আধুনিকতার ছোঁয়ায় বিভিন্ন বাসা-বাড়িতে রান্নার কজে বর্তমানে গ্যাসের ব্যবহার দিন দিন বারলেও এখনো হারিয়ে যায়নি গোবরের জ্বালানির ব্যবহার। জ্বালানির অভাব দূর করতে নীলফামারী জলঢাকা উপজেলার নারীরা গোবরে লাকড়ি তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ড এর স্থায়ী বাসিন্দা মমতা রানী গোবরের জ্বালানি লাকড়ি তৈরি করছেন। তার স্বামী সুদির চন্দ্র রায় পেশায় একজন কৃষক। বৈবাহিক সূত্রে মমতা রানীর এক ছেলে ও এক কন্যা সন্তান রয়েছে। তিনি পেশায় একজন গৃহিণী বাসায় তার দুইটি গরু রয়েছে। প্রতিদিন গরুর গোয়াল ঘর তাকেই পরিষ্কার করতে হয়। এছাড়া বর্তমানে শীত মৌসুম চলছে আর শীত মৌসুম শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে গোবর দিয়ে জ্বালানি তৈরির কাজ শুরু করতে হয়। এটি তৈরি করতে তেমন একটা খরচ পরেনা একটু বসে হাত দিয়ে শুকনো কিংবা চিকন ২-৩ ফুট লম্বা লাঠি বা পাট খড়ির প্রায়োজন হয়। এর পর খড়ির গায়ে গোবরের প্রলেপ দিয়ে মুষ্ঠ হাত লাগিয়ে গোবরের জ্বালানি তৈরির কাজ করতে হয়। এভাবে প্রতিদিন বাড়ীতে যতটুকু গোবর হয় তা দিয়েই গোবের শলা কিংবা গোবরের খরি তৈরি করি। এসব তৈরিকৃত কাঁচা গোবরের লাকড়ি গুলো শুকানোর জন্য বাড়ির উঠান কিংবা রাস্তার পাশে রোদে দাঁড় করিয়ে রাখি। ৫ থেকে ৭ দিন সময় লাগে রোদে শুকানোর জন্য। এরপর গোবরের লাকড়ি গুলো জ্বালানি হিসেবে উপযোগী হয়। এছাড়া উপজেলার বেশ কয়েকটি গ্রাম গুরে দেখা যায়, গ্রামের নারীরা অবসর সময়ে এই গোবরের লাকড়ি কিংবা গৈঠা বা ঘুটে তৈরিতে বেশ ব্যস্ত থাকতে দেখা যায়। উপকরণ তৈরির আগে পরিমাপ মতো পাটখড়ি বা লাঠি কেটে লাঠির গায়ে মুষ্ঠিতে এঁটে রোদে শুকান এমনি চিত্র ফুটে উঠেছে উপজেলার বেশ কয়েকটি গ্রামে। এভাবে নিত্যদিনের তৈরি শুকনো উপকরণ গুলো মজুদ রাখা হয়।পরে বর্ষা মৌসুমে এ শুকনো গোবরের খরি গুলো জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এতে একদিকে যেমন পরিবেশ বান্ধব প্রাকৃতিক জ্বালানি ব্যবহার হচ্ছে। তেমনি অন্যদিকে স্বামীর সংসারে থেকে নারীরা আর্থিকভাবে স্বামীকে সহযোগিতা করছেন। বর্তমানে সাশ্রয়ী এ জ্বালানি গোবরের লাকরি তৈরিতে গ্রামাঞ্চলের নারী কিংবা গৃহবধূদের কাছে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।