বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর জননেতা নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেছেন, ইকামাতে দ্বীনের কাজকে এগিয়ে নিতে ইসলামের জ্ঞানে নিজেদেরকে আরো সমৃদ্ধ করতে হবে। গত রোববার সন্ধ্যায় রাজধানীর একটি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত রমনা থানার ষান্মাসিক রুকন সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, ইকামাতে দ্বীনের কাজকে এগিয়ে নিতে সংগঠনের প্রত্যেক স্তরে জনশক্তির মান বৃদ্ধিতে পরিকল্পনার ভিত্তিতে অগ্রসর হতে হবে। কুরআন ও হাদিস অধ্যয়নের মাধ্যমে ইসলামের মৌলিক জ্ঞানে নিজেকে সমৃদ্ধ করে সেই আলোকে জীবন গড়ে তুলে দ্বীন প্রতিষ্ঠার কাজে মাঠে ময়দানে কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে। একইসাথে সকল সংকৃর্ণতা থেকে মুক্ত হয়ে আগামী দিনে দেশের কল্যাণে, মানবতার পাশে থেকে সুখি সমৃদ্ধ দেশ গঠনে ভূমিকা রাখতে হবে। তিনি বলেন, একটি সুখি-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে, জনগণের মতামতের প্রতিফলন ঘটানোর জন্য, জনগণের ভোট ও ভাতের অধিকার নিশ্চিত করার প্রয়োজনে সকল আন্দোলন ও সংগ্রামে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করতে হবে। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্র ঘোষিত সকল কর্মসূচি বাস্তবায়নে সংগঠনের রুকনদের (সদস্য) সক্রিয় অবদান রাখতে হবে।
জামায়াতের এই কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, দুনিয়ায় প্রতিষ্ঠিত হওয়া আমাদের মূল লক্ষ্য নয়। প্রকৃত অর্থে আমরা আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করতে চাই। দুনিয়ায় যতটুকু প্রয়োজন সেটুকুর প্রত্যাশা করে বরং আখেরাতকে অগ্রাধিকার দিয়ে নিজের সকল কাজে অগ্রসর হতে হবে। সকল পরিস্থিতিতেই মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি পাওয়ার জন্য প্রচেষ্টা চালাতে হবে। তিনি আরো বলেন, জামায়াতের একজন রুকন হিসেবে আল্লাহর ভয় যেন আমাদের ভিতরে সদা বিদ্যমান থাকে। তাকওয়া ও মুত্তাকির যেসব বৈশিষ্ট্য রয়েছে তা যেন আমরা অর্জন করতে পারি। সেই সাথে পরোকালীন মুক্তির পথ নিশ্চিত করতে পারাই আমাদের প্রকৃত সফলতা। খেয়াল রাখতে হবে, আমার পরিবার, আমার ব্যক্তিজীবন, আমার পেশাগত জীবন সবকিছু যেন পরোকালীন জবাবদিহিতার জন্য প্রস্তুত থাকে। তিনি বলেন, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের রুকনদের মহানগরীর প্রতিটি মহল্লা, প্রতিটি ফ্ল্যাটে ও প্রত্যেক পরিবারের কাছে জামায়াতের দাওয়াত পৌঁছিয়ে দিতে হবে। সংগঠনকে আরো মজবুত সুদৃঢ় করে তুলতে হবে। এখানে অসংখ্য শহীদ জামায়াত নেতৃবৃন্দের স্মৃতি জড়িয়ে আছে। আমাদের সময়-শ্রম ও প্রতিভাকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশে একটি ইসলামী বিপ্লব সৃষ্টি করে আমরা সেইসব শহীদ নেতৃবৃন্দের শাহাদাতের বদলা নিবো ইনশাআল্লাহ। নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, আজ দেশের জনগণ তার অধিকার থেকে বি ত। মত প্রকাশের স্বাধীনতা নেই, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, চলমান বন্যায় ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে সরকারের ব্যর্থতা, জাতীয় অর্থনৈতিক সংকট, রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও আইনশৃঙ্খলার চরম অবনতিসহ বিভিন্ন কারণে আজ দেশের মানুষ কঠিন সময় পার করছে। এমতাবস্থায় দেশের মানুষের মুক্তির লক্ষ্যে আমাদের কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে। জামায়াতে ইসলামীর প্রতি ক্ষমতাসীনদের চরম নিপীড়ন ও নির্যাতন সত্বেও জামায়াত যেকোন দুর্যোগ ও সংকটে সহযোগিতার মাধ্যমে দেশের মানুষের পাশে থেকেছে। আমরা বিশ্বাস করি সুযোগ পেলে অবশ্যই দেশের জনগণ জামায়াতে ইসলামীর প্রতি তাদের ভালোবাসা ও সমর্থন প্রকাশ করবে ইনশাআল্লাহ। এ সময় তিনি রাজধানীর শাহবাগ থানায় অন্যায়ভাবে ২০ জন জামায়াত নেতাকর্মীকে গ্রেফতারের ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান এবং অবিলম্বে সরকারের কাছে গ্রেফতারকৃত নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবি জানান।
ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের মজলিশে শূরা সদস্য ও রমনা থানা আমীর আব্দুস সাত্তার সুমনের সভাপতিত্বে সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি এডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন, থানা সেক্রেটারি আতিকুর রহমান, থানা কর্মপরিষদ সদস্য অ্যাডভোকেট মারুফুল ইসলাম, ফরহাদুর রহমানসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।