রবিবার, ১৬ জুন ২০২৪, ০৫:২৬ পূর্বাহ্ন

ফরিদপুরে বাণিজ্যিকভাবে কুসুম ফুল চাষ

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ১১ মার্চ, ২০২২

ফরিদপুরের চরাঞ্চলে বাণিজ্যিকভাবে কুসুম ফুলের চাষ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন আনিসুর রহমান ও লুলু আল মারজান নামের দুই ভাই। তাদের সাফল্যে এখন অনেকেই ঝুঁকছেন কুসুম ফুল চাষে। দেখতে দারুণ আর পুষ্টিগুণে ভরা কুসুম ফুলের তেল বেশ উপকারী। মানবদেহের জন্য ভিটামিন-ই সমৃদ্ধ ছাড়াও দেশি-বিদেশি পাখির খাবার হিসেবে কুসুম ফুলের বীজ বেশ জনপ্রিয়। সূর্যমুখী ফুল চাষের পর ফরিদপুরে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে কুসুম ফুলের চাষ। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ফরিদপুর সদর উপজেলার চরমাধবদিয়া ও ডিক্রিরচর ইউনিয়নে চরাঞ্চলের বালু মাটির জমি পড়ে থাকতো পতিত হিসেবে। এসব জমিতে কোনো কিছুই চাষাবাদ হতো না। চাষাবাদের আগ্রহও ছিল না করো। কিন্তু এসব অনাবাদি জমিতে পরীক্ষামূলকভাবে কুসুম ফুলের চাষ শুরু করেন আনিসুর রহমান ও তার ভাই লুলু আল মারজান।
২০২১ সালে প্রথম পরীক্ষামূলকভাবে কুসুম ফুল চাষ শুরু করেন তারা। এতে বেশ লাভবান হন। সেই থেকে শুরু। এবার তারা এক বিঘার অধিক জমিতে চাষ করেছেন এ ফুলের চাষ। নানান রঙের এ ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে বিভিন্ন স্থান থেকে ছুটে আসছেন অনেকেই। তেমন পরিচর্যা ছাড়াই বেড়ে ওঠা কুসুম ফুলের বীজ থেকে তেল বানিয়ে নিজে সেই তেল খাচ্ছেন এবং কয়েকজনের কাছে সেই তেল বিক্রিও করছেন। ফরিদপুর কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তরের সূত্র মতে এবছর ফরিদপুরে প্রায় ৭০ হেক্টর জমিতে কুসুম ফুলের আবাদ করা হয়েছে। যা থেকে প্রায় ১৪০ মেট্রিক টন বীজ উৎপাদন সম্ভব। ফুল চাষি আনিসুর রহমান বলেন, দীর্ঘদিন ধরে জমিগুলো পতিত হিসেবেই পড়ে ছিল।
গত বছর কুসুম ফুলের বীজ সংগ্রহ করে তা পরীক্ষামূলকভাবে চাষ করেছিলেন। ভালো লাভ পেয়ে এবছর আরো বেশি জমিতে তারা এ ফুলের চাষ করেছেন। তিনি আরও বলেন, বীজ লাগানো ছাড়া তেমন কোনো পরিচর্যাই করতে হয় না। ফলে প্রায় বিনা পুঁজিতেই কুসুম ফুলের চাষ করে লাভবান হওয়া যায়।
এ ব্যাপারে আরেক চাষি লুলু আল মারজান জাগো নিউজকে বলেন, গত বছর আমার ভাইয়ের দেখাদেখি এবছর ৩৫ শতাংশ জমিতে কুসুম ফুলের চাষ করেছি। এতে আমার ব্যয়ে হয়েছে মাত্র হাজার পাঁচেক টাকা। সব ঠিক থাকলে কুসুম ফুলের বীজ থেকে লক্ষাধিক টাকা আয়ের আশাবাদী।
তিনি আরও বলেন, কুসুম ফুলের তেল তেমন একটা জনপ্রিয় না হলেও এখন অনেকেই এই তেলের গুণাগুণ সর্ম্পকে জানতে পেরেছেন। আমাদের দুই ভাইয়ের দেখাদেখি এখন অনেকেই আগ্রহ প্রকাশ করছে বীজ নিতে। এ ফুলের বীজ থেকে তেলের পাশাপাশি কুসুম ফুলের বীজ দেশি-বিদেশি পাখিদের জনপ্রিয় একটি খাদ্য। ফলে যারা পাখির ব্যবসা করেন তারা বীজ কিনতে আগ্রহী।
লাল, হলুদ, গোলাপি, সোনালি, মেজেন্ডাসহ বাহারি রঙের কুসুম ফুলের সৌন্দর্য দেখতে অনেকেই পরিবার-পরিজন নিয়ে ভিড় করছেন। ছবি তোলার পাশাপাশি তারা সেই ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়েও দিচ্ছেন। ফলে অনেকের কাছে অপরিচিত এ ফুলটি এখন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
‘ঘুরিফিরি ফরিদপুর’ ফেসবুক গ্রুপের মডারেটর ইকবাল মাহমুদ ইমন জাগো নিউজকে বলেন, এরই মধ্যে নতুন এ ফুল চাষ দেখে অনেকেই আগ্রহ প্রকাশ করেছেন এ ফুল চাষের। এ বিষয়ে ফরিদপুরের কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. মো. হযরত আলী জাগো নিউজকে বলেন, চরাঞ্চলে অনাবাদি জমিতে ফসল ফলাতে ও কাজে লাগাতে কুসুম ফুলের আবাদের জন্য খুবই একটা ভালো দিক। আবাদকারীদের পাশাপাশি যারা কুসুম ফুল চাষে আগ্রহী তাদের সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com