উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে যমুনায় পানি বাড়তে থাকায় সিরাজগঞ্জের কাজীপুরে বাঁধের ৩০ মিটার এলাকা ধসে গেছে। বাঁধটি পুরোপুরি ধসে গেলে উপজেলার বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান হুমকির মুখে পড়বে। গত শুক্রবার (৭ জুলাই) সকালে উপজেলার যমুনা নদীর মেঘাই ১ নম্বর বাঁধ এলাকায় এ ধস দেখা দিয়েছে। এদিকে, সকালে সিরাজগঞ্জ হার্ড পয়েন্টে যমুনা নদীর পানির সমতল রেকর্ড করা হয়েছে ১১ দশমিক ৮২ মিটার। ২৪ ঘণ্টায় ৪ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে। অপরদিকে কাজীপুর মেঘাই ঘাট পয়েন্টে যমুনার পানির ২৪ ঘণ্টায় ৭ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে। যমুনায় পানি বাড়ার ফলে প্লাবিত হচ্ছে নিম্নাঞ্চল। তলিয়ে যেতে শুরু করেছে চরা লের ফসলি জমি।
পানি উন্নয়ন বোর্ড কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ১৯৯৭ সালে কাজীপুর উপজেলা রক্ষায় তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রয়াত মোহাম্মদ নাসিমের প্রচেষ্টায় মেঘাই খেয়াঘাট এলাকায় ৩০০ মিটার বাঁধ নির্মাণ করা হয়। ২০১২ ও ২০১৩ সালে বাঁধের মূল অংশের ১৫০ মিটার ধসে যায়। পরে বাঁধের মাটির অংশটুকু রক্ষায় সিসি ব্লক দিয়ে প্রটেকশন দেওয়া হয়। আজ সকালে বাঁধটির ৩০ মিটার নদীগর্ভে বিলীন হওয়ায় হুমকির মুখে পড়েছে কাজীপুর থানা, খাদ্য গুদাম, রেজিস্ট্রি অফিস, কাজীপুর সদর ইউনিয়ন পরিষদ ভবনসহ বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান।
কাজীপুর সদর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান বিপ্লব জানান, যমুনা নদীতে গত কয়েকদিন ধরে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। পানি বৃদ্ধির ফলে গতকাল শনিবার সকালে মেঘাই ১ নম্বর বাঁধ এলাকায় ঘূর্ণাবর্ত সৃষ্টি হয়। এতে মুহূর্তেই বাঁধের ৩০/৪০ মিটার নদীগর্ভে চলে গেছে।
কাজীপুর উপজেলার ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাজী অনিক ইসলাম জানান, বাঁধ ধসে যাওয়ার বিষয়টি জানার পরে তাৎক্ষণিকভাবে আমি পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কর্মকর্তাদের জানিয়েছি। পাউবোর লোকজন ঘটনাস্থলে পৌঁছে ভাঙন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে।
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী রনজিত কুমার সরকার জানান, উজানে ও দেশের অভ্যন্তরে ভারী বৃষ্টির কারণে কয়েকদিন ধরেই যমুনার পানি বাড়ছে। এতে চরা লের নি¤œভূমিগুলো প্লাবিত হচ্ছে। ইতোমধ্যে অভ্যন্তরীণ নদ-নদীর পানিও বাড়তে শুরু করেছে। আরও দুই থেকে তিনদিন পানি বাড়তে পারে বলে জানান তিনি। পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান জানান, বাঁধ ধসের খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে জিও ব্যাগ ফেলে ধস ঠেকানোর চেষ্টা চলছে।