বাগেরহাটের চিতলমারীতে লাশ টেনে জীবিকা নির্বাহ করা নুরু এখন জীবণ মরন সন্দিক্ষনে। অর্ধহারে অনাহারেও ওষুধ বিহিন কাটছে তার মানবেতর জীবণ। সমাজের অধিকাংশ মানুষ যে কাজটি অসম্ভব বলে মনে করেন নুরু নির্বিগ্নে সে কাজ বেছে নিয়ে ছিলেন। নুরু চিতলমারী উপজেলার সদর ইউনিয়নের আড়–য়াবর্নী গ্রামের মরহুম সুলতান সরদারের ছেলে। নুরু মিয়ার পেশা ছিলো লাশটানা। এ পেশায় তার পূর্ব পুরুষেরা কখনও আত্ম নিয়োগ না করলেও নুরু কেন এ পেশাটিকে বেছে নিয়েছেন এ নিয়ে অনেকের মাঝে কৌতুহল জাগতো। তবুও এ পেশায় বিশাধিক বছর পার করেছেন নুরু মিয়া। কোথাও কোন অনাকাঙ্খিত মৃত্যুর সংবাদ পেলেই সেখানে ছুটে যেতেন তিনি। তার ভ্যান গাড়ীটি নিয়ে প্রতিদিন উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্স, থানার গেট সহ বিভিন্ন ক্লিনিকের সামনে অবস্থান করতেন নুরু মিয়া। কোন বিশেষ মৃত্যুর সংবাদ পেলে তা নিজ হাতে তুলে ময়না তদন্তের জন্য জেলা সদরের মর্গে যেতে হত নুরুকে। ময়না তদন্ত শেষে লাশটি আপন জনদের কাছে পৌঁছে দিতেন। বিনিময়ে যে টাকা আয় করতেন তা দিয়ে অনায়াশে চলে যেত নুরুর পরিবারের ভোরন পোষন। নুরুকে থানার ওসি সহ (তার ব্যাতিক্রমি এ পেশার জন্য) অনেকেই ভালো বাসতেন। এলাকার অনেকে জানান যে নুরু লাশ টেনে মানুষকে উপকার করতেন; সে নিজেই এখন এক হিসেবে এক জ্যান্তলাশ। ভাগ্যের নির্মম পরিহাস কোন এক অজানা রোগে নুরুর একটি পা’পচন ধরে, শেষ মেশ পা’টি কেটে ফেলতে হয়েছে। অনেক অর্থব্যায় হওয়ায় এখন চলেনা নুরু মিয়ার ভ্যানগাড়ী, চলেনা সংসার, জ্বলেনা চালচুলো। নানারোগ বাসা বেঁধেছে তার শরীরে। অর্ধহারে অনাহারে দিন যাপন করছেন তার পরিবার। সমাজের ব্যতিক্রমী ও উপকারি এই মানুষটিকে বাঁচিয়ে রাখতে নুরু মিয়ার অসহায় পরিবার আর্থিক সহায়তা প্রদানে সমাজের সকল শ্রেনিপেশার মানুষের প্রতি জোর দাবি জানিয়েছেন।