লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলায় কাজের বিনিময়ে খাদ্য (কাবিখা) প্রকল্পের ১৬০ মেট্রিকটন গম ফেরত দেওয়া হয়েছে। উপজেলার ২৫টি উন্নয়ন প্রকল্পের নামে কাবিখার ২য় পর্যায়ের এ বরাদ্দ হয়েছিল। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাবরীন চৌধুরী ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেনের মধ্যে দ্বন্দ্বের কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে জানা গেছে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সংঙ্গে কথা বলে বরাদ্দ ফেরত দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। এ অবস্থায় বাতিল হওয়া প্রকল্পের সভাপতি ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের মধ্যে ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে। এদিকে রায়পুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ফোরামের নেতারা বলছেন, প্রশাসনের কর্মকর্তাদের মধ্যে সম্বয়হীনতার জন্য প্রকল্পের বরাদ্দ ফেরত দেওয়ার মাধ্যমে রায়পুর বাসীকে উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত করা হল।
উপজেলা প্রশাসন সূত্র জানায় ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে কাবিখা প্রকল্পের অধিনে লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সাংসদের বরাদ্দের ১২টি প্রকল্পের বিপরীতে ৯৬ মেট্রিকটন, সংরক্ষিত আসনের সাংসদের একটি প্রকল্পের ৯ মেট্রিকটন ও উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের ১২টি প্রকল্পের বিপরীতে ৫৫ মেট্রিকটন গম বরাদ্দ হয়। রাস্তা-ঘাট ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সরকারী-বেসরকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নের জন্য গত ফেব্রুয়ারী ও মার্চে এসব বরাদ্দ হয়।
রায়পুর ইউপি চেয়ারম্যান ফোরামের সভাপতি ও বামনী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তাফাজ্জল হোসেন বলেন, বরাদ্দ ফেরত যাওয়া রায়পুরের ইতিহাসে এ প্রথম ঘটনা। এ অবস্থা চলতে থাকলে সরকারের স্বাভাবিক উন্নয়ন কার্যক্রম ব্যাহত হবে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ দেলোয়ার হোসেন বলেন, আমার চাকুরী জীবনে কখনো এরকম হতে দেখিনি। ২৮জুন রাতেও আমাদের বাসায় ডেকে কাবিখার ২য় পর্যায়ের প্রকল্পের ১৬০ মেট্রিকটন গম ছাড় দেওয়ার কথা বলেছিলেন। কিন্তু অজানা কারনে বরাদ্দগুলো ফেরত যায়।
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের (ভারপ্রাপ্ত) সভাপতি অধ্যক্ষ মামুনুর রশিদ বলেন, দুই কর্মকর্তার সম্বয়হীনতার কারণে বরাদ্দটি ফেরত গেছে। এতে রায়পুরবাসি উন্নয়ন বঞ্চিত হয়েছে। বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।
রায়পুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাবরীন চৌধুরী বলেন, বরাদ্দ ফেরত যাওয়ার ঘটনায় আমার কোনো অবহেলা কিংবা গাফিলতি ছিল না। এ বিষয়ে প্রকল্প কর্মকর্তার সাথে কথা বলার পরামর্শ দেন তিনি।
জানতে চাইলে লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসক অঞ্জন চন্দ্র পাল বলেন, বরাদ্দ ফেরত যাওয়ার বিষয়টি আমি অবগত নই। তবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার মধ্যে দ্বন্দ্বের কথা শুনেছি। তাদের মধ্যকার দ্বন্দ্ব নিরসনে আমি কথা বলবো।
এমআইপি/প্রিন্স