ময়মনসিংহের ত্রিশালে সোহাগ মিয়াকে হত্যাকারী কিশোর গ্যাংয়ের প্রধান বিশ্বাস, রাইহান ওপল এর বিচারের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছে এলাকাবাসী। (২৮ শে আগষ্ট) রবিবার দুপুরে বালিপাড়া ইউনিয়নের ধলা বাজারে সহস্রাধিক লোক এ মানববন্ধন করে। পরে এক বিক্ষোভ মিছিলে অংশগ্রহণ করে তারা। বিক্ষোভ মিছিলটি বাজারের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এসময় তারা এই দুর্র্দশ কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের দ্রুত গ্রেফতার ও ফাঁসির দাবি জানিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দেয়। মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, এই কিশোর গ্যাংয়ের অত্যাচারে আমরা এলাকাবাসী অতিষ্ঠ। তারা এমন কোনো অপরাধ নেই যা করে না। মাদক সেবন, টাকার বিনিময়ে অন্যের জমি দখল, নারী হয়রানি ও সাধারণ মানুষকে ভয়ভীতি দেখানো সহ এ ধরনের অনেক অপরাধের সাথে জড়িত তারা। এদের নিয়ে আমরা এলাকাবাসী আতঙ্কিত, ভীত-সন্ত্রস্ত। এমন নৃশংসভাবে যেন আর কোনো মায়ের সন্তানকে জীবন দিতে না হয় সেজন্য এদের দ্রুত গ্রেফতার করে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করার দাবী জানান তারা। নিহত সোহাগের স্ত্রী মুন আক্তার এসময় কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমার স্বামী হত্যার বিচার চাই। আমার বাচ্চাটার ভবিষ্যৎ কি এখন? আমার জীবন অন্ধকার। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি আমার স্বামী হত্যার বিচার করে দেন। নিহত সোহাগের বাবা শহিদুল্লা কাঁদতে কাঁদতে বলেন, আমার সংসার এখন কে চালায়? ছেলের উপার্জনের টাকাতেই আমার সংসার চলতো। আমার নাতির দুধ কে কিনে দিবে? আল্লাহ তুমি খুনিদের বিচার কর। এসময় স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা জানান, ধলা গ্রাম ত্রিশাল, গফরগাঁও ও নান্দাইল উপজেলার সীমান্তবর্তী। এখানে উঠতি বয়সের কিশোরদের কর্মকা-ে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী। প্রায় প্রতিদিনই তুচ্ছ বিষয়ে তারা মারামারি, গ-গোল, ঝগড়ায় জড়িয়ে পড়ছে। কেউ প্রতিবাদ করলে তাঁদের উপরও হামলা চালায় তারা। স্থানীয় প্রভাবশালী নেতারা তাদের আশ্রয় দেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। উল্লেখ্য, গত রবিবার (২১ আগস্ট) মধ্যরাতে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে ও ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয় সোহাগ নামের ওই যুবককে। মৃত্যুর আগে তাঁর ওপর হামলাকারীদের নাম বলে যায় সে। পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে ওই ভিডিও সংগ্রহ করেছে ত্রিশাল থানা পুলিশ। ভিডিওতে সোহাগ বলেন, বিশ্বাস, রায়হান ও পল তাঁর ওপর হামলা করেছে। তাদের মধ্যে বিশ্বাস বেশি মারধর করেছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ত্রিশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাইন উদ্দিন বলেন, পূর্বশত্রুতার জেরে এ ঘটনা ঘটেছে। জড়িতদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান চলছে।