শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:০৪ পূর্বাহ্ন

এফএও ফুড প্রাইস ইনডেক্স: খাবারের দাম সর্বোচ্চ

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় শনিবার, ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২০

চলতি বছরের শুরুর দিকে (জানুয়ারি বাদে) বিশ্বজুড়ে খাবারের দাম তুলনামূলক কম ছিল। তবে নভেল করোনাভাইরাসের বৈশ্বিক মহামারী যত বিস্তার লাভ করেছে, খাবারের দাম ততই বাড়তে শুরু করেছে। এ ধারাবাহিকতায় সর্বশেষ আগস্টে বিশ্বজুড়ে খাবারের দাম ফেব্রুয়ারির পর সর্বোচ্চ অবস্থানে উঠেছে। এ সময় খাদ্যপণ্যের বৈশ্বিক গড় মূল্যসূচক আগের মাসের তুলনায় ২ শতাংশ বেড়েছে। এ সময় বিশ্বজুড়ে ভোজ্যতেল, শস্য ও চিনির দাম আগের তুলনায় অনেকটা বেড়েছে। তবে তুলনামূলক স্থিতিশীল ছিল দুগ্ধ ও আমিষ পণ্যের দাম। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) মাসভিত্তিক ফুড প্রাইস ইনডেক্সে (এফএফপিআই) এ তথ্য জানানো হয়েছে। খবর রয়টার্স ও বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড। চলতি বছরের আগস্টে এফএও ফুড প্রাইস ইনডেক্স দাঁড়িয়েছে ৯৬ দশমিক ১ পয়েন্টে, যা আগের মাসের তুলনায় ১ দশমিক ৯ শতাংশীয় পয়েন্ট বা ২ শতাংশ বেশি। শুধু আগের মাসের তুলনায় নয়, বরং গত বছরের একই সময়ের তুলনায় চলতি বছরের আগস্টে খাদ্যপণ্যের বৈশ্বিক গড় মূল্যসূচক ২ দশমিক ২ শতাংশ বেড়েছে। গত ফেব্রুয়ারির পর এটাই খাদ্যপণ্যের সর্বোচ্চ বৈশ্বিক গড় মূল্যসূচক। মূলত খাদ্যপণ্যের বাড়তি দামের মধ্য দিয়ে ২০২০ সাল শুরু হয়েছিল। জানুয়ারিতে বৈশ্বিক খাদ্যপণ্যের গড় মূল্যসূচক ছিল ১০২ দশমিক ৫ পয়েন্ট। পরের মাসে তা কমে দাঁড়ায় ৯৯ দশমিক ৪ পয়েন্টে। মার্চ ও এপ্রিলে বৈশ্বিক খাদ্যপণ্যের গড় মূল্যসূচক ছিল যথাক্রমে ৯৫ দশমিক ১ পয়েন্ট ও ৯২ দশমিক ৪ পয়েন্টে। মে মাসে খাদ্যপণ্যের বৈশ্বিক গড় মূল্যসূচক আরো কমে ৯১ পয়েন্টে নেমে আসে, যা বিগত ১৭ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। তবে টানা পতন কাটিয়ে জুনে ঘুরে দাঁড়ায় খাদ্যপণ্যের বৈশ্বিক গড় মূল্যসূচক। ওই মাসে খাদ্যপণ্যের বৈশ্বিক গড় মূল্যসূচক ছিল ৯৩ দশমিক ১ পয়েন্ট। জুলাইয়ে এ সূচক আগের মাসের তুলনায় ১ দশমিক ১ শতাংশীয় পয়েন্ট বা ১ দশমিক ২ শতাংশ বেড়ে দাঁড়ায় ৯৪ দশমিক ২ পয়েন্টে। আর আগস্টে তা ছয় মাসের সর্বোচ্চে উঠেছে।

চলতি বছরের আগস্টে ভোজ্যতেলের গড় মূল্যসূচক আগের মাসের তুলনায় ৫ দশমিক ৫ পয়েন্ট বা ৫ দমমিক ৯ শতাংশ বেড়ে ৯৮ দশমিক ৭ পয়েন্টে উন্নীত হয়েছে। টানা তিন মাস ধরে আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্যতেলের দাম বাড়তির দিকে রয়েছে। এ ধারাবাহিকতায় আগস্টে ভোজ্যতেলের গড় মূল্যসূচক গত জানুয়ারির পর সর্বোচ্চে উঠেছে। করোনা মহামারীতে দেশে দেশে ভোজ্যতেলের উৎপাদন শ্লথ হয়ে এসেছে। তবে সে তুলনায় চাহিদা কমেনি। মূলত এ কারণে তিন মাস ধরে ভোজ্যতেলের বাজার চাঙ্গা রয়েছে। আগস্টে ভোজ্যতেলের বাজারে সয়াবিন তেল, সূর্যমুখী তেল, পাম অয়েল, সরিষা তেলÍসব পণ্যেরই দাম বাড়তির দিকে ছিল।
আগের মাসের তুলনায় ১ দশমিক ৮ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৯ শতাংশ বেড়ে আগস্টে খাদ্যশস্যের বৈশ্বিক গড় মূল্যসূচক দাঁড়িয়েছে ৯৮ দশমিক ৭ পয়েন্টে। ২০১৯ সালের একই সময়ের তুলনায় গত মাসে এ সূচকমান বেড়েছে ৭ শতাংশ। এফএও বলছে, গত আগস্টে আন্তর্জাতিক বাজারে যব, চাল, ভুট্টা, গমের দাম সবচেয়ে বেশি বেড়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় বাড়তির দিকে রয়েছে ভুট্টার দাম। থাইল্যান্ডজুড়ে চলমান খরা, ভারত থেকে সরবরাহ ব্যাহত হওয়ার বিপরীতে আফ্রিকার দেশগুলোয় ক্রমবর্ধমান চাহিদা চালের বাজার চাঙ্গা করেছে। একইভাবে গত আগস্টে চিনির গড় মূল্যসূচক আগের মাসের তুলনায় ৫ দশমিক ১ পয়েন্ট বা ৬ দশমিক ৭ শতাংশ বেড়ে ৮১ দশমিক ১ পয়েন্টে উন্নীত হয়েছে। ২০১৯ সালের একই সময়ের তুলনায় গত আগস্টে চিনির বৈশ্বিক গড় মূল্যসূচক বেড়েছে ৪ দশমিক ৯ শতাংশীয় পয়েন্ট বা ৬ দশমিক ৪ শতাংশ। থাইল্যান্ড ও ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত (ইইউ) দেশগুলোয় প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে উৎপাদন সীমিত হয়ে আসা ও চীন খাদ্যপণ্যটির আমদানি বাড়িয়ে দেয়ার জের ধরে আগস্টে চিনির বৈশ্বিক বাজার চাঙ্গা হয়েছে। তবে গত মাসে দুগ্ধ ও আমিষ পণ্যের মূল্যসূচকে বড় উত্থান দেখা যায়নি। তুলনামূলক অপরিবর্তিত ছিল। এ সময় দুগ্ধপণ্যের বৈশ্বিক গড় মূল্যসূচক দাঁড়িয়েছে ১০২ পয়েন্টে, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১ দশমিক ৭ শতাংশ বেশি। অন্যদিকে গত মাসে আমিষ পণ্যের বৈশ্বিক গড় মূল্যসূচক দাঁড়িয়েছে ৯৩ দশমিক ২ পয়েন্টে। আগের মাসের তুলনায় স্থিতিশীল থাকলেও ২০১৯ সালের একই সময়ের তুলনায় আগস্টে আমিষ পণ্যের বৈশ্বিক গড় মূল্যসূচক ৯ দশমিক ১ পয়েন্ট বা ৮ দশমিক ৯ শতাংশ কমেছে। চীনসহ শীর্ষ আমদানিকারক দেশগুলো আমদানি সীমিত করায় গত মাসে আমিষ পণ্যের দাম বাড়েনি।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com