অযত্ন, অবহেলা আর কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় অকেজো হয়ে পড়েছে বরিশাল বিভাগের একমাত্র সুইমিং পুলটি। সংস্কার করা হলেও তা ব্যবহার উপযোগী হবে কিনা তা নিয়ে রয়েছে সংশয়। একই কথা বলছে কর্তৃপক্ষ। তাদের দাবী সংস্কার নয় প্রয়োজন নতুন করে নির্মাণ করা। সরেজমিনে দেখা গেছে, বরিশাল নগরীর চাঁদমারী শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত স্টেডিয়ামের পাশে জেলা তথা বিভাগের একমাত্র সুইমিং পুলটির বেহাল দশা। ১৯৯৭ সালে ৩ কোটি ৭৫ লাখ টাকা ব্যয়ে সুইমিং পুলটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ২০০০ সালে সুইমিং পুলটির উদ্বোধন করা হয়। উদ্বোধন হলেও ক্রুটিপূর্নভাবে নির্মিত হওয়ায় সুইমং পুলটি আর ব্যবহৃত হয়নি। স্টিলের পাতের বাক্স দিয়ে সুইমিংপুলের কূপে (বেসিন) ঢালাই দেওয়ার কথা থাকলেও নির্মাণের সময় তা দেওয়া হয় কাঠের বাক্স দিয়ে। এতে ঢালাই ভালোভাবে বিন্যস্থ না হওয়ায় পরীক্ষামূলকভাবে কূপে পানি তুলতে গেলে তো ফেটে যায়। সমস্যার পুরোপুরি সমাধান না করেই দুটি পানির পাম্প বসানো হয়। এটিও কাজে আসেনি। সেই থেকে অযত্ন অবহেলা আর কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা পড়ে রয়েছে। সেখানে এখন তূতুরে অবস্থা। অবকাঠমো ভেঙেচুরে শতবছরের প্রাচীন স্থাপনায় রূপ নিয়েছে। সুইমিংপুলটি অরক্ষিত অবস্থায় পড়ে আছে। চারপাশে আগাছা জন্মেছে, দেওয়ালের পলেস্তরা খসে পড়ে জরাজীর্ণ হয়ে গেছে। টাইলসও নষ্ট হয়ে গেছে। এছাড়া সন্ধ্যার পর পরিত্যক্ত সুইমিংপুলটি মাদকসেবীদের আখড়ায় পরিণত হয়েছে বলে জানান স্থানীয়রা। এদিকে বরিশাল বিভাগের একমাত্র সুইমিংপুলটি অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে থাকায় স্বাভাবিকভাবেই বরিশাল থেকে দক্ষ সাঁতারু তৈরি হচ্ছে না। তাছাড়া সাঁতার শিখতে পাড়ছে না এখানকার মানুষরা। এ ব্যাপারে জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাবেক সদস্য মাহবুব মোর্শেদ শামীম জানান, সুইমিং পুলটির বর্তমান অবস্থা খুবই খারাপ। এটির সংস্কার করা হলেও ব্যবহার উপযোগী হবে না। সুইমিং পুল না থাকায় দখিনের মানুষ সাঁতার শিখতে পাড়ছে না।
পাশাপাশি তৈরি হচ্ছে না দক্ষ সাঁতারু। নতুন করে একটি সুইমিং পুল স্থাপনের জন্য জোড় দাবি জানিয়েছেন তিনি। বরিশাল জেলা ক্রীড়া সংস্থার আহবায়ক কমিটির সদস্য সচিব মঞ্জুরুল আহসান ফেরদৌস বলেন, ২০২২ সালে সুইমিং পুলটির সংস্কারের জন্য দেড় কোটি টাকা বরাদ্দ এসেছিল। কিন্তু জেলা ক্রীড়া সংস্থা সেটি গ্রহন না করে ফেরত পাঠিয়েছে। কারণ সংস্কার করলেও সুইমিং পুলটি ব্যবহার উপযোগী হবে না। নতুন করে সুইমিং পুল নির্মাণের জন্য সাড়ে ৪ কোটি টাকার একটি প্রকল্প মন্ত্রনায়লে পাঠানো হয়েছে। বরিশাল থেকে পাঠানো প্রকল্প কবে নাগাদ বাস্তবায়নের মুখ দেখবে সেকথা কেহ সঠিক করে বলতে পারছে না।