সুনামগঞ্জে টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে নদ-নদীর পানি বেড়ে জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবতি হয়েছে। জেলার কয়েকটি উপজেলার বেশ কিছু সড়ক তলিয়ে গেছে। পানি উঠেছে নিচু এলাকার অনেক বাসা বাড়িতে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন কয়েক লাখ বাসিন্দা। গতকাল সোমবার (৩ জুলাই) সুরমা নদীর পানি বেড়ে সুনামগঞ্জ পৌর শহরের ষোলঘর পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া, সুরমা নদীর ছাতক পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৯২ সেন্টিমিটার ওপরে প্রবাহিত হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সুনামগঞ্জে ১১৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
এদিকে, পাহাড়ি ঢলে নতুন করে প্লাবিত হয়েছে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার ইব্রাহিমপুর, নতুনপাড়া, সুলতানপুর ও বিশ্বম্ভরপুর, তাহিরপুরসহ দোয়ারাবাজার উপজেলার নিম্নাঞ্চলের বেশ কয়েকটি গ্রাম।
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার সুলতানাপুর গ্রামের আকরিমা খাতুন বলেন, গত কালও এখানে পানি ছিলো না, আজ সকাল থেকে আমাদের ঘরের চারদিকে পানি। রাস্তা ডুবে গেছে। যেভাবে পানি বাড়ছে মনে হচ্ছে আজকের মধ্যেই পানি ঘরে ঢুকবে। ছেলে-মেয়ে নিয়ে ভয়ে আছি। এদিকে, অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত আর পাহাড়ি ঢলের কারণে শঙ্কিত আছেন মাছ চাষি ও খামার মালিকরা।
মাসুম আহমেদ নামে স্থানীয় এক দোকানি বলেন, পানির ভয়ে রাতে ঘুম হয়নি, গত বন্যায় যেভাবে রাতে পানি এসেছিল তার মতো হয় কি না সেই ভয়ে আছি। দোকানের সব মালামাল উপরে তুলে রেখেছি, আমার ঘরে পানি ঢুকেছে।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুল হাওলাদার বলেন, ভারতে অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের কারণে সুরমা-কুশিয়ারাসহ বিভিন্ন নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভারতের চেরাপুঞ্জিতে আরও কয়েকদিন ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে জেলার সব উপজেলায় বন্যা হতে পারে।
সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী জানান, বন্যা মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে সুনামগঞ্জের জেলা ও উপজেলা প্রশাসন। বাসাবাড়িতে পানি ঢুকলে কাছাকাছি স্কুলে আশ্রয় নিতে বলা হয়েছে।