শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:৩৭ অপরাহ্ন
শিরোনাম ::
বিজয় ছিনিয়ে নিতে ষড়যন্ত্র চলছে: নজরুল ইসলাম খান পতিত আ’লীগ সরকারের কবল থেকে ভিক্ষুকরাও রেহাই পায় নাই : ডা. শফিকুর রহমান জাতির মুক্তির জন্য ঐক্যবদ্ধ থাকার বিকল্প নেই : তারেক রহমান ব্যবসায়ী ওয়াদুদ হত্যা: সাবেক ডিসি মশিউর সাত দিনের রিমান্ডে ভারতে ‘অবৈধ’ শেখ হাসিনা, এখন কী পদক্ষেপ নেবে ভারত দেশবাসী তারেক রহমানের নেতৃত্বে নতুন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখছে ফোন নম্বর মুখস্থ থাকাই কাল হলো তোফাজ্জলের? আরও কিছু সংস্কার কমিশন করার পরিকল্পনা আছে : নাহিদ মুসল্লিদের প্রতিরোধের মুখে স্বৈরাচারী হাসিনার নিযুক্ত খতিব রুহুল আমিনের পলায়ন আইন নিজের হাতে তুলে নেয়া দেশের জন্য অশনিসংকেত: অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার

বেকারীর পণ্যে স্বাবলম্বীর স্বপ্ন কামরুলের

সাদুল্লাপুর (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি :
  • আপডেট সময় রবিবার, ১৩ মার্চ, ২০২২

টগবগে যুবক কামরুল ইসলাম। এ বয়সে হাল ধরতে হয়েছে সংসারের। তাই স্বল্প পূঁজিতে শুরু করেছে বেকারী ব্যবসা। এ প্রতিষ্ঠানের পণ্য বিক্রি করেই স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন তার। কিন্তু অর্থাভাবে হিমসিম খাচ্ছে সে। তবুও দৃঢ় মনোবলে খাদ্যপণ্য তৈরী ও বিক্রি অব্যাহত রেখেছে কামরুল। শনিবার দুপুরে সরেজমিনে গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামে দেখা যায় কামরুল ইসলামের বেকারী কাজের ব্যস্ততা। ময়দা-চিনি-মসলা আর তেল দিয়ে তৈরী করছিলেন সিংগাড়া, নারু, পিঠা, ক্রিমবল, নিমকী, চানাচুরসহ হরেক রকম মিষ্টিপণ্য। জানা যায়, গোপলাপুর গ্রামের বজলার রহমানের একমাত্র ছেলে কামরুল ইসলাম। শিক্ষাজীবনে নমব শ্রেণিতে অধ্যায়নরত অবস্থায় বাবা বজলার রহমান প্যারালাইসেসে আক্রান্ত হয়। বাবাকে সুস্থ করতে চিকিৎসার ব্যয় বহনে যেটুকু যায়গা জমি ছিল তা বিক্রি করে সর্বশান্ত হয়েছে। এরপর ভূমিহীন হয়ে আশ্রয় নেয় চাচার বসতভিটায়। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে লেখাপাড়ার ইতি টেনে সংসারের হাল ধরতে হয় তাকে। এ পরিবারের পিতা-মাতা-বোন ও স্ত্রী-সন্তানের মুখে দু’বেলা অন্ন যোগাতে কামরুল ইসলাম কাজে সন্ধানে ছুটে যান ঢাকা শহরে। সেখানে ‘রাজধানী’ নামের এক বেকারীতে শ্রমিক হিসেবে চাকুরি নেয়। এ বেকারীতে দিনরাত মাথার ঘাম পায়ে ফেলে দৈনিক বেতন পান ২০০ টাকা। এই উপার্জনের টাকা দিয়ে কোনমতে সংসার চালছিল তার। যেন নুন আন্তে পান্তা ফরায় পরিবারটির। ধারবাহীকতায় ওই বেকারীতে কাজ শিখে কামরুল ইসলাম নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার পরিকল্পনা নেয়। সেই স্বপ্নের বাস্তরূপ দিতে ৭ মাস আগে চাকুরি ছেড়ে ফিরে আসে বাড়িতে। বাবা-মা’র পরামর্শে ক্ষুদ্র পরিসরে বেকারী ব্যবসার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। প্রাথমিকভাবে ১৫ হাজার টাকার প্রয়োজন হয়। কিন্তু বিধিবাম! হাতে নেই কোন টাকা-পয়সা। তাই পুঁজি সংগ্রহের চেষ্টায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও বিত্ত্ববানদের দারস্থ হলেও কপালি জোটেনি কারও সাহায্য-সহযোগিতা। নিরুপায় হয়ে একটি এনজিও থেকে ১৩ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে ক্ষুদ্র পরিসরে শুরু করে সেই কাঙ্খিত ব্যবসা। বর্তমানে তার বেকারীতে খাবার ভিত্তিক নানা ধরনের মিষ্টি জাতীয় পণ্য তৈরী করা হচ্ছে। সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত বিরাহীনভাবে কামরুল তার নিজের হাতে তৈরী করছে মজাদার মিষ্টিপণ্য। আবার সকাল হলেই বাইসাইকেলে বহন করে প্যাডেল চালিয়ে বিভিন্ন হাট-বাজার ও গ্রামাঞ্চলের দোকানে পাইকারি বিক্রি করছে ওইসব পণ্যসামগ্রী। দীর্ঘ ৭ মাস ধরে এ ব্যবসা করে অনেকটাই লাভের মুখ দেখেছে তিনি। তবে আরও পূঁজি খাটাতে পারলে এ থেকে অনায়াসে স্বাবলম্বী হওয়া সম্ভব বলে ধারণা করছে কামরুল। সোহাগ কনফেকশনারীর মালিক শহিদুল ইসলাম জানান, কামরুল ইসলামের তৈরী করা খাদ্যপণ্য বেশ ?সুস্বাদু ও মুখরোচক। যা বাজারে প্রচুর চাহিদা রয়েছে। এই উদ্যাক্তা কামরুল ইসলাম জানান, দুঃখি বাবা-মা’র কষ্ট ঘুঁচাতে প্রাথমিকভাবে ক্ষুদ্র পরিসরে বেকারীর কাজ শুরু করেছেন। এ থেকে দৈনিক বিক্রি হয় ৪-৫ হাজার টাকা। এতে লাভ থাকে প্রায় ৪০০-৫০০ টাকা। এ দিয়ে চলছে ৬ সদস্যের সংসার। তিনি আরও বলেন, বেকারী ব্যবসা খুবই লাভজনক। কিন্ত লক্ষাধিক টাকার প্রয়োজন। এমন অংকের টাকা দিয়ে ব্যবসা করতে পারলে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার পাশাপাশি আরও বেশ কিছু মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা সম্ভব। কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান আর্থিক সহযোগিতা পেলে আমার পরিকল্পিত স্বপ্ন পূরণ হতে পারে।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com