ব্যবসায় মন্দার কারণে স্পিনিং মিলগুলো আবার দাম কমিয়ে বিক্রি করছে। দেশের বৃহত্তম পাইকারি মোকাম নারায়ণগঞ্জের টানবাজারে সুতার দাম আবারো কমেছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, বেচাকেনায় মন্দা দেখা দেয়ায় বর্তমানে পণ্যটির চাহিদা কম। এ কারণেই দাম কমেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কিছুদিন আগে বাড়তি চাহিদার কারণে সুতার দাম পাউন্ডপ্রতি ৪-৬ টাকা পর্যন্ত বেড়ে গিয়েছিল। কিন্তু সে অনুপাতে কাপড়ের দাম বাড়েনি। দাম বাড়ার কারণে ক্রেতারা আগের মতো টানবাজারে আসছেন না। ফলে বেচাকেনা নেই বললেই চলে। বাজার ঘুরে দেখা যায়, ১০ কাউন্টের সুতা বেচাকেনা হচ্ছে ৪৫-৭৬ টাকায়, যা দুই সপ্তাহ আগে ছিল ৫০-৮০ টাকা। সে হিসাবে দাম কমেছে পাউন্ডপ্রতি ৪-৫ টাকা। ২০ কাউন্টের সুতা বেচাকেনা হচ্ছে ৮৫-১০০ টাকায়, যা ১৫ দিন আগেও ছিল ১০০-১০৬ টাকা। সে হিসাবে দাম কমেছে পাউন্ডপ্রতি ৫ টাকা। ২৪, ২৬, ২৮ ও ৩০ কাউন্টের রফতানি মানের সুতা প্রকারভেদে বেচাকেনা হচ্ছে ১৩২-১৩৮ টাকা দরে, যা দুই সপ্তাহ আগে ছিল ১৪০-১৪৫ টাকা। ৪০ কাউন্টের বাইন সুতা বিক্রি হচ্ছে ১৬৭-১৭০ টাকা দরে, যা দুই সপ্তাহ আগে ছিল ১৭০-১৭৬ টাকা। সে হিসাবে দাম কমেছে ৬ টাকা। ৪০ কাউন্টের টানা সুতা বেচাকেনা হচ্ছে ১৯০-২০০ টাকা দরে, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ১৯৫-২০৫ টাকা। সে হিসাবে দাম কমেছে ৫ টাকা। ৫০ কাউন্টের সুতা বেচাকেনা হচ্ছে ২১০-২২০ টাকা দরে, যা দুই সপ্তাহ আগে ছিল ২১৮-২২৮ টাকা। সে হিসাবে দাম কমেছে ৮ টাকা। ৬০ কাউন্টের সুতা বাজারে বেচাকেনা হচ্ছে পাউন্ডপ্রতি ১৯৫-২২৫ টাকা দরে, যা ছিল ২১০-২৪০ টাকা। সে হিসাবে দাম কমেছে ১৫ টাকা। ৮০ কাউন্টের সুতা বেচাকেনা হচ্ছে ৩৩৫-৩৪০ টাকা দরে, যা দুই সপ্তাহ আগে ছিল ৩৫০-৩৬৫ টাকা। বাংলাদেশ ইয়ান মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি লিটন সাহা জানান, হঠাৎ করে বাজারে সব কাউন্টের সুতার দাম পাউন্ডপ্রতি ৫-৬ টাকা বেড়ে গিয়েছিল। চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় স্পিনিং মিলগুলো সুতার দাম বাড়িয়ে দিয়েছিল। এতে ক্রেতারা সুতা কেনা কমিয়ে দেয়। ব্যবসায় মন্দার কারণে স্পিনিং মিলগুলো আবার দাম কমিয়ে বিক্রি করছে।
কামাল হোসেন নামের এক সুতা ব্যবসায়ী জানান, কয়েক বছর ধরে সুতার বাজারে অস্থিরতা লেগেই আছে। বৈশ্বিক অর্থনীতিক মন্দা, ডলার সংকট ও করোনা মহামারীর ধকলÍসব মিলিয়ে বাজারে উদ্বেগ কাটছে না। কিছুদিন আগে হঠাৎ করেই সুতার দাম পাউন্ডপ্রতি ৫-৬ টাকা বেড়ে গিয়েছিল। কিন্তু ক্রেতারা সে দামে সুতা না কেনায় স্পিনিং মিলগুলো দাম কমাতে বাধ্য হয়েছে। বছরজুড়ে বিভিন্ন সময় সুতার দাম বাড়লেও উৎপাদিত কাপড়ের দাম তেমন বাড়েনি। পুঁজি সংকটে পড়ে অনেক পাওয়ারলুম বন্ধ হয়ে গেছে। এসব কারণে বেচাকেনায় মন্দা চলছে।