অসহায় দরিদ্র ছালেহা খাতুনের(৬০) নিজের বলতে কিছুই নেই। বাধ্য হয়ে সহায়-সম্বলহীন এ বৃদ্ধার ঠাঁই অন্যের গোয়াল ঘরে। অভাবের তাড়নায় একমাত্র ভাই আলাদা করে দিয়েছেন বৃদ্ধাকে। ভিক্ষা করতে পারলে পেটে খাবার জোটে, অন্যথায় উপোস থাকতে হয় তাঁকে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে ছালেহার স্বামী প্রায় ২০-২২ বছর আগে মারা যান। নেই কোনো সন্তানও। আপনজন বলতে আছেন একমাত্র ভাই। সেও দিনমজুর। অভাবের তাড়নায় অসহায় দিনমজুর ভাই বৃদ্ধাকে অন্যত্র চলে যেতে বলেন। ফলে গত ১৫দিন ধরে তিনি রায়পুর পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের পূবলাচ গ্রামে অন্যের গোয়াল ঘরে বসবাস করছেন। গোয়াল ঘরের মালিক চাঁন মিয়া জানান, স্বামী মারা যাওয়ার পর মানুষের বাড়িতে কাজ করলেও এখন বয়সের ভারে আর কুলিয়ে উঠতে পারছেন না। কোনো ছেলে মেয়ে না থাকার ফলে অন্যের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ছেন। কোনো মতে চলা-ফেরা করতে পারলেও পরিশ্রম করতে পারেন না। কান্নাজড়ি কণ্ঠে ছালেহা খাতুন বলেন, “ভিক্ষা করে দিনে যা আনি তাই খাই। ভিক্ষা করতে না পারলে না খেয়ে থাকি। যায়গা জমি না থাকায় নিজের কোনো ঘর নেই। স্বামী ও সন্তান না থাকায় ঘরের কথাও চিন্তা করিনি। এখন গোয়াল ঘরে থাকতে হবে এটা কল্পনাও করিনি।” তিনি আরো বলেন, “স্বামী মারা যাবার পর থেকেই কষ্টে দিনাতিপাত করছি। কেউ আমাকে বিধবা বা বয়স্ক ভাতা কার্ডের ব্যবস্থা করে দিলে দু’বেলা খেয়ে পরে বাঁচতে পারতাম।” এ বিষয়ে রায়পুর পৌরসভার মেয়র গিয়াস উদ্দিন রুবেল ভাট বলেন, বৃদ্ধার কষ্টের কথা শুনেছি, মানবিক দিক বিবেচনা করে যত দ্রুত সম্ভব পৌরসভা থেকে আর্থিক সহযোগিতা ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। রায়পুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনজন দাস বলেন, গণমাধ্যম কর্মীদের মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পারলাম। খোঁজ-খবর নিয়ে তাঁকে জরুরী ভিত্তিতে সরকারী সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।