বর্তমানে হৃদরোগে আক্রান্তের সংখ্যা বিশ্বব্যাপী বাড়ছে। ৩০ পার হতেই কিংবা অল্পবয়সীদের মধ্যেও দেখা দিচ্ছে হার্টের নানা সমস্যা। তবে হার্ট ফেইলিওর ও হার্ট অ্যাটাক সম্পর্কে অনেকেরই সঠিক ধারণা নেই। এ দুটোকে এক ভেবে নেন অনেকেই। আসলে হার্ট যখন নিজের থেকে রক্ত স ালন বা পাম্প করার ক্ষমতা হারায় সেই অবস্থাকেই আমরা সাধারণ ভাবে হার্ট ফেইলিওর বলতে পারি।
হার্ট ফেইলিওয়রের আরেকটি ধরন হলো, যখন হৃদপি-ের পেশি শক্ত হয়ে যায় ও শিথিল করতে অক্ষম হয়। অন্যদিকে হার্ট অ্যাটাক হয় যখন হার্টে রক্ত সরবরাহে বাঁধা থাকে। এ বিষয়ে ভারতের বিখ্যাত হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ জামশেদ দালাল জানিয়েছেন, বেশিরভাগ মানুষের মধ্যেই হৃদরোগ সম্পর্কে কোনো সঠিক ধারণা নেই। অনেকের মধ্যেই হার্ট অ্যাটাক, কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট কিংবা হার্ট ফেইলিওর নিয়ে বিভিন্ন ভ্রান্ত ধারণা আছে।
হার্ট ফেইলিওর কি শুধু বয়স্কদের হয়? এ বিষয়ে ডা. জামশেদ জানান, আগে ৫৫ পেরোনোর পরই হার্ট ফেলিওরের ঝুঁকি থাকত। তবে বর্তমানে দেখা যাচ্ছে, তরুণ প্রজন্মের মধ্যে হার্ট ফেলিওরের ঝুঁকি ক্রমেই বাড়ছে। অনেকেই হয়তো জানেন না, হার্ট ফেলিওরের ঝুঁকি আগে থেকেই কিছুটা টের পাওয়া যায়। প্রাথমিক উপসর্গের মধ্যে থাকে শ্বাসকষ্ট, গোড়ালি ও পেট ফুলে যাওয়া, ক্লান্তি ও খিদে কমে যাওয়া।
হার্ট ফেইলিওর মানেই কিন্তু জীবন শেষ হয়ে যাওয়া নয়, প্রাথমিক পর্যায়ে এই রোগ ধরা পড়লে ওষুধের মাধ্যমে চিকিৎসা চালিয়ে গেলে রোগী সুস্থ হতে পারেন। তবে শেষ পর্যায়ে ধরা পড়লে হার্ট ট্রান্সপ্লান্টেশন ছাড়া উপায় নেই বলে জানান চিকিৎসক জামশেদ।
হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ কী কী? হার্ট অ্যাটাকের আগে একেকজনের শরীরে ভিন্ন ভিন্ন উপসর্গ দেখা দেয়। তবে সবচেয়ে সাধারণ উপসর্গ হলো হাঁটতে গিয়ে বুকে চাপ। অনেকেই এই ব্যথাকে গ্যাসের সমস্যা ভেবে ভুল করেন।
দীর্ঘদিন এই সমস্যায় ভুগলে সতর্ক হতে হবে। মনে রাখতে হবে সিভিয়ার প্যানক্রিয়াটাইটিস ছাড়া এমন ব্যথা হয় না। কাজেই বুঝে নিতে হবে এগুলো হার্ট থেকেই হচ্ছে। অন্যান্য উপসর্গগুলো হলো- রাতে ঘুমের মধ্যে বুকে চাপ, হঠাৎ ঘুম ভেঙে গিয়ে আর ঘুম না আসা, ঘুম থেকে উঠে সকালে শরীর খারাপ লাগা, বুক ধড়ফড়, শ্বাস নিতে সমস্যা, ক্লান্ত লাগা ইত্যাদি।
হার্ট অ্যাটাক হলে দ্রুত কী করবেন? হার্ট অ্যটাকে আক্রান্ত হয়ে রোগী অজ্ঞান হয়ে পড়লে দ্রুত তাকে সিপিআর দিতে হবে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় একে বলে কার্ডিও পালমোনারি রিসাসকিটেশন। এক্ষেত্রে আক্রান্তের বুকে চাপ দিতে হবে। ৩০ বার চাপ দেওয়ার পর একবার করে আক্রান্তের মুখে মুখ দিয়ে হাওয়া দিতে হবে। মুখ দিয়ে যদি হাওয়া দিতে নাও পারেন, শুধুই বুকে চাপ দিতে থাকুন ঘনঘন। আর যত দ্রুত সম্ভব হাসপাতালে নেওয়া ব্যবস্থা করুন। সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া/ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস