অতিরিক্ত শীত বা অতিরিক্ত গরম কোনোটিই আমাদের শরীরের জন্য আরামদায়ক নয়। এই দুটি অবস্থাতে ঘুমানো খুবই অস্বস্তিকর একটা ব্যাপার। দেশে এখন গ্রীষ্মকাল চলছে। তবে আবহাওয়া মোটেও স্বাভাবিক নয়। অতিরিক্ত গরম। তীব্র তাপদাহে নাজেহাল অবস্থা অনেকেরই। যার প্রভাব দিনের কাজকর্মে তো পড়ছেই, এমনকি রাতে ভালোভাবে ঘুমানোটাও বেশ কষ্টকর ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।
অথচ রাতে ভালোমতো ঘুম হওয়া শরীরের জন্য অতীব প্রয়োজন। কেননা শারীরিক এবং মানসিক সুস্থ থাকতে ভালো ঘুমের কোনো বিকল্প নেই। এক গবেষণায় দেখা গেছে, রাতে ঠিকমতো ঘুম না হলে মস্তিষ্কের চাপ বেড়ে যায় এবং এর ফলে মানসিক এবং শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। অতিরিক্ত গরমে আরামে ঘুমানোর ১৫টি উপায় নিয়ে এ প্রতিবেদন।
* পানি গরম রাখার ব্যাগে (হট ওয়াটার ব্যাগে) গরম পানির পরিবর্তে ঠাণ্ডা পানি ভর্তি করে তা আপনার হাঁটু, গোড়ালি, কবজি, ঘাড়, কুঁচকি এবং কনুইয়ে ভালমতো লাগান। এতে একটু হলেও আরাম পাবেন। আপনি ঠাণ্ডা পানি ভর্তি হট ওয়াটার ব্যাগ বিছানায় সঙ্গে করে নিয়েও ঘুমাতে পারেন।
* ঘুমানোর সময় সুতি কাপড়ের পাতলা পোশাক পরুন। আপনার বিছানার চাদর, বেডিং, বালিশের কভার সুতি কাপরের তৈরি হলে ভালো হয়। সুতি কাপড় খুব সহজেই ঘাম শুষে নিতে পারে।
* শুনতে অদ্ভুত হলেও গরমে শরীর ঠাণ্ডা রাখতে কাজ করে ভেজা মোজা। যে মোজাটি পরবেন সেটি আগে থেকেই ফ্রিজে রেখে ঠাণ্ডা করে নিয়ে তারপর পরুন।
* গরমের দিনে প্রোটিনযুক্ত খাবার বেশি খাবেন না। কেননা প্রোটিন হজম হতে গেলে শরীরে প্রচুর তাপ উৎপন্ন হয় যার ফলে গরম লাগাটাই স্বাভাবিক।
* মশলাযুক্ত খাবার খেলেও তা ঘুমানোর কমপক্ষে ৩ ঘণ্টা আগে খান। এতে করে প্রচুর ঘাম বের হয়ে শরীর ঠাণ্ডা হয়ে যাবে। ফলে আপনি শান্তিতে ঘুমাতে পারবেন।
* শরীরচর্চার কাজটা সকালে করুন, বিকেলে বা সন্ধ্যায় নয়। কেননা বিকেলে বা সন্ধ্যায় শরীরচর্চার ফলে শরীর খুব উত্তপ্ত হয়। শরীরের তাপমাত্রা কমাতে প্রয়োজনে সন্ধ্যায় গোসল করুন।
* দিনের বেলা সূর্যের আলো সরাসরি যেন ঘরে ঢুকতে না পারে তার জন্য জানালার পর্দা টেনে দিন। বাড়ির যে দিকটায় সবচেয়ে বেশি রোদ পড়ে, সেদিকের জানালা বন্ধ রাখুন। রাতে ঘুমানোর সময় জানালা খুলে দিন।
* শোবার ঘরে থাকা সকল বৈদ্যুতিক যন্ত্র যা উত্তাপ তৈরি করে তা বন্ধ রাখুন।
* বড় একটা পাত্রে বরফ রেখে তা টেবিল ফ্যানের সামনে রেখে দিন। এতে ফ্যানের বাতাস ঠা-া হবে।
* গরমের সময় দিনে প্রচুর পানি পান করুন। তবে রাতে বেশি পানি খাবেন না। রাতে ঘুমানোর আগে আধা গ্লাস পানি আপনার সারারাতের পানির চাহিদা মেটাতে যথেষ্ট। রাতে বেশি পান করলে তা প্রস্রাবের চাপ সৃষ্টি করে বেশ কয়েকবার ঘুম নষ্ট করবে।
* একা একটি বিছানায় ঘুমানোর চেষ্টা করুন। এক বিছানায় দুইজন বা তার বেশি থাকলে বেশি তাপ উৎপন্ন হয় ফলে গরম লাগে। * বেশি গরম অনুভব করলে মেঝেতে ঘুমানোর চেষ্টা করুন।
* ঘুমানোর আগে আপনার হাত এবং পায়ের তালু ঠাণ্ডা পানিতে ভালো করে ধুয়ে নিন। আরাম পাবেন।
* রাতে যদি ঘুম ভেঙে যায় তাহলে মেনথলের কোনো ক্রিম বা লোশন আপনার কপালে ঘষে নিন। এতে করে আপনি ঠা-া অনুভব করবেন।
* ঘুম হচ্ছে না বলে উত্তেজিত হয়ে পড়লে ঘুম আরো দূরে চলে যাবে। তার চেয়ে এ ধরনের পরিস্থিতিতে শান্ত থাকার চেষ্টা করুন। তথ্যসূত্র : ইন্ডিপেন্ডেন্ট