জনগণের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। দেশের মানুষ আর এই সরকারকে চায় না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
গতকাল শনিবার (২০ মে) বিকেলে ঢাকায় এক জনসমাবেশে তিনি এ মন্তব্য করেন। মতিঝিল পীর জঙ্গী মাজারে সামনে এ জনসমাবেশের আয়োজন করে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ। উচ্চ আদালতের নির্দেশনাকে অধীনস্থ আদালত ও সরকারের অবজ্ঞা, গায়েবি মামলায় নির্বিচারে গ্রেফতার, মিথ্যা মামলা ও পুলিশি হয়রানি, দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি, বিদ্যুতের লোডশেডিং, আওয়ামী সরকারের সর্বগ্রাসী দূর্নীতির প্রতিবাদে জনসমাবেশ কর্মসূচি ঘোষণা করে বিএনপি। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক কামরুজ্জামান রতন, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম বকুল, সহ প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আলীম, সহ-সম্পাদক আনিছুর রহমান তালুকদার খোকন, মহিলা দলের সভানেত্রী মির্জা আফরোজা আব্বাস, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানী, যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু যুবদলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম মিল্টন প্রমুখ।
ড. মোশাররফ হোসেন বলেন, আজকে সারা দেশের মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়েছে, তারা এই স্বৈরাচার সরকারের হাত থেকে রক্ষা পেতে চায়। যেখানেই আওয়ামী লীগ সেখানেই গণতন্ত্র হরণ হয়েছে। আজ সেজন্য দেশে গনতন্ত্র নেই। গায়ের জোরে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য এই সরকার যা তা করে যাচ্ছে। জনগণের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। দেশের মানুষ আর এই সরকারকে চায় না।
আওয়ামী লীগ নিজেদের পকেট ভারী করতে জিনিস পত্রের দাম বাড়িয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, সেজন্য তারা জিনিসের দাম কমাতে পারবে না। নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারবে না।
‘এখন এক দফা এক দাবি, এ সরকারের পদত্যাগ’ এমন হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন বিএনপির এই বর্ষীয়ান নেতা। তখন উপস্থিত নেতাকর্মীরা স্লোগান দিতে থাকেন।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, এই সরকারকে বিদায় করতে শুধু মিছিল নয় আর স্লোগান নয়, আমাদের রাজপথে নামতে হবে।
খন্দকার মোশাররফ বলেন, যারা প্রশাসনে আছেন, তাদেরকে ভাবতে তারা দেশের প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী। এ দেশের মানুষের টাকায় আপনাদের বেতন পান। তাদের ওপর আপনারা অনেক অন্যায় করেছেন। এখন আর এ অবৈধ সরকারে কথা বা নির্দেশ মানবে না। এখন সংশোধন হন। কোনো অবৈধ নির্দেশ মানবেন না। একদিন বিএনপি ও ক্ষমতায় আসবে। জনগণের সরকার আসবে, আপনাদের কোনো ক্ষতি হবে না। আপনারা নিশ্চিত থাকেন। জনগণের হয়ে কাজ করুন।
সভাপতির বক্তব্যে ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আব্দুস সালাম বলেন, পুলিশের বলে বলীয়ান হয়ে অনেক কথা বলা যায়, একা আসেন দেখি কতক্ষণ থাকতে পারেন ঢাকায়। পুলিশ ভাইদের বলতে চাই, আপনাদের জনগণের টাকায় আপনাদের বেতন হয়, ভুলে যাবেন না। যে পুলিশ মিথ্যা মামলা দিয়েছে আমাদের নামে, তাদের তালিকা করা হবে। আপনারা আওয়ামী লীগের দলীয় বাহিনী হবেন না। ৫০ বছর পর যদি কোনো বিচার হয়, তাহলে অবৈধ ও জোর করে ক্ষমতায় থাকারও একদিন বিচার হবে। ইনশাআল্লাহ, আওয়ামী লীগের অধীনে আর কোনো নির্বাচন হবে না, হতে দেয়া হবে না। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা যখন আমাদের ওপর হামলা করবে তখন কী আমরা বসে থাকবো? না, আমরা আর বসে থাকবো না। আমরা শুধু বাঁশি বাজাবো না । প্রতিহত করতে হবে। আমরা যদি এই সরকারে হাত থেকে দেশকে রক্ষা করতে না পারি। তাহলে আমাদের দেশের সার্বভৌমত্ব, স্বাধীনতা বলতে কিছু থাকবে না। এরা দেশকে বিলিন করে দেবে। দুপুরে পর সমাবেশ ও মিছিল শুরুর কথা থাকলেও বেলার সাথে সাথে থেকে পীর জঙ্গী মাজারের সামনে জোড়ো হতে থাকে নেতাকর্মীরা। রাজধানীর বিভিন্ন ইউনিটিনের ছোট ছোট মিছিল আসতে থাকে। স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠছে জনসমাবেশ কেন্দ্র। সমাবেশে কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সতর্ক অবস্থানে থাকতে দেখা গেছে।
উল্লেখ্য, চার দিনের কর্মসূচির দ্বিতীয় দিনের ১০ বিভাগের ও ১৮ জেলায় আজ এ জনসমাবেশ করছে বিএনপি।