রবিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০২:২৬ অপরাহ্ন
শিরোনাম ::
আমার কথা বলে চাঁদা-সুবিধা আদায়ের চেষ্টা করলে পুলিশে দিন : আসিফ নজরুল তিস্তার পানি দ্রুত বাড়ছে আজ আদালতে আত্মসমর্পণ করবেন মাহমুদুর রহমান ঢাকার খাল দিয়ে ব্লু নেটওয়ার্ক তৈরির পরিকল্পনা করছে সরকার : পানিসম্পদ উপদেষ্টা শিক্ষাব্যবস্থায় হিন্দুত্ববাদ ও নাস্তিক্যবাদ বরদাস্ত করা হবে না : মামুনুল হক নৌকা থাকায় নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের নাম পরিবর্তন হতে পারে : উপদেষ্টা আদর্শিক ভিন্নতা থাকলেও সবাই একসঙ্গে জাতি গঠনে কাজ করবে: মঞ্জুরুল ইসলাম জাতিসংঘে ভাষণে যুক্তরাষ্ট্রের কড়া সমালোচনা মাহমুদ আব্বাসের মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে ভাষাসৈনিক অধ্যাপক আব্দুল গফুরের দাফন ছাত্র-জনতার অদম্য সংকল্প ও প্রত্যয় স্বৈরাচার থেকে আমাদের মুক্তি দিয়েছে

নাচোলে উচ্ছেদ আতংকে ৫০টি ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা

সোহেল রানা নাচোল :
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ৩১ মার্চ, ২০২২

চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলে নোটিশ ছাড়াই দোকান উচ্ছেদের হুমকী উপজেলা প্রশাসনের, আতংকে দিন কাটাচ্ছেন নাচোলের ৫০টি ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী পরিবার। পরিত্রাণ পেতে ২৭ মার্চ জেলা প্রশাসকের নিকট স্মারক লিপি প্রদান,ও আদালতে মামলা করেছেন ভূক্তভোগী ক্ষুদ্রব্যবসায়ী বৃন্দ। অভিযোগে জানা গেছে, নাচোল উপজেলার ১নং কসবা ইউপির কসবা বাজারে প্রায় অর্ধশত ক্ষুদ্রব্যবসায়ী সরকারের খাসজমিতে দোকানপাট নির্মান করে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছেন। সেখানে একটি গ্রাম্য হাট-বাজার তৈরী হয়েছে। এলাকার আশ-পাশের গ্রামের লোকেরা সেখানে প্রতিদিন দৈনিক বাজার করে তাদের সংসারের চাহিদা পুরণ করে থাকেন। কারণ সেখান থেকে নাচোল উপজেলা সদর, রহনপুর পৌর বাজার ও সোনাইচন্ডী বাজারের দুরত্ব প্রায় ১০ কিঃ মিটার হওয়ায় কসবা গ্রামের আশপাশের গ্রামের লোকজনের একমাত্র বাজারের স্থান হচ্ছে কসবা বাজার। কসবা গ্রামের হাল ৩৯১নং দাগটির পরিমান প্রায় ১.৪১ শতক জমি যা হাটখোলা নামে আরএস রেকর্ডে উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু কালের পরিবর্তনে সাপ্তাহিক হাটটির অস্তিত্ব বিলিন হয়ে যাওয়ায় সেখানে দৈনিক বাজার গড়ে ওঠে। এতে করে ওই এলাকার প্রায় ৫০টি ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, মুদি দোকান, সার ও কীটনাশকের দোকান, দর্জির দোকান,হাস-মুরগী ও ঔষধের দোকানসহ বিভিন্ন ধরনের দোকান করে দোকানিদের যা আয় হয় তা দিয়ে তাঁরা সংসার চালায়। কসবা গ্রামের আব্দুল হাকিমের ছেলে আনারুল ইসলাম বলেন, চা বিক্রয় করে দৈনিক যা আয় হয় তা দিয়ে সংসার চালানোর পাশাপাশি ছেলেকে ডাক্তারী ও মেয়েকে বিসিএস পড়ানোর চেষ্টা করছি। তিনি বলেন আমার এ দোকান যদি উচ্ছেদ করা হয় তাহলে আমার সব স্বপ্ন ভেঙ্গে যাবে। ছেলেকে আর ডাক্তারী ও মেয়েকে বিসিএস ক্যাডার বানানো সম্ভব হবেনা। কসবা বাজারের স্বামী পরিত্যাক্তা ক্ষুদ্র মুদিদোকান ব্যবসায়ী তানজিলা অভিযোগ করে বলেন, দশ বছর ধরে আমার দুই মেয়ে নিয়ে মুদির দোকান করে সংসার চালায়। নিজেস্ব জায়গা জমি না থাকায় এই দোকানের পাশেই ঘরকরে বসবাস করে আসছি। কিন্তু ইউএনও স্যারের হুকুমে গ্রাম পুলিশ দোকান ঘর ভাংতে বলে গেছেন।এমতবস্থায় ছোট বাচ্ছা কাচ্ছা নিয়ে কোথায় যাবো, কি খাবো তা ভেবে পাচ্ছিনা। তিনি কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে বলেন ইউএনও স্যার আমাদেরকে পূর্ণবাসন না করে যেন আমাদের উচ্ছেদ না করেন। কসবা বাজারের আরেক ক্ষুদ্রমুদি দোকান ব্যবসায়ী সেলিম রেজা, মাসুম বিল্লাহ, ইব্রাহিমসহ অর্ধশত দোকান ব্যবসায়ীরা উচ্ছেদের পূর্বে তাদেরকে পূর্ণবাসনের জোর দাবী জানান। উল্লেখ্য আগামী বাংলা ১৪২৯ সালের জন্য কসবায় সাপ্তাহিক হাটটি ইজারা প্রদানের জন্য উপজেলা প্রশাসন দরপত্র আহবান করলে একই গ্রামের দুরুল হোদা দরপত্রে অংশ গ্রহন করে হাটটি প্রায় ৩০ হাজার টাকায় ইজারা গ্রহন করেন, এবং ১৪২৮ সালের চৈত্রমাসের শেষ সপ্তাহ পর্যন্তÍ তিনি খাস কালেকশান করছেন বলে এ প্রতিবেদককে জানান। এদিকে হাটের জায়গায় দোকানঘর উচ্ছেদ করার জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার শরিফ আহম্মেদ কোন নোটিশ প্রদান না করে স্থানীয় ইউপি’র গ্রাম্য পুলিশ রফিকুল ইসলাম দোকানীদের দোকান ঘর গতকাল মঙ্গলবারের মধ্যে সরিয়ে নেওয়ার মৌখিক নির্দেশ প্রদান করেন। গ্রাম পুলিশের এ হুমকীর প্রেক্ষিতে কসবা গ্রামের আনেসুর রহমানের ছেলে আকবর আলীসহ আরো অনেকে তাদের দোকানের চালা ,টিনসহ আসবাবপত্র অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছেন। অপর দিকে ব্যাবসায়ীদের উচ্ছেদ আতংককে পুজি করে কসবা গ্রামের জনৈক আমিনুল ইসলাম জনি প্রশাসনের নাম করে দোকান ব্যবসায়ীদের পুনরায় দোকান নির্মান করে দিবে বলে ১৬ থেকে ২৬ হাজার টাকা করে দোকান ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে উৎকোচ গ্রহনের অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে, তবে জনি বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। এবিষয়ে নাচোল কসবা ইউপি’র চেয়ারম্যান জাকারিয়া আল মেহেরাব এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন তিনদিন আগে ইউএনওর রেফারেন্স দিয়ে উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার মাহমুদুল হাসান মুঠো ফোনে আমাকে বলেন, আপনি গ্রাম পুলিশ দিয়ে দ’ুদিনের মধ্যে দোকানপাট সরিয়ে নিতে দোকান ব্যবসায়ীদের নির্দেশদেন। সেই মোতাবেক আমি গ্রাম পুলিশকে বলেছি। এবিষয়ে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের এর সাথে দোকানপাট উচ্ছেদ এর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি এ বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে এ প্রতিবেদককে জানান। তবে এবিষয়ে নাচোল উপজেলা নির্বাহী অফিসার শরিফ আহম্মেদ এর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন কসবা হাটের মধ্যে যেসব দোকানপাট বা অবৈধ স্থাপনা আছে তা সরিয়ে নিতে তিনি বিধি মোতাবেক মাইকিং করা হয়েছে বলে এ প্রতিবেদককে জানান।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com