পবিত্র ঈদুল আজহার ৪ দিনের সরকারি ছুটিতে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ডেংগু আক্রান্ত একজনসহ ৫০ জন রোগীর মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে সর্বাধিক ২০ জন রোগীর মৃত্যু হয়েছে ঈদের আগের দিন। সব শেষ শনিবার হাসপাতালে ২৭ জন ডেংগু রোগীসহ চিকিৎসাধীন ১ হাজার ১শ’ ৬৭ জন রোগী। হাসপাতালের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঈদে সরকারি ছুটির প্রথম দিন ২৭ জুন ১৩ জন ডেংগু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। ওইদিন এই ১৩ জনসহ ৩০ জন ডেংগু রোগী চিকিৎসাধীন ছিলেন। ডেংগু আক্রান্ত ৩০ জনসহ ওই দিন হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে ১ হাজার ১শ’ ৬৭ জন চিকিৎসাধীন ছিলেন। যার মধ্যে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত ১৫ জন রোগীর মৃত্যু হয়েছে। ঈদের আগের দিন ২৮ জুন ৯ জন ডেংগু রোগী ভর্তি হয় হাসপাতালে। ওইদিন ৩০ জন ডেংগু রোগী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। ঈদের বন্ধে ২৮ জুন সর্বাধিক ১ হাজার ২শ’ ৫ জন রোগী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। ওইদিন বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত সর্বাধিক ২০ জন রোগীর মৃত্যু হয়েছে। ঈদের দিন ২৯ জুন ডেংগুর লক্ষন নিয়ে সর্বোচ্চ ২৬ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হন। ওই দিন সর্বোচ্চ ৩৭ জন ডেংগু রোগী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে ওইদিন চিকিৎসাধীন ছিলেন ১ হাজার ৬৫ জন রোগী। এর মধ্যে ডেংগু আক্রান্ত ১ জন সহ ১৩ জন রোগীর মৃত্যু হয়েছে। ঈদের দ্বিতীয় দিন ৩০ জুন নতুন ভর্তি হওয়া ১০ জনসহ মোট ২৭ জন ডেংগু রোগী চিকিৎসাধীন ছিলেন। ওইদিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলো মোট ১ হাজার ১শ’ ৬৭ জন রোগী। চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত ১২ জন রোগীর মৃত্যু হয়েছে ঈদের পরদিন। এদিকে ঈদের বন্ধের আগের ৩ দিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৫২ জন রোগীর মৃত্যু হয়েছে বলে হাসপাতালের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে। ডেংগু রোগী আগের চেয়ে বেড়েছে স্বীকার করে শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. এইচএম সাইফুল ইসলাম বলেন, সাসপেক্টেড (সন্দেহজনক) ডেংগু রোগী ভর্তি হচ্ছে। পরীক্ষা নিরীক্ষায় যাদের ডেংগুর লক্ষন পাওয়া যাচ্ছে তাদের বেডে রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। যাদের ডেংগুর লক্ষন নেই তাদের ছাড়পত্র দেয়া হচ্ছে। ডেংগু রোগীদের যথাযথ চিকিৎসা দেয়ার সামর্থ মেডিকেল কর্তৃপক্ষের রয়েছে। ঈদের ৪ দিন বন্ধে ডেংগু আক্রান্ত ১ জনসহ ৫০ জন রোগীর মৃত্যুর বিষয়ে পরিচালক বলেন, ক্রিটিক্যাল (গুরুতর) রোগীরা হাসপাতালে ভর্তি হয়ে থাকেন। ঈদের ছুটিতে হাসপাতালের সকল ওয়ার্ডে রোস্টার (পালাক্রমে) ডিউটি পালন করেছেন চিকিৎসক-নার্সরা। কোন ওয়ার্ডে চিকিৎসায় গাফেলতি ছিল না। চিকিৎসকরা সাধ্য মতো চেষ্টা করেছেন। রোগীর চিকিৎসার সঙ্গে মৃত্যুর সম্পর্ক নেই। রোগী বেশি থাকলে মৃত্যুর হার বেশি হয়। কম রোগী চিকিৎসাধীন থাকলে রোগী মৃত্যুর হারও কমে যায় বলে জানান শেবাচিমের পরিচালক ডা. এইচএম সাইফুল ইসলাম।