সাহসিকতা ও বীরত্ব মুমিনের স্বভাবজাত ভূষণ। মুমিন আল্লাহ ছাড়া আর কাউকে ভয় করে না। সত্যবচনে মুমিন কখনো পিছপা হয় না। মুমিন সর্বদা ন্যায়ের পক্ষে থাকবে, ন্যায়ের কথা বলবে, এটাই ইসলামের শিক্ষা। মহানবী (সা.) তাঁর সাহাবিদের এই শিক্ষাই দিয়েছেন। উবাদাহ ইবনে সামিত (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘যেখানেই থাকি না কেন, সত্যের ওপর দৃঢ় থাকব কিংবা বলেছিলেন, সত্য কথা বলব এবং আল্লাহর কাজে কোনো নিন্দুকের নিন্দার ভয় করব না। ’ (বুখারি, হাদিস : ৭২০০)
এর বিপরীতে কৃপণতা, ভীরুতা, কাপুরুষতা ইসলাম পছন্দ করে না। এগুলো ঈমানকে ত্রুটিযুক্ত করে। মানুষকে সত্য থেকে দূরে সরিয়ে রাখে। ভীরু, কাপুরুষ ও কৃপণ মানসিকতা দ্বারা সমাজে শান্তি-শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়, জমিনে আল্লাহর একত্ববাদের দাওয়াত দেওয়াও সম্ভব নয়। এ কারণে মহানবী (সা.) সর্বদা এই ত্রুটিগুলো থেকে মহান আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাইতেন। মুসআব (রহ.) থেকে বর্ণিত, সাদ পাঁচটি জিনিস থেকে আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করার নির্দেশ দিতেন এবং তিনি এগুলো মহানবী (সা.) থেকে উল্লেখ করতেন। তিনি এগুলো থেকে আল্লাহর আশ্রয় চেয়ে এ দোয়া পড়তে নির্দেশ দিতেন; ‘হে আল্লাহ! আমি কৃপণতা থেকে আপনার আশ্রয় চাইছি। আমি কাপুরুষতা থেকে আপনার আশ্রয় প্রার্থনা করছি, আমি অবহেলিত বার্ধক্যে উপনীত হওয়া থেকে আপনার আশ্রয় প্রার্থনা করছি, আর আমি দুনিয়ার ফিতনা অর্থাৎ দাজ্জালের ফিতনা থেকেও আপনার আশ্রয় প্রার্থনা করছি এবং আমি কবরের আজাব থেকেও আপনার আশ্রয় প্রার্থনা করছি। ’ (বুখারি, হাদিস : ৬৩৬৫)
তা ছাড়া মহান আল্লাহ শক্তিশালী ও দৃঢ় মানসিকতার মুমিনদের বেশি ভালোবাসেন। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, মহানবী (সা.) বলেন, ‘‘শক্তিমান মুমিন ব্যক্তি দুর্বল মুমিন ব্যক্তির তুলনায় উত্তম এবং আল্লাহর কাছে অধিক প্রিয়। অবশ্য উভয়ের মধ্যে কল্যাণ আছে। তোমাদের জন্য উপকারী প্রতিটি উত্তম কাজের প্রতি আগ্রহী হও এবং অলস বা গাফিল হয়ো না। কোনো কাজ তোমাকে পরাভূত করলে তুমি বলো, আল্লাহ নির্ধারণ করেছেন এবং নিজ মর্জিমাফিক করে রেখেছেন। ‘যদি’ শব্দ সম্পর্কে সাবধান থাকো। কেননা ‘যদি’ শয়তানের কর্মের পথ উন্মুক্ত করে। ’’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৪১৬৮)
তাই আমাদের উচিত, অলসতা, দুর্বলতা ও ভীরুতার জাল ছিঁড়ে শক্তি-সামর্থ্য, সাহসিকতা ও বীরত্ব অর্জন করা। অলসতার শিকল ছিঁড়ে কর্মোদ্যমতা অর্জনা করা। মহান আল্লাহ সবাইকে তাওফিক দান করুন।