রাজনীতির মাঠ দখলের লড়াই জোরালো হচ্ছে। যুগপৎ আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা দেয়ার পর বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর সবচেয়ে বড় কর্মসূচি ছিল আজ ২৭ শে জুলাই। কিন্তু নির্ধারিত জায়গায় অনুমতি না পাওয়ায় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানিয়েছেন তারা আগামী ২৮ শে জুলাই মহা সমাবেশ করবেন। এদিকে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সর্বশেষ খবরে জানা গেছে, রাজধানীর নয়াপল্টন কিংবা সোহরাওয়ার্দী উদ্যান নয়, সায়েদাবাদের গোলাপবাগ মাঠে আজকের মহাসমাবেশ করার জন্য বিএনপিকে পরামর্শ দিয়েছে পুলিশ। যদিও বিএনপির পক্ষ থেকে মহাসমাবেশের ভেন্যু হিসেবে নয়াপল্টন কিংবা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের জন্য ডিএমপিতে আবেদন করা হয়েছিল। কিন্তু পুলিশ বিএনপির পছন্দের দুটি ভেন্যুতে অনুমতি দেয়নি।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার একেএম হাফিজ আক্তার বলেন, নয়াপল্টন ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ভেন্যুগুলো পুলিশের পক্ষ থেকে যাচাই-বাছাই করে বিএনপিকে অনুমতি দেয়া হয়নি। তাদেরকে গোলাপবাগ মাঠে মহাসমাবেশ করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
দিতে চাইছে বিএনপি। এজন্য ব্যাপক প্রস্তুতিও নেয়া হয়েছে। এই সমাবেশ থেকে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা দেয়া হবে। দলীয় সূত্র বলছে, এই সমাবেশ হবে বিরোধী দলগুলোর পরবর্তী আন্দোলনের টার্নিং পয়েন্ট।
অভিন্ন দাবিতে আজ বৃহস্পতিবার ঢাকায় মহাসমাবেশ ডেকেছে বিএনপিসহ সমমনা ৩৭টি দল। একইদিনে শান্তি সমাবেশ করবে আওয়ামী লীগের ৩ সহযোগী সংগঠন। এদিন সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। এরপর আর এ ধরনের সমাবেশের কর্মসূচি নাও থাকতে পারে। পরের কর্মসূচিগুলো হবে ভিন্ন ধাচের। এতে সর্বস্তরের অংশগ্রহণ বাড়বে। এ ছাড়া মহাসমাবেশে কোনো ধরনের বাধা আসলে পরর্বর্তী কর্মসূচিতেও বড় পরিবর্তন আসতে পারে। এসব কারণে আজ বৃহস্পতিবারের মহাসমাবেশ নিয়ে তৈরি হয়েছে ব্যাপক কৌতুহল। কেমন হবে এ দিনের মহাসমাবেশ। কী ঘোষণা আসছে। কেমন হবে বিরোধীদের পরবর্তী কর্মসূচি এমন নানা প্রশ্ন সাধারণ মানুষের মাঝেও। একইসঙ্গে সংঘাত সহিংসতার শঙ্কাও করছেন কেউ কেউ। সমাবেশ সফল করতে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এক ভিডিও বার্তায় নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দিয়েছেন। এ ছাড়া দলের নেতারা সমাবেশ সফল করতে দফায় দফায় বৈঠক করেছেন। সমাবেশে অংশ নিতে নেতাকর্মীদের কেউ কেউ ইতিমধ্যে ঢাকায় চলে এসেছেন। আজকের মধ্যে অনেকে ঢাকায় চলে আসবেন। এ ছাড়া সমাবেশের দিনও সারা দেশের নেতাকর্মীরা সমাবেশে অংশ নেবেন। যদিও এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে অনুমতি ও স্থান নির্ধারণ করে দেয়া হয়নি। তবে বিএনপি নেতারা জানিয়েছেন, যেখানেই সমাবেশের অনুমতি দেয়া হোক না কেন এদিন পুরো ঢাকায় সমাবেশের আমেজ থাকবে।
দলীয় সূত্র বলছে, সমাবেশ থেকে সরকারকে একটি নির্ধারিত সময়ের আল্টিমেটামও দেয়া হতে পারে। এই আল্টিমেটামের সময় শেষ হলে লাগাতার কর্মসূচিও আসতে পারে। যদিও মহাসমাবেশ থেকে কী ঘোষণা আসবে তা চূড়ান্ত হয়নি। সমাবেশের দিনে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। তার আগে বিএনপি’র নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতাদের বৈঠক হবে আজ। এ ছাড়া সমমনা দলগুলোর সঙ্গেও আলোচনা হচ্ছে।
কেউ কেউ বলছেন, বিএনপি’র মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে সরকার কিংবা সরকারদলীয় লোকজন বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চাইলে বিকল্প চিন্তাও সামনে আসতে পারে। সেক্ষেত্রে করণীয় কী হবে তাও নির্ধারণ করে রেখেছেন নেতারা। এ নিয়ে গতকাল বিকালে গুলশানে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের শীর্ষ নেতাদের নির্দেশনা দিয়েছেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। মহাসমাবেশে নেতারা কোন কোন এলাকা থেকে কতো লোক নিয়ে উপস্থিত থাকবেন তা দলীয় হাইকমান্ডকে অবহিত করতে বলা হয়েছে। বৈঠক সূত্রে জানা যায়, মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে বিএনপি হাইকমান্ড দলের শীর্ষনেতাদের কঠোর নির্দেশনা দেন। শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করতে নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকতেও পরামর্শ দেয়া হয় বৈঠকে। সরকারদলীয় নেতাকর্মীরা বাধা ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করলে তাৎক্ষণিক কী ব্যবস্থা নেয়া হবে তাও জানানো হয় নেতাদের। এদিকে মহাসমাবেশকে সফল করতে দফায় দফায় বৈঠক করছে বিএনপি। নয়াপল্টন ও গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে বৈঠক করেন শীর্ষ নেতারা। বিএনপি ও তার অঙ্গসংগঠনের শীর্ষ নেতারা পৃথক পৃথকভাবে বিভিন্ন ইউনিটের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করছেন। নয়াপল্টনে সমাবেশ হবে এমনটা ধরে নিয়ে কারা কোথায় দায়িত্ব পালন করবেন সেই তালিকাও সম্পন্ন করেছেন তারা। একইসঙ্গে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসকে আহ্বায়ক ও সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীকে সদস্য সচিব করে মহাসমাবেশের উপ-প্রস্তুতি কমিটি করেছে বিএনপি। সেখানে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি’র আহ্বায়কদেরকে রাখা হয়েছে। গতকাল সন্ধ্যায় মির্জা আব্বাসের বাসায় ঢাকার বিভিন্ন এলাকার নেতাকর্মীদের নিয়ে প্রস্তুতি সভা হয়েছে। আগামীকাল নেতাকর্মীদের নিয়ে আগেভাগেই মহাসমাবেশস্থলে আসার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। একইসঙ্গে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা না হওয়া পর্যন্ত স্থান ত্যাগ না করতে নির্দেশনা আসে প্রস্তুতি সভায়।
ইতোমধ্যে সমমনা দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক করেছে বিএনপি। বৈঠকে শীর্ষ নেতাদের মতামত নেয় দলটি। বৈঠক সূত্রে জানা যায়, আগামীকাল শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি শেষ করতে চায় দলগুলো। তবে কোনো প্রকার বাধা কিংবা হামলা হলে তাৎক্ষণিকভাবে কঠোর কর্মসূচি আসতে পারে। সমমনা দলগুলোর দু’জন শীর্ষ নেতা জানান, হুটহাট কোনো সিদ্ধান্তে যাবে না দলগুলো। সরকারের পদত্যাগ নিশ্চিত করতে মহাসমাবেশে উপস্থিতির উপর ভিত্তি করেই কর্মসূচি দেবে বিএনপি। সরকারকে স্বল্প সময়ের জন্য আল্টিমেটাম দেয়া হবে। এরমধ্যে সরকার পদত্যাগ না করলে আগামী আগস্ট মাসে লাগাতার কর্মসূচি পালিত হবে। সেক্ষেত্রে অবরোধ কিংবা ঘেরাও কর্মসূচির মতো কর্মসূচি আসতে পারে। ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি’র সদস্য সচিব আমিনুল হক জানান, বিএনপি’র মহাসমাবেশে লাখ লাখ মানুষের জনসমাগম ঘটবে। শুধু ঢাকা মহানগরেই নেতাকর্মীদের সঙ্গে সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণে জনসমুদ্রে পরিণত হবে মহাসমাবেশ। মহাসমাবেশে আগত নেতাকর্মীদের আসা-যাওয়া নির্বিঘ্ন করতে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে স্থানীয় নেতাকর্মীদের নজর রাখতে নির্দেশ দিয়েছে বিএনপি। যুগপৎ’র বাইরে থাকা কয়েকটি দলও মাঠে নামছে: সরকার পতনে বিএনপি ঘোষিত এক দফা দাবির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে নেই এমন কয়েকটি দলও অভিন্ন দাবিতে মাঠে নামছে। এই দলগুলোর মধ্যে আছে জামায়াত, বিজেপি, খেলাফত মজলিশ, ন্যাপ, এনডিপি এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। দীর্ঘদিন ২০ দলীয় জোটে থেকে বিএনপি’র সঙ্গে রাজপথে সরকারবিরোধী আন্দোলন করেছে জামায়াত, বিজেপি, খেলাফত মজলিশ এবং ন্যাপ। তবে ৪ বছরের অধিক সময় ধরে ন্যাপ ও এনডিপি, প্রায় ১ বছর ১০ মাস ধরে খেলাফত মজলিশ এবং ৪ বছরের অধিক সময় ধরে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটে নেই বিজেপি। আর গত ৯ই ডিসেম্বর ২০ দলীয় জোট অনানুষ্ঠানিকভাবে ভেঙে দেয় বিএনপি। ওই সময় থেকে জামায়াতও আর তাদের সঙ্গে নেই।
ইতিমধ্যে বর্তমান সরকারের পদত্যাগ, সংসদ বিলুপ্ত, নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন, নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন ব্যবস্থার দাবিতে আজ বৃহস্পতিবার ঢাকায় সমাবেশের ডাক দিয়েছে বিএনপি।
এদিকে বিএনপি ঘোষিত কর্মসূচির সঙ্গে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কর্মসূচিও প্রায় একই। তারাও বর্তমান সংসদ ভেঙে দিয়ে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনসহ বিভিন্ন দাবিতে ৩ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। কর্মসূচিগুলোর মধ্যে ২৮শে জুলাই সব মহানগরে মিছিল, ৩০শে জুলাই জেলা শহরগুলোতে মিছিল এবং আগামী ১লা আগস্ট ঢাকায় সমাবেশ করবে দলটি। জামায়াতের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানায়, জামায়াত বিএনপি’র সঙ্গে যুগপৎ রাজপথের আন্দোলনে নেই। কিন্তু তারাও বর্তমান সংসদ ভেঙে দিয়ে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে তাদের অবস্থান থেকে কর্মসূচি পালন করবে।
বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি): একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করার পরেও প্রথমে ঐক্যফ্রন্টের দুজন এবং বিএনপি’র সম্মতিতে দলটির ৪ জন সংসদ সদস্য শপথ নেয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগে ২০১৯ সালে ৬ই মে ২০ দলীয় জোটের সব রাজনৈতিক কর্মকান্ড থেকে বেরিয়ে যায় বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি। দলটি বিএনপি’র সঙ্গে বর্তমানে যুগপৎ আন্দোলনে না থাকলেও নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে তারা চলতি মাসে মাঠে নামতে পারে বলে জানা গেছে।
খেলাফত মজলিশ: ২০১৮ সালে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠনের মধ্যদিয়ে ২০ দলীয় জোটকে রাজনৈতিকভাবে অকার্যকর করার অভিযোগে ২০২১ সালে ১লা অক্টোবর জোট ছাড়ে খেলাফত মজলিশ। জোট ছাড়লেও নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবিতে রাজপথে কর্মসূচি পালন করছে দলটি। ইতিমধ্যে দলটি দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধ, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন, গ্রেপ্তার আলেম-ওলামা ও রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের মুক্তি এবং জাতীয় সংকট উত্তরণসহ ৮ দফা দাবিতে বিভাগীয় পর্যায়ে সমাবেশ করছে। এর অংশ হিসেবে আগামী ২৯শে জুলাই জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বা দলীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করবে খেলাফত মজলিশ। খেলাফত মজলিশের মহাসচিব ড. আহমেদ আবদুল কাদের বলেন, বিএনপি’র যে দাবি, আমাদেরও সেই একই দাবি। কিন্তু আমরা বিএনপি’র সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে নেই। আমরা আমাদের মতো করে দাবি আদায়ে আন্দোলন করছি এবং করবো।
বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (বাংলাদেশ ন্যাপ): ২০১৮ সালে ৮ই ডিসেম্বর ২০ দলীয় জোট ছেড়ে দেয় ন্যাপ। তবে ন্যাপও বাংলাদেশে সকল রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চায়।
ন্যাপের মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া বলেন, ন্যাপ সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে নির্বাচন চায়। এজন্য আমরা আমাদের দলীয় অবস্থান থেকে কর্মসূচিও করছি। আর আমরা মনে করি, বর্তমান সংকট সমাধানে সংলাপের প্রয়োজন রয়েছে। এই সংলাপের উদ্যোগ সরকারকেই নিতে হবে। এদিকে জাতীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতে আগামী ২৭শে জুলাই ঢাকায় প্রতিবাদ সমাবেশের ডাক দিয়েছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। বেলা ২টায় বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে এ প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। দলটি বলছে, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশে জাতীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন চায়। এই দাবিতে তারা অতীতে কর্মসূচি করেছে আর ভবিষ্যতেও করবে। প্রসঙ্গত, সরকারবিরোধী যুগপৎ আন্দোলনের গতি বাড়াতে গত ৯ই ডিসেম্বর ২০ দলীয় জোট অনানুষ্ঠানিকভাবে ভেঙে দেয় বিএনপি। ২০ দল ভেঙে তখন দুটি জোট করা হয়। ১২টি দল মিলে ১২ দলীয় জোট এবং জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট। আর বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি) এককভাবে কর্মসূচি পালন করছে।