লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় এবং বাল্যবিয়ে দিতে নিষেধ করায় ডাব বিক্রেতা সেজে স্কুলছাত্রীকে তুলে নেয়ার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। এরআগে কৌশলে জোরপূর্বক ওই ছাত্রীর আপত্তিকর ছবি তোলা হয়। এদিকে তুলে নেওয়ার চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে তোলা ছবিগুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে। এ অবস্থায় আত্মহত্যার চেষ্টা চালিয়েছে ওই ছাত্রী। মাও রয়েছেন চরম দুঃচিন্তায়।
ঘটনার বিচার চেয়ে সোমবার (১৫ জুন) সন্ধ্যায় স্কুলছাত্রীর মা রায়পুর থানায় ৪ জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেছেন। অভিযোগ আনা হয়, উপজেলার বামনী ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বামনী গ্রামের জাকির হোসেনের ছেলে রাছেল হোসেন, শারমিন আক্তার, জাহাঙ্গীর হোসেনের ছেলে ইমন হোসেন শুভ ও আরিফ হোসেন।
সূত্র জানায়, ওই ছাত্রী বামনী ইউনিয়নের শামছুন্নাহার উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে। সহপাঠি ইমন হোসেন তাকে বিভিন্ন সময় প্রেমের প্রস্তাব দেয়। এনিয়ে স্থানীয়ভাবে একাধিকবার বৈঠকে ছাত্রীকে হয়রানি না করার জন্য ইমনকে সতর্ক করা হয়। গত ঈদুল ফিতরের দিন ইমন কৌশলে ওই ছাত্রীকে ঘুরতে নিয়ে যায়৷ এসময় ইমনের সহযোগীরা সঙ্গে ছিল। একপর্যায়ে ছাত্রীর গলায় ও হাতে থাকা স্বর্ণালংকার ছিনিয়ে নেয় তারা। এসময় জোরপূর্বক তার কয়েকটি আপত্তিকর ছবি তোলা হয়। পরে একটি অলেখা স্ট্যাম্পে সাক্ষর নিয়ে ছাত্রীকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
এদিকে ইমনের বাবা জাহাঙ্গীর প্রায়ই মোবাইলফোনে ওই ছাত্রীর মাকে কল দিয়ে তার ছেলের সঙ্গে মেয়ের বিয়ে দিতে চাপ দেয়। কিন্তু বাল্যবিয়ে দিতে নিষেধ করায় গত বৃহস্পতিবার দুপুরে সহযোগি আরিফ ডাব বিক্রেতা সেজে ছাত্রীকে তুলে নেওয়ার চেষ্টা করে। ছাত্রীর চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে আরিফ পালিয়ে যায়। ব্যর্থ হওয়ায় জোরপূর্বকভাবে তোলা ওই ছাত্রীর আপত্তিকর ছবিগুলো রবিবার (১৪ জুন) অপর সহযোগি রাছেল তার ফেসবুক আইডিতে পোষ্ট করে। সেখানে খারাপ কিছু লেখাও পোষ্ট করে রাছেল। এ ঘটনা সহ্য করতে না পেরে ওই ছাত্রী আত্মহত্যার চেষ্টা করে। এমন পরিস্থিতিতে মেয়েকে নিয়ে খুব দুঃশ্চিন্তায় রয়েছেন প্রবাস ফেরত বিধবা মা।
স্কুলছাত্রীর মা জানান, স্বামী মারা যাওয়ার পরে মেয়েকে তার ( ছাত্রীর মা) বাবার বাড়িতে রেখে ওমান চলে যান। ছুটিতে তিনি দেশে এসেছেন। এখন মেয়েকে নিয়ে তিনি দুঃশ্চিন্তায় রয়েছেন। মেয়েকে রেখে বিদেশ গেলে অভিযুক্তরা তুলে নিয়ে যাওয়ার শঙ্কা করছেন তিনি। এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চান তিনি।
এ ব্যাপারে রায়পুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) কুদ্দুছ মিয়া বলেন, বিষয়টি নিয়ে ছাত্রীর মা থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এমআইপি/প্রিন্স