মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪, ১২:৪১ অপরাহ্ন
শিরোনাম ::
বরিশালে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে সর্বজনীন পেনশন মেলার উদ্বোধন শরীয়তপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ ফটিকছড়িতে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে নিহত ও অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে ইউএনও মোজাম্মেল হক চৌধুরী কিশোরগঞ্জে শহীদ পরিবারের জায়গাজমি জবরদখল বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ নিরাপদ সড়ক চাই দাউদকান্দি শাখার পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা টমেটো চাষে কৃষক ফিরোজের বাজিমাত, ঝুঁকছেন অন্য কৃষকরাও দাউদকান্দিতে আন্তঃজেলা ডাকাত দলের ৫ সদস্য গ্রেফতার তৃতীয় দিনের মতো চলছে সুন্দরবনের আগুন নেভানোর কাজ বাড়ির ভিতর স্বল্প পরিসরে মাছচাষে তিনগুণ লাভে খুশি মাছচাষী শরীয়তপুর সদর উপজেলাকে একটি আধুনিক উন্নত মডেল রূপে গড়ে তুলবো-উজ্জ্বল আকন্দ

ভাইরাল ভিডিওতে নির্যাতনের দাবি প্রদীপ-লিয়াকতের

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় শনিবার, ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২০

সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলার আসামি কক্সবাজারের টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও পরিদর্শক লিয়াকত আলীর একটি ভিডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, ওসি প্রদীপ ও লিয়াকত ফোনে কাউকে বলছেন যে তাদের রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতন করা হয়েছে।
একটি পুলিশের গাড়িতে দুই মিনিট ২৭ সেকেন্ডের ভিডিওটি ধারণ করা হয়েছে। এতে দেখা যায়, হাতকড়া পরিহিত প্রদীপ ও লিয়াকত কথা বলছে এবং কেউ একজন ভিডিও ধারণ করছে। ভিডিওতে প্রদীপ-লিয়াকত ‘স্যার’ সম্বোধন করে নির্যাতনের কথা বলছে এবং তাদের বিষয়টি লক্ষ্য রাখতে বলছে। দৃশ্যটি কে ধারণ করেছিলেন বা পুলিশের গাড়িতে তাদের হাতে মোবাইল ফোন কিভাবে এলো তাও পরিষ্কার নয়।
সেখানে প্রদীপ বলছিলেন, স্যার, আপনার এটি দেখতে হবে। তারা বলছে যে বিভিন্ন জায়গায় মামলা করা হয়েছে এবং র‌্যাব এইসব মামলার তদন্তের দায়িত্ব নেবে। তারপর তারা আবার আমাদের হেফাজতে নেবে এবং আমাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে।
এরপরেই তিনি বেশ কয়েকজন র‌্যাব কর্মকর্তার নাম উল্লেখ করেন এবং বলেন যে আঘাতের চিহ্ন যেন না দেখা যায়, সেজন্য একজন চিকিৎসকের উপস্থিতিতে তাকে বৈদ্যুতিক শক দেয়া হয়েছে। একইভাবে, লিয়াকত বলেন, স্যার, তারা আমাদের মারাত্মকভাবে আহত করেছে। আপনি মনে হয় র‌্যাবের ডিজিকে আমাদের ছবি দিয়েছিলেন। তিনি আমাদের দেখতে এসেছিলেন এবং আশ্বাস দিয়েছিলেন যে কিছুই হবে না। কিন্তু, র‌্যাবের এডিজি আমাদের ওপর নির্যাতন চালিয়েছেন…সারা রাত আমাদের উলঙ্গ করে রেখে জিজ্ঞাস করেছেন কেন আমরা ছবি তুললাম। পরের দিন, আমাদের বৈদ্যুতিক শক দিয়েছে, মারধর করেছে এবং ইনজেকশন দিয়েছে।
এবিষয়ে র‌্যাবের গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লে. কর্নেল আশিক বিল্লাহ বলেন, আসামিদের এই ধরনের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। রিমান্ডে নেয়ার আগে ও পরে আসামিদের হাসপাতালে নিয়ে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়। সেখানে ডাক্তাররা তাদের ভালোভাবে পরীক্ষা করেছেন। কক্সবাজারে র‌্যাব-১৫ এর একজন কর্মকর্তা বলেন, প্রদীপ ও লিয়াকতের ওই ভিডিও ক্লিপ তাদের নজরে এসেছে। এখানে র‌্যাবের ৩ জন কর্মকর্তার নাম উল্লেখ করে অভিযোগ করা হয়েছে। কীভাবে ২ জন আসামি প্রিজন ভ্যানে বসে ভিডিওবার্তা ফেসবুকে দিতে পারেন বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ওসি প্রদীপ ও লিয়াকতকে কক্সবাজার কারাগারে ডিভিশন দেয়া হয়নি বলে জানিয়ে জেলসুপার মোকাম্মেল হোসেন বলেন, কারাবিধি মতে প্রথম শ্রেণির সরকারি কর্মকর্তা ডিভিশন পেয়ে থাকেন। তবে এই বিষয়ে ওসি প্রদীপ ও লিয়াকতের পক্ষে আদালতের কোনো নির্দেশনা এখনও কারাগারে আসেনি।
কক্সবাজারের পুলিশ সুপার এ বি এম মাসুদ হোসেন বলেন, প্রিজন ভ্যানে প্রদীপ কোন স্যারের সঙ্গে কথা বলেছেন, তা একমাত্র তিনিই জানেন। গত ৩১ জুলাই সিনহা হত্যাকা-ের পর গত এক মাসে প্রদীপের সঙ্গে তার কথা বলার কোনো কারণ ঘটেনি। কারণ, প্রদীপ এ সময় কারাগার ও র‌্যাবের হেফাজতে ছিলেন। প্রিজন ভ্যানে কারা এই ভিডিও ধারণ করলো, তা যাচাই করা হচ্ছে। এদিকে ৪ দফায় টানা ১৫ দিন রিমান্ড শেষে প্রদীপ কুমার দাশকে তদন্ত সংস্থা র‌্যাবের গাড়িতে কক্সবাজার আদালতে আনা হয় ১ সেপ্টেম্বর বিকেল ৪টার দিকে। বিকেল সাড়ে চারটার দিকে প্রিজন ভ্যানে তুলে প্রদীপকে আদালত থেকে পাঠানো হয় জেলা কারাগারে। এর দুই দিন আগে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি শেষে একই প্রিজন ভ্যানে লিয়াকতকে কারাগারে পাঠানো হয়। ধারণা করা হচ্ছে, প্রিজন ভ্যানে প্রদীপ ও লিয়াকতের ভিডিও ধারণ করা হয়। প্রসঙ্গত, গত ৩১ জুলাই রাতে টেকনাফের শামলাপুর তল্লাশিচৌকিতে পুলিশের গুলিতে মেজর (অব.) সিনহা নিহত হওয়ার ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে দুটি মামলা হয়। একটি মামলায় হয় টেকনাফ থানায়। এই মামলায় সরকারি কাজে বাধা ও গুলিতে নিহত হওয়ার অভিযোগ আনা হয়। সেই মামলার আসামি করা হয় সিফাতকে। আর মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে রামু থানায় দায়ের করা মাদক মামলায় আসামি করা হয় শিপ্রা দেবনাথকে।
৫ আগস্ট সিনহার বড় বোন বাদী হয়ে একই আদালতে টেকনাফ থানার বরখাস্তকৃত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, বাহারছড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক লিয়াকত আলী, থানার এসআই নন্দলাল রক্ষিতসহ নয় পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন। পরের দিন বিকেলে ওসি প্রদীপ, পরিদর্শক লিয়াকত, এসআই নন্দলাল রক্ষিতসহ সাত পুলিশ সদস্য আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। একই আদালত র‌্যাবের পৃথক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ওসি প্রদীপ, পরিদর্শক লিয়াকত ও এসআই নন্দলাল রক্ষিতকে সাত দিনের রিমান্ড এবং অপর চার আসামি কনস্টেবল সাফানুর করিম, কামাল হোসেন, আবদুল্লাহ আল মামুন ও এসআই লিটনকে কারাফটকে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দেন। অপর দুই আসামি এসআই টুটুল ও মো. মোস্তফা আদালতে হাজির হননি। পুলিশের দাবি, এই নামে জেলা পুলিশে কেউ নেই।- পূর্বপশ্চিমবিডি




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com