দিনাজপুরের হিলিতে ১৫০ হেক্টর জমিতে গম চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ থাকলেও চাষ হয়েছে মাত্র ৭৫ হেক্টর জমিতে। সরিষার চাষ বৃদ্ধি জন্যই গমের চাষ কমে গেছে, এমনটিই বলছেন উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর। এছাড়াও চলতি গম মৌসুমে ফলন অনেক ভাল হয়েছে বলেও জানান তারা। বুধবার (২ মার্চ) হাকিমপুর (হিলি) উপজেলার একটি পৌরসভা ও তিনটি ইউনিয়ন ঘুরে দেখা যায়, আর মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যে গম কাটা-মাড়াই শুরু করবেন কৃষকেরা। গত গম মৌসুমের চেয়ে চলতি মৌসুমে মাঠে গমের ফলন চোখে ধরার মতো। আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় গমের কোন ক্ষতি হয়নি এবং গাছে পর্যাপ্ত গমের শীষ দাঁড়িয়ে আছে। প্রায় মাঠে গমে পাক ধরছে, কৃষকরা প্রস্তুতি নিচ্ছেন কাটা-মাড়ায়ে। তেলের দাম বৃদ্ধি, সরিষার চাষে পানি সেচের প্রয়োজন হয় না। তাই কৃষকেরা সরিষার চাষে ঝুঁকে পড়েছেন। এদিকে গম চাষে প্রয়োজন হয় পানি সেচের, যার ফলে তেলের মুল্য বাড়ায় গম চাষের প্রতি অনিহা গমচাষিরা। তবে দেখা যায়, চলতি গম মৌসুমে গম চাষ কম হলেও ফলন হয়েছে বেশি। গত মৌসুমে কৃষককেরা বিঘাপ্রতি গম পেয়েছে ৯ থেকে ১০ মণ। এবার ১৩ থেকে ১৪ মণ ফলন পাবে বলে আশা গম চাষিদের। হিলির ধরন্দা গ্রামের গম চাষি জহুরুল ইসলাম বলেন, প্রতি বছর গম মৌসুমে আমি ১৫ থেকে ১৬ বিঘা জমিতে গম চাষ করে আসছি। হঠাৎ তেলের দাম বাড়ায় এবার আমি ১০ বিঘা জমিতে গম চাষ করেছি। তবে গমের ভাল ফলন হয়েছে, আশা করছি আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে গম কাটা-মাড়াই শুরু করবো। হিলি নওপাড়া গ্রামের গমচাষি আফজাল হোসেন বলেন, তেলের দাম বেশির কারণে গম চাষ কম করেছি। তবে সরিষার আবাদ বেশি করেছি। প্রতিবছর ৩ থেকে ৪ বিঘা জমিতে গম আবাদ করতাম, এবার ১ বিঘায় গম চাষ করেছি। হাকিমপুর উপজেলা কৃষি অফিসার ড. মমতাজ সুলতানা বলেন, উপজেলার তিনটি ইউনিয়ন একটি পৌরসভার মধ্য পৌরসভা ও ১ নং খট্রা-মাধবপাড়া ইউনিয়নে গমের চাষ বেশি হয়েছে। চলতি মৌসুমে গম চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ১৫০ হেক্টর, লক্ষ্যমাত্রায় অর্জিত হয়েছে ৭৫ হেক্টর জমি। সরিষার চাষ বৃদ্ধির কারণে গম চাষ কমে গেছে। আমরা ৩০০ জন কৃষকের মাঝে বিনামূল্যে জনপ্রতি ২০ কেজি গম বীজ, ১০ ডেপ ও ১০ কেজি এমওপি সার প্রণোদনা প্রদান করেছি। গমের ফলন অনেক ভাল হয়েছে। আশা করছি বিঘাপ্রতি ১৩ থেকে ১৪ মণ গম কৃষকেরা ঘরে তুলতে পারবে।