পূর্ব সুন্দরবনে এবার মধুর সংকট দেখা দিয়েছে। বনে কাংখিত মধু না পেয়ে গত দু’দিনে শতাধিক মৌয়ালী বাড়ী ফিরে এসেছেন। মহাজনের দাদনের টাকা পরিশোধের চিন্তায় মৌয়ালীরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। শরণখোলা উপজেলার দক্ষিণ সাউথখালী গ্রামের মৌয়াল ছগির মোল্লা বলেন, সুন্দরবনে এবার মৌমাছি নেই মধুর চাক তেমন দেখা যায়না গত ১০দিন বনের মধ্যে ঘুরে ১৫টি চাকে ১০ কেজি মধু পেয়েছি গ্রুপে ১১জন মানুষ। মহাজনের কাছ থেকে চড়াসুদে দাদন নিয়ে প্রায় পঞ্চাশ হাজার টাকা খরচ করে মধু সংগ্রহে গিয়ে মধু না পেয়ে ফেরৎ এসেছি এখন কিভাবে মহজনের টাকা পরিশোধ করবো সে চিন্তায় আছি এবং এবছর তারা ঈদ করতে পারবেননা বলে হতাশা প্রকাশ করেন মৌয়ালী ছগির মোল্লা। একই ধরনের কথা জানিয়ে বন থেকে ফিরে আসা বগী দশঘর গ্রামের মৌয়ালী নান্না ফরাজী বলেন, আমার গ্রুপে ১২ জন লোক। ১১ দিন বনে ঘুরে ত্রিশ কেজি মধু সংগ্রহ করতে পেরেছি। সুন্দরবনে কাংখিত মধু না পাওয়ার কথা জানালেন তেরাবাকা গ্রামের মৌয়ালী মোতালেব হাওলাদার, মাহাবুল তালুকদার, বগী গ্রামের মোফাজ্জেল খান ও নান্না মিয়াসহ আরো অনেকে। বনবিভাগ সূত্রে জানা যায়, এবছর মধু আহরণের জন্য সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জ থেকে ৪১ টি পাশ (অনুমতিপত্র) ইস্যু করা হয়। প্রায় পাঁচ শতাধিক মৌয়াল দুই সপ্তাহের পাশ নিয়ে গত ১ এপ্রিল সুন্দরবনে যাত্রা করে। বনে গিয়ে মৌয়ালরা তেমন মধুর চাক পাচ্ছেননা। ২/১টি চাক পেলেও তাতে মধু খুবই কম পেয়েছে। কাংখিত মধু না পেয়ে মৌয়ালরা বাড়ী ফিরতে শুরু করেছেন। গত দুইদিনে শরণখোলার শতাধিক মৌয়ালী তাদের পাশ শরণখোলা ষ্টেশন অফিসে সমর্পণ করে বাড়ী চলে গেছেন। পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের শরণখোলা ফরেষ্ট ষ্টেশন কর্মকর্তা মোঃ আসাদুজ্জামান বলেন, এবছর সুন্দরবনে মৌমাছি আগের মত বাসা বাধেনি তাই মধু পাওয়া যাচ্ছেনা তবে অনেকে পেয়েছে পরিমাণে কম। বুধবার সকাল পর্যন্ত ১০টি পাশ মৌয়ালীরা ষ্টেশন অফিসে ফেরৎ দিয়ে গেছে বলে ঐ ষ্টেশন কর্মকর্তা জানিয়েছেন।