বিভিন্ন ইস্যুতে ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশে আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও অংশগ্রহণমূলক হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন ঢাকায় নবনিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক। গত সোমবার (১০ জুলাই) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে তিনি এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন। এসময় আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে বিদেশি পর্যবেক্ষকদের স্বাগত জানান ড. মোমেন। সাক্ষাৎকালে চলমান রোহিঙ্গা সংকটে বাংলাদেশকে ব্রিটিশ সরকারের রাজনৈতিক ও মানবিক সহায়তা এবং শিক্ষার্থীসহ বাংলাদেশি নাগরিকদের ভিসা ইস্যুকরণ সহজ করার আশ্বাস দেন সারাহ কুক।
বাংলাদেশ একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে বাংলাদেশি রাজনীতিবিদদের অঙ্গীকারের প্রতি জোর দেন ব্রিটিশ হাইকমিশনার। এসময় সারাহ কুককে অভিনন্দন জানিয়ে বিভিন্ন সময়ে প্রয়াত ব্রিটিশ রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ ও প্রিন্স চার্লসের সঙ্গে আলাপের কথা স্মরণ করেন ড. মোমেন। এছাড়া দ্বিতীয় এলিজাবেথের অন্ত্যোষ্টিক্রিয়া ও রাজা তৃতীয় চার্লসের রাজ্যাভিষেক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যোগদানের কথাও উল্লেখ করেন তিনি।
১৯৭২ সালের ৪ জানুয়ারি বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের ঐতিহাসিক সম্পর্কের শুরুর কথা স্মরণ করেন ড. মোমেন। পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে স্বাধীন বাংলাদেশে ফেরার পথে লন্ডনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে তৎকালীন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্যার অ্যাডওয়ার্ড হিথের উষ্ণ অর্ভ্যথনার কথাও তুলে ধরেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের সামাজিক-অর্থনৈতিক বিস্ময়কর উন্নয়নের কথা তুলে ধরেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। দুদেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক অত্যন্ত দৃঢ় বলে আখ্যায়িত করেন তিনি। বাংলাদেশের উন্নয়ন যাত্রায় যুক্তরাজ্যের সহায়তারও প্রশংসা করেন ড. মোমেন। দুই দেশই মানবাধিকার ও গণতন্ত্রের একই মূল্যবোধ ধারণ করে বলেও ব্রিটিশ হাইকমিশনারকে জানান তিনি।
কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ, নবায়নযোগ্য ও কার্বন নির্গমন করে না, এমন জ্বালানি এবং বেসামরিক বিমানখাতে যুক্তরাজ্যের আরও বিনিয়োগের আহ্বান জানান বাংলাদেশের এ শীর্ষ কূটনীতিক। জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় ও আন্তর্জাতিক সামুদ্রিক সংস্থার (আইএমও) মহাসচিব এবং কাউন্সিল সদস্য পদে নির্বাচনে যুক্তরাজ্যের সমর্থন চেয়েছেন ড. মোমেন।
বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের ঐতিহাসিক সম্পর্ক, দুদেশের জনগণের মধ্যকার সম্পর্ক ও কমনওয়েলথের অভিন্ন মূল্যবোধ ধারণের প্রতি আলোকপাত করেন ব্রিটিশ হাইকমিশনার। প্রতিরক্ষা, বেসামরিক বিমান, জলবায়ু খাতসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে দুপক্ষের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সফরের কথাও তুলে ধরেন তিনি।
সারাহ কুক বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশের দ্রুত অর্থনৈতিক উন্নয়নের জেরে দুদেশের সম্পর্কোন্নয়ন সহায়তাকেন্দ্রিক থেকে কৌশলগত দিকে অগ্রসর হয়েছে। যুক্তরাজ্যের অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশি অভিবাসীদের অবদান ও বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ পার্লামেন্ট সদস্যদের ভূমিকার কথাও স্বীকার করেন সারাহ কুক। বাংলাদেশের বিভিন্ন যুতসই প্রকল্পে ব্রিটিশ বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগ করবে বলে প্রত্যাশার কথা জানান এ ব্রিটিশ কূটনীতিক।