পানি ও দ্রব্যমূল্য সাশ্রয়ী রাখা যায়। অথচ মানুষ যখন কোভিডকালের জীবিকার ক্ষতি সামলাচ্ছেন, তখনই গ্যাস-বিদ্যুত-পানির দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করছে এ সকল কর্তৃপক্ষ। এদিকে নিত্যপণ্য মূল্য লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়ে যাওয়াকে আন্তর্জাতিক বাজারের ঘাড়ে চাপিয়ে খালাস বাণিজ্যমন্ত্রী। অথচ আমদানী কর কমিয়েই সয়াবিনের দাম কম রাখা যায়। বাণিজ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন, রমজানে এক কোটি মানুষকে কমদামে খাবার পৌঁছে দেবেন। এটা ভাল কথা. বাকী এগার মাস কি হবে?। গ্যাস-বিদ্যুত-পানির দাম বৃদ্ধির প্রস্তাবে এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিষ, বিশেষ করে খাদ্যপণ্য মূল্যের বৃদ্ধির প্রতিবাদে গণপ্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।” ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২ সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত গ্যাস-পানি-বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির প্রস্তাব ও চাল-ডাল-তেলসহ খাদ্যপণ্যের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে ধারাবাহিক কর্মসূচির অংশ হিসাবে ঢাকা মহানগর ওয়ার্কার্স পার্টির বিক্ষোভ সমাবেশে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে পার্টির সভাপতি জননেতা রাশেদ খান মেনন এমপি একথা বলেন। মেনন বলেন, মানুষ এখন টিসিবি-র ট্রাকের পিছনে ছুটে চলেছেন। এইসব ঘটনা স্বাধীনতার পরপর তেল, নুন, শিশু খাদ্য সংগ্রহে মানুষের দীর্ঘ লাইনের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। কিন্তু তখন দেশ দরিদ্র ছিল। এখন মধ্যম আয়ের দেশ। মাথাপিছু আয় ইতিমধ্যে বেড়ে দু’হাজার পাঁচশ ডলারে পৌঁছেছে। একজন সাবেক সচিব বলেছেন একে ‘মাথাপিছু আয়’ নয়, একে মাথা পিছে আয় বলা যায়, যা দেখা যায় না। এভাবে চলতে থাকলে এই মাথাপিছু আয়ের সোনার হরিণ এদেশের মানুষ কোন কালেই ধরতে পারবে না। মেনন আরো বলেন, বিশ^ব্যাংকের পরামর্শে জিয়া-এরশাদরা রেশনিং ব্যবস্থা তুলে দিয়েছিল। তার পুন:প্রবর্তনের কথা আমরা এ যাবত বলে এসেছি। এখনই ব্যবস্থা না নিলে সামনে যে ভয়ংকর পরিস্থিতি আসছে তাকে মোকাবিলা করা সম্ভব হবে না। মেনন বলেন, বসিয়ে রেখে রেন্টাল বিদ্যুৎ প্লান্টগুলোর জন্য হাজার হাজার কোটি টাকা দেয়া হচ্ছে। ওয়াসা এমডি-র বেতন গত দশ বছরে ৪০০ গুণ বেড়ে সাড়ে ছয় লাখ টাকা ছাড়িয়েছে। কোন প্রয়োজনে, কোন দক্ষতা যোগ্যতার ভিত্তিতে এসব করা হয়, তার জবাব জনগণ জানতে চাইলে অপরাধ হবে না। ঢাকা মহানগর ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা কমরেড আবুল হোসাইনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন নগর পার্টির সাধারণ সম্পাদক কমরেড কিশোর রায়, বিশিষ্ট কৃষকনেতা মোস্তফা আলমগীর রতন, সংগ্রামী যুবনেতা সাব্বাহ আলী খান কলিন্স, শ্রমিকনেত্রী মুর্শিদা আখতার নাহার, নারীনেত্রী শিউলী সিকদার, ছাত্রনেতা মোতালেব হোসেন জুয়েল প্রমুখ। সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে পার্টি কার্যালয় এসে শেষ হয়। নগর পার্টির নেতৃবৃন্দ পবিত্র রমজান মাসে গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানি ও নিত্যপণ্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানান। এই দাবিতে নগর পার্টি আগামী মার্চ মাসব্যাপী ঢাকা শহরের বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় পথসভা, জনসংযোগ ও প্রচারপত্র বিলি করার ঘোষণা দেন।