পবিত্র ঈদ-উল-আযহাকে সামনে রেখে সাতক্ষীরায় আলোড়ন সৃষ্টি করেছে অস্ট্রেলিয়ান হলেস্টাইন ফ্রিজিয়ান জাতের দুটি গরু। এদের মধ্যে সম্রাটের ওজন প্রায় ৪০ মণ, আর শুভরাজের ওজন ৩৫ মণ। সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ঘুড্ডেরডাঙ্গী গ্রামের প্রভাষক ইয়াহইয়া তমিজী নিজ বাড়িতেই পরম যতেœ লালন পালন করে বড় করে তুলেছেন গরু দুটি। পাঁচ বছর বয়সের সম্রাট ও সাড়ে চার বছর বয়সের শুভরাজকে এ বছরই কোরবানি ঈদে ছেড়ে দিতে চান প্রভাষক ইয়াহইয়া তমিজী। গরু দুটি দেখতে প্রতিদিন ভিড় জমাচ্ছে এলাকাবাসিসহ দূর দূরান্তের মানুষ।
গরু দেখতে আসা তানজির কচি জানান, এতো বড় গরু আগে কখনো দেখিনি। গরু দেকতে আসা রাহাত রাজা জানান, জেলার পাটকেলঘাটায় সম্রাট নামে একটি বড় গরু আছে, যে এখন পর্যন্ত বড় ছিল। কিন্তু এটা দেখার পর বলা যায় যে, খুলনা বিভাগে মধ্যে এটাই সব থেকে বড় গরু। গরু দুটি এতোই বৃহদাকারের যে গোয়াল থেকে বের করা দায়। সারাদিন গোয়ালেই ফ্যানের বাতাসে দিন কাটে তাদের। গরুর মালিক প্রভাষক ইয়াহইয়া তমিজী জানান, গরু দু’টির মধ্যে সম্রাটের উচ্চতা ৫ ফুট ৬ ইঞ্চি ও দৈর্ঘ্য ৮ ফুট ২ ইঞ্চি। আর শুভরাজের উচ্চতা ৫ ফুট ৪ ইঞ্চি ও দৈর্ঘ্য ৭ ফুট ৮ ইঞ্চি। ভূষি, একাত্তরের প্রি মিক্স, সয়াবিনের খৈল আর ইয়াহইয়া তমিজীর নিজ বাড়ির টাটকা ঘাস খেয়েই বেড়ে উঠেছে সম্রাট ও শুভরাজ। একেকটি গরুর পিছনে তার দৈনিক গড় ব্যয় প্রায় এক হাজার টাকা। দিনে পাঁচ থেকে ছয় বার গোসল দিতে হয় তাদের। ইয়াহইয়া তমিজী নিজে ও তার স্ত্রী মিলেই গরু পরিচর্জার কাজ থেকে সবকিছু করেন। তিনি আরো জানান, জেলার শ্যামনগর থেকে বাছুর অবস্থায় সম্রাট ও শুভরাজকে এক লক্ষ সত্তর হাজার টাকায় কিনেছিলেন তিনি। সেই থেকে পরম যতেœ তাদের বড় করে তুলেছেন। এক বিঘা সাত কাঠা ভিটে বাড়িতে নিজেদের বসতঘর বাদে সর্বত্রই ঘাষ চাষ করেছেন। সেই ঘাসই তাদের খাওয়ানো হয়। তিনি বলেন, পবিত্র হজ্বব্রত পালনের জন্য গরু দুটি পুষেছিলাম। এবারের কোরবানি ঈদে বিক্রি করতে চাই। এজন্য ৪০ মণের সম্রাটের জন্য ১৬ লাখ ও ৩৫ মণের শুভরাজের জন্য ১৪ লাখ টাকা দাম প্রত্যাশা করছি। অনেকেই গরু দু’টি দেখতে আসছেন। দরদামে পুষালে ছেড়ে দেব। জেলা প্রাণীসম্পদ অফিসের তথ্যমতে, সাতক্ষীরায় এবছর ৯৯২৬ জন খামারি কোরবানির জন্য গরু প্রস্তুত করেছেন। জলায় মোট ১ লাখ ১৪ হাজার ৯৯৮ টি গরু বিক্রির জন্য প্রস্তুত থাকলেও চাহিদা রয়েছে ৮০ হাজার ৪৩৮টি। অর্থাৎ ৩৪ হাজার ৫৬০টি গ গরু অতিরিক্ত থেকে যাবে। এছাড়া অন্যবারের তুলনায় এবার লাভ কম হবার আশংকা করছেন তারা। কারণ গোখাদ্যের দাম বেড়েছে। যারা শহরাঞ্চলে গরু গরু পালন করেন তারা পুরোটাই বাজার থেকে কেনা খাবারের ওপর নির্ভরশীল। যার ফলে একটি গরু পালন করতে যে খরচ হয় তা বাদ দিয়ে সামান্য লভ্যাংশ থাকছে তাদের।