শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে বর্বর কায়দায় আপন বড় ভাইয়ের ছেলে (ভাতিজা) নূর ইসলাম(৩৫) কে হাত পা বেধে মাটিতে পুতে হত্যা চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। নালিতাবাড়ী থানার পুলিশ তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। গত শনিবার (২৬ মার্চ) বিকেলে উপজেলার রামচন্দ্রকুড়া ইউনিয়নের দক্ষিণ তন্তর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নালিতাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বছির আহমেদ বাদল নুর ইসলামের চাচাসহ তিন জনকে আটকের বিষয়টি রাত ১২ টায় নিশ্চিত করেছে। আটককৃত তিনজন হলো, প্রধান অভিযুক্ত আলিম উদ্দিন, তার স্ত্রী মনিরা বেগম ও ছেলে মুক্তার হোসেন। বিষয়টি ফেইজবুকে ভাইরাল হলে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, নালিতাবাড়ী উপজেলার রামচন্দ্রকুড়া ইউনিয়নের দক্ষিণ তন্তর গ্রামের আবু তাহের মারা যাওয়ার পর সহোদর ছোট ভাই আলিমদ্দিন কর্তৃক জাল দলিলে লিখে নেওয়া কিছু জমি নিয়ে বিরোধ বাঁধে মৃত তাহেরের ছেলে নূর ইসলামের সঙ্গে। এ নিয়ে দীর্ঘদিন যাবত স্থানীয় পর্যায়ে একাধিকবার শালিশি বৈঠক হলেও সুরাহা মিলেনি। একপর্যায়ে শনিবার বিকেলে আলিমদ্দিন ও তার স্ত্রী-ছেলে মিলে নূর ইসলামের বাড়িতে যায় এবং তারই বাড়ির আঙিনায় মাটি খুঁড়ে গর্ত করে। পরে বেলা আড়াইটার দিকে নূর ইসলামের দুই হাত পেছনে রশি দিয়ে বেঁধে প্রায় কোমড় পর্যন্ত মাটিতে পুঁতে রাখে। এসময় নূর ইসলামের পরিবারের লোকজন চিৎকার করলেও স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী আলিমদ্দিনের ভয়ে কেউ এগিয়ে আসেনি। তাকে বাচাঁতে গিয়ে নুর ইসলামের মেয়ের জামাই মফিজুল প্রতিপক্ষের হামলায় আহত হয়েছে। পরে খবর পেয়ে বিকেল তিনটার দিকে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে গ্রাম পুলিশের সহায়তায় পুঁতে রাখা নূর ইসলাম ও তার জামতা মফিজুলকে উদ্ধার করে নালিতাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। ঘটনাটি জানাজানি হলে চারদিকে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। এ বিষয়ে নূর ইসলাম জানান, জমি নিয়ে আমার চাচার সাথে বিরোধ ছিলো। এজন্য আমার চাচা আমাকে মেরে ফেলার উদ্দেশ্যে আমার বাড়িতে গিয়ে আক্রমন করে, মাটিতে পুতে আমাকে হত্যার চেষ্টা করে। আমার ডাক চিৎকারে প্রতিবেশীরা এগিয়ে না আসায় থানা পুলিশ এসে আমাকে উদ্ধার করে। মেয়ের জামাই মফিজল বলেন, আমার শশুরকে পুতে রাখা দেখে আমি তাকে বাচাঁতে গেলে আমার ওপরও আমার চাচা শশুর ও তার লোকজন আক্রমন করে এবং আহত করে। আমি বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছি। উদ্ধার অভিযানে অংশ নেওয়া এএসআই আমিনুল ইসলাম জানান, আমরা সংবাদ পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে পুঁতে রাখা নূর ইসলামকে উদ্ধার করি। নালিতাবাড়ী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বছির আহমেদ বাদল বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, এ ঘটনায় নুর ইসলামের স্ত্রী সেলিনা বেগম বাদী হয়ে নালিতাবাড়ী থানায় সাতজনকে আসামি করে ২৬ মার্চ রাতে একটি মামলা দায়ের করেছেন। আমরা তদন্ত করছি। এখন পর্যন্ত তিনজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।