মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৩৬ অপরাহ্ন
শিরোনাম ::
ভোলার বিভিন্ন চরাঞ্চল অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখরিত লালমোহনে ডা. আজাহার উদ্দিন ডিগ্রি কলেজের সভাপতিকে সংবর্ধনা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহিদ ও আহতদের স্মরণে স্মরণসভা সিংড়ায় পরিবেশ রক্ষার্থে ৫৩৬টি ডাস্টবিন বিতরণ কাজী আজিম উদ্দিন কলেজে শিক্ষার্থীদের সাথে ছাত্রদলের ৩১ দফা নিয়ে মতবিনিময় সভা পটুয়াখালীতে শিক্ষক দম্পতি হত্যাকান্ডের মূল রহস্য উদঘাটনের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন টুঙ্গিপাড়ায় ভিক্ষুক ও হতদরিদ্রদের আত্মকর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করলো সমাজসেবা অফিস জুডিসিয়াল সার্ভিস কমিশনের আওতায় এনে সহায়ক কর্মচারী অন্তর্ভুক্ত ও বিচার বিভাগের আলাদা সচিবালয় গঠনের নিমিত্তে দাবি পেশ দাউদকান্দিতে সড়কের মাটি ধসে পড়ল খালে, দুর্ঘটনার আশংকা সীতাকুন্ডে বিতর্কিত মাদ্রাসা পরিচালকের করা মিথ্যা মামলার বিরুদ্ধে মানববন্ধন

‘জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে ৫০ বছরের মধ্যে চাঁদপুর সাগরের অংশ হবে’

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় শনিবার, ২০ মে, ২০২৩

ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির ছায়া সংসদ
মোখা’র প্রভাবে সেন্টমার্টিন ডুবে যাবে বলে যে শংকা প্রচার হয়েছিল তার গতিপ্রবাহ সম্পর্কে বিশদ ব্যাখ্যা না দেয়ায় কিছুটা বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে। আবহাওয়ার সতর্ক সংকেত দুর্বোধ্য ভাষায় দেওয়া হয় বিধায় তা সাধারণ মানুষ বুঝতে পারে না। এই সতর্ক সংকেত মূলত নদীবন্দর কেন্দ্রিক। আবহাওয়ার কয়েকটি আগাম সংকেত প্রায় একই ধরণের যা জনমনে সংশয় তৈরি করে। নদী ভাঙ্গন রোধে যেসব প্রকল্প গ্রহণ করা হয় সেগুলো বাস্তবায়নে সচ্ছতা ও জবাবদিহিতার অভাবে দুর্নীতি হচ্ছে। ভাঙ্গন রোধে জিও ব্যাগ ব্যবহারের পরিবর্তে কংক্রিট ও পাথর ব্যবহার করা হলে তা দীর্ঘস্থায়ী ও টেকসই হবে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে ৫০ বছরের মধ্যে চাঁদপুর সাগরের অংশ হবে। এছাড়াও বরিশাল, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, খুলনা, ভোলাসহ উপকূলীয় জেলাগুলো সমুদ্রের লোনা পানিতে নিমজ্জিত হবে। যা কৃষি ও মৎস চাষসহ জীবিকা নিরাপত্তায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। বাংলাদেশে জলবায়ু অভিযোজন পরিকল্পনা বাস্তবায়নে বছরে ১০০ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন হবে।
ইতোমধ্যে ৭০ বিলিয়ন ডলার সহযোগিতার আন্তর্জাতিক প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে। তবে এই অর্থ ব্যবহারে আমাদের দক্ষতার ঘাটতি রয়েছে। গতকাল শনিবার (২০ মে) বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশনে (এফডিসি)-এ দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস করে ক্ষয়ক্ষতি কমানো শীর্ষক এক ছায়া সংসদে পানি সম্পদ ও জলবায়ু পরিবর্তন বিশেষজ্ঞ ড. আইনুন নিশাত এসব কথা বলেন। প্রতিযোগিতাটি আয়োজন করে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি। সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ। সভাপতির বক্তব্যে হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, গত এক দশকে বাংলাদেশ দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসে সফলতা অর্জন করলেও দুর্যোগে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ উদ্বেগজনক। এখনো দুর্যোগ ঝুঁকির ব্যাপক শঙ্কা নিয়ে উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষ নিরাপত্তাহীনতায় বসবাস করছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগজনিত কারণে বাস্তচ্যুত হয়ে অনেক মানুষ শহরে ভিড় করছে। বাস্তচ্যুত গৃহহীন এসব মানুষকে এখনও পুরোপুরি সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচিতে অর্ন্তভুক্ত করা সম্ভব হয়নি। বজ্রপাত নিরসনে তালগাছ রোপন কর্মসূচীতে যে অনিয়ম, দুর্নীতি ও সরকারি অর্থের অপচয় হয়েছে তার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। ২০১৭ সালে সুনামগঞ্জে পাহাড়ী ঢল ও অতি বৃষ্টিতে বাধ ভেঙ্গে ১৫৪টি হাওড়ের ফসল তলিয়ে যাওয়ার ঘটনায় ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত রাঘববোয়ালরাও ধরাছোঁয়ার বাহিরে রয়ে গেছে। প্রায় দেড় দশক আগে ঘটে যাওয়া ঘূর্ণিঝড় সিডর ও আইলায় ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন ও বাধ নির্মাণের দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত কাউকে শনাক্ত করে শাস্তির আওতায় আনা যায়নি। ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে টিআর, কাবিখা, খাবিকা প্রকল্পগুলোকে মাঠ পর্যায়ে অনিয়ম ও দুর্নীতিমুক্ত করা সম্ভব হয়নি। দুর্যোগে ঝুঁকি হ্রাসে যে পরিমাণে বৈদেশিক সাহায্য আসে তার সুবিধা দুর্যোগ কবলিত মানুষ পুরোপুরি পায়না। তিনি আরো বলেন, সর্বশেষ ঘূর্ণিঝড় মোখায় দেশে কোন প্রাণহানি না ঘটলেও সেন্ট মার্টিন, টেকনাফসহ কয়েকটি স্থানে ব্যাপক অর্থনৈতিক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। মোখার কারণে কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেতসহ, চট্টগ্রাম, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দর এবং কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, ফেনী, নোয়াখালীসহ ১২টি উপকূলীয় জেলায় ৮ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেয়া হয়েছিল। কিন্তু এই মহাবিপদ সংকেতের মধ্যে অনেক জেলায় বড় কোনো দমকা হাওয়া, এমনকি মহাবিপদ সংকেত প্রবণ এলাকার কোথাও কোথাও কোন বৃষ্টিপাতও পরিলক্ষিত হয়নি। তাই মোখার কারণে ঘোষিত মহাবিপদ সংকেত অতিরঞ্জিত পূর্বাভাস ছিল কি না তা নিয়ে জনমনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। দুর্যোগের ঝুঁকি হ্রাসে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ ১০ দফা সুপারিশ করেন। সুপারিশগুলি হচ্ছে
১) ২০১১-২০২৫ সালের মধ্যে জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা নিয়ে যে পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে তার মধ্যবর্তী পর্যালোচনা ও এর বাস্তবায়নের কর্মসূচী গ্রহণ করা ২) জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট দুর্যোগের কারণে ক্ষয়ক্ষতির পরিসংখ্যান আপডেট করা। যাতে ক্ষয়ক্ষতি বৈশ্বিক পরিমন্ডলে উপস্থাপন করে আন্তর্জাতিক তহবিলের চাপ তৈরি করা যায় ।
৩) দুর্যোগজনিত কারণে বাস্তুচ্যুত জনগোষ্ঠীর ডাটাবেজ তৈরি করে বিশেষ সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচী গ্রহণ করা ৪) দুর্যোগপ্রবণ এলাকায় বিপদাপন্ন জনগোষ্ঠির সম্পদ রক্ষার লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত মুজিব কেল্লা রক্ষণাবেক্ষণ ও স্থায়িত্ব নিশ্চিত করা ৫) দুর্যোগ ঝুঁকিপ্রবণ এলাকায় বিপদাপন্ন জনগোষ্ঠির জন্য সরকারি উদ্যোগে বিশেষ বীমা স্কীম চালু করা
৬) জলবায়ু ও দুর্যোগের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে পারে এমন ফসল উৎপাদনে গবেষণা বৃদ্ধি করা এবং এসব ফসল উৎপাদনে কৃষকদের প্রশিক্ষণ দেয়া
৭) আবহাওয়ার সতর্ক সংকেতকে আধুনিকায়ন করা ও বজ্রপাতে মৃত্যু ঝুঁকি কমাতে লাইটিং অ্যারেস্টার যন্ত্র অধিক পরিমাণে স্থাপন করা
৮) দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা আইনের আলোকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রশিক্ষণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান অবিলম্বে চালু করা ৯) দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় পেশাগত উৎকর্ষতার লক্ষ্যে বিসিএস দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ক্যাডার চালু করা ১০) নগর ও গ্রামীণ এলাকায় পরিবেশবান্ধব উন্নয়নের লক্ষ্যে পরিকল্পিত বনায়ন জোরদার করা। “দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসে যথাযথ পদক্ষেপের কারণে ক্ষয়ক্ষতি কমানো সম্ভব হচ্ছে” শীর্ষক ছায়া সংসদে চাঁদপুর সরকারি কলেজকে পরাজিত করে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় বিজয়ী হয়। প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন অধ্যাপক আবু মুহাম্মদ রইস, উন্নয়ন কর্মী তানজিনা শারমিন, ড. এস এম মোর্শেদ, সাংবাদিক পারভেজ রেজা, সাংবাদিক আঙ্গুর নাহার মন্টি প্রমুখ। প্রতিযোগিতা শেষে বিজয়ী দলকে ট্রফি ও সনদপত্র প্রদান করা হয়।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com