কুড়িগ্রাম জেলা পরিষদে কর্মরত প্রধান নির্বাহী কর্র্মকতা মোঃ ফরিদুল ইসলাম মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইান্ডপেনডেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়,ক্যালিফোর্নিয়া এর আওতাধীন সমাজ বিজ্ঞান অনুষদ থেকে এক্সটারনাল রিসার্চার হিসাবে পাবলিক এ্যাডমিনিস্ট্রেশনে পিএচডি ডিগ্রি অর্জন করেছেন। তাঁর গবেষনার বিষয় ছিল-স্থানীয় সরকারে মহিলাদের অংশগ্রহণ এবং বাংলাদেশে টেকসই উন্নয়ন“। তাঁর গবেষনা কাজে সুপারভাইজার হিসাবে ছিলেন অধ্যাপক ড. পিটার শেফার্ড, জনপ্রশাসন বিভাগ, যুক্তরাষ্ট্রের ইান্ডপেনডেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়,ক্যালিফোর্নিয়া তাঁর গবেষনার বিষয়ে দীর্ঘ পর্যালোচনা শেষে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্টের সুপারিশ মতে বোর্ড অব ট্রাষ্টিস সর্বসম্মতভাবে তাঁকে পিএইচডি ডিগ্রি প্রদান করেন। মোঃ ফরিদুল ইসলাম বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের ১১ ব্যাচের একজন কর্মকর্তা। তিনি একজন একাডেমিক ক্যারিয়ারিসটিক্স। তিনি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদ থেকে কৃতিত্বের সাথে বিএসসি ইন এগ্রিকালচার ডিগ্রি অর্জন করেন। একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি প্ল্যান্ট প্যাথলজিতে ১ম শ্রেনীতে মাষ্টার ডিগ্রিও অর্জন করেন। তাঁর দুইটি গবেষনাপত্র আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশিত হয়েছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন থাকলেও পিতার ঐকান্তিক ইচ্ছায় ১১ বিসিএস এ প্রশাসন ক্যাডারে নির্বাচিত হওয়ায় শিক্ষক হওয়ার পরিবর্তে হয়ে যান রাষ্ট্রের প্রশাসন ক্যাডারের একজন কর্মকর্তা। প্রশাসন ক্যাডারে টাংগাইল জেলায় কর্মরত থাকাকালীন তিনি টাংগাইল “ল” কলেজ থেকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে এল এল বি ডিগ্রি অর্জন করেন। ২০০১ সালে তিনি অষ্ট্রেলিয়ার এইড এর অধীনে মাস্টার্স করার জন্যে মনোনিত হলেও কর্তৃপক্ষের অনুমতি না পাওয়ায় উক্ত ডিগ্রিটি তিনি শুরু করতে পারেনি। ২০০৫ সালে তিনি ডেফোডিল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাত্রিকালীণ কোর্সে এমবিএ (মার্কেটিং) ডিগ্রি অর্জন করেন। চাকুরীকালীন পরিবেশ ও বন মন্ত্রনালয়ের আওতায় জাইকার অর্থায়নে স্কলারশিপ নিয়ে ৪ বৎসরের পিএইচডি এর জন্যে মনোনিত হলেও পেশাগত ছুটি না পাওয়ায় তিনি আর অগ্রসর হতে পারেননি। ২০০৭ সালে লিয়েনে একটি গবেষনা প্রতিষ্ঠানে চাকুরীতে যোগ দেন এবং একইসাথে জাহাংগীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগে পরিবেশ বিষয়ে পিএইচডি কোর্স শুরু করলেও লিয়েন বাতিল হওয়ায় তিনি পিএইচডি কোর্স শেষ করতে পারেননি। ২০০৭ সালে তিনি জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয় ও নর্দান বিশ্ববিদ্যালয়ের এর অধীনে সরকারী মনোনয়নে পাবলিক পলিসি এর উপর ডিপ্লোমা ডিগ্রি অর্জন করেন। চাকুরী কালীণ সরকারী মনোনয়নে প্রশিক্ষন কোর্সে অংশ নিয়ে ২০১১ সালে বাংলাদেশে এবং সিংগাপুরের সিভিল সার্ভিস একাডেমিতে ম্যানেজমেন্ট এ্যাক্ট টপ-১ (ম্যাট-১) প্রশিক্ষন কোর্সে অংশ নিয়ে সফলতার সাথে উত্তীর্ন হওয়ায় তিনি পরবর্তীতে ম্যানেজমেন্ট এ্যাক্ট টপ-২ (ম্যাট-২) এর জন্যে নির্বাচিত হয়ে ২০১৩ সালে ওলভেন হ্যামলেট বিশ্ববিদ্যালয়,লন্ডন এ পড়াশুনা করার সুযোগ পান এবং কৃতিত্তের সাথে উক্ত কোর্সে উত্তীর্ন হন। তিনি বারংবার পিএইচডি করার সুযোগ পেয়েও পেশাগত ছুটি না পাওয়ায় তা’ করতে পারেননি। অবশেষে দীর্ঘ সাধনার পর তিনি সম্প্রতি জনপ্রশাসন বিভাগ, যুক্তরাষ্ট্রের ইান্ডপেনডেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়,ক্যালিফোর্নিয়া থেকে অত্যন্ত সফলতার সাথে তার কাংখিত পিএই্চডি ডিগ্রি অর্জন করতে সমর্থ হন। জীবনের এপর্যায়ে এসে এত ধৈর্য্য আর সময় নিয়ে কিভাবে এই অসাধ্য সাধন করলেন-এমন প্রশ্নের জবাবে মোঃ ফরিদুল ইসলাম বলেন, লক্ষ্য অর্জনে দৃঢ়তা ও একাগ্রতা থাকলে কোন কিছুই বাঁধা হয়ে দাড়াতে পারেনা। সরকারীর মেয়াদের শেষ প্রান্তে এসে মোঃ ফরিদুল ইসলাম এর ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করার বিষয়টি আরো অনেকের জন্যেই অনুকরনীয় দৃষ্টান্ত হতে পারে। উল্লেখ্য মোঃ ফরিদুল ইসলাম তাঁর সুদীর্ঘ কর্মজীবনে সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ন দপ্তরে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন এবং রাষ্ট্রীয়ভাবে বিভিন্ সভা, সেমিনার ও প্রশিক্ষনে অংশগ্রহনের উদ্দেশ্যে তিনি অনেক দেশ ভ্রমন করেছেন। মোঃ ফরিদুল ইসলাম বাগেরহাট জেলার সদর উপজেলাধীন বেশরগাতি গ্রামের স্বনামধন্য স্কুল শিক্ষক মোঃ লতিফর রহমান এর জ্যেষ্ঠ পুত্র। তিনি পাঁচ ভাইবোনের মধ্যে ২য়। তাঁর অপর চার ভাই-বোন প্রত্যেকেই স্ব-স্ব ক্ষেত্রে সুপ্রতিষ্ঠিত। তাঁর মা হালিমা বেগম রতœগর্ভা হিসাবে স্বীকৃতি পেয়েছেন। মোঃ ফরিদুল ইসলাম এর বড়বোন অগ্রনী ব্যাংকের এজিএম হিসাবে বর্তমানে অবসর ভোগ করছেন। তাঁর ছোট বোন গৃহিনী এবং তাঁর ২য় ভাই জনাব মোঃ রফিকুল ইসলাম জগলু বর্তমানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রবাসী সার্টিফায়েড পাবলিক একাউন্টেট (সিপিএ)। তাঁর সর্বকনিষ্ঠ ভাই মোঃ জাহিদুল ইসলাম একজন প্রতিষ্ঠিত কম্পিউটার প্রকৌশলী হিসাবে বাংলাদেশে কর্মরত। তিনি এবং তাঁর পরিবার অনেকদিন থেকেই এলাকার জনমানুষের কল্যানে বিভিন্নরুপ সমাজ ও জনহিতকর কার্যে নিয়োজিত আছেন। এলাকার দরিদ্র অসহায় মানুষের কল্যানে তাঁরা উদারহস্তে সাহায্য-সহযোগিতা করে যাচ্ছেন তাঁদের এলাকায় ইতোমধ্যে তাঁর প্রয়াত পিতার নামে লতিফ মাষ্টার ফাউন্ডেশন নামে একটি সামাজিক ও দাতব্য প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন। তাঁদের বিপুল পরিমান পৈত্রিক সম্পত্তিসহ খরিদা সম্পত্তি এই ফাউন্ডেশনের বরাবরে দান করেছেন। এর আওতায় ইতোমধ্যে একটি বিশালাকায় মসজিদ, মাদ্রাসা, এতিমখানা ও বৃদ্ধনিবাস এর নির্মান কাজ চলছে। এতিমখানাটি ইতোমধ্যে চালু হয়েছে। একই কমপ্লেক্সে একটি সাইন্স ও টেকনোলজি ইন্সটিটিউট, একটি মসজিদ ভিত্তিক লাইব্রেরী, দাতব্য চিকিৎসালয় বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন আছে। তাঁর পি-এইচ,ডি ডিগ্রী অর্জনে কুড়িগ্রাম জেলা পরিষদের কর্মকর্তা ও কর্মচারীগন খুব আনন্দিত হন এবং গতকাল সন্ধায় জেলা পরিষদ মিলনায়তনে তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রাণঢালা ফুলেল শুভেচ্ছ জানান। অতঃপর কেক কাটা হয়। এ সময় তার যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী ছোট ভাই ও পরিবারবর্গ উপস্থিত ছিলেন। একই দিন রাতে কুড়িগ্রাম প্রেসক্লাবের সভাপতি রাজু মোস্তাফিজের নেতৃত্বে সাংবাদিকবৃন্দ কুড়িগ্রাম সদর ডাকবাংলোতে তাঁকে ফুলেল শুভেচ্ছ জানান।