গাজীপুরের টঙ্গীতে সিরাজ উদ্দিন সরকার বিদ্যানিকেতন এন্ড কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের প্রবেশপত্র বিতরণ মুক্তিযুদ্ধ কন্যার উদ্বোধন ও শিক্ষার্থীদের মঙ্গল কামনায় দোয়া ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে গতকাল ১১ আগস্ট (শনিবার) সকালে অনুষ্ঠিত এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন গাজীপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এডভোকেট আজ বহুৎ উল্লাহ খান, প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, বর্তমান সরকার শিক্ষাবান্ধব। শিক্ষার মান উন্নয়নে নিরন্তর কাজ করে চলেছেন প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা। তিনি ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্দেশ্যে বলেন তোমরাই এ দেশ ও জাতীর ভবিষৎ, তাই তোমাদেরকে ভালোভাবে লেখাপড়া করে বাবা-মা ও দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করবে। মনে রাখবে, তোমরাই আগামীতে এদেশের হাল ধরবে।তোমাদেরকে বিশ্বস্ত ভ্যানগার্ড হতে হবে রাষ্ট্রের যেকোনো দুর্যোগে যেকোনো ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে তোমাদেরকে দেশের কল্যাণে আত্মনিয়োগ করতে হবে। বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক রতন কুমার ঘোষের সঞ্চালনায় ও বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ ওয়াদুদুর রহমান এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি ওসমান আলী, গাজীপুর জজকোর্টের স্পেশাল পিপি অ্যাডভোকেট শাহজাহান মিয়া, বীর মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল আবেদীন, কাজী মোহাম্মদ সেলিম, সহকারী প্রধান শিক্ষক মজিবর রহমান, মুকুল সরকার, আজাহার বেপারী, কাজী শহিদুল্লাহ, সহকারি শিক্ষক আব্বাস আলী প্রমুখ। এ সময় সভাপতি তার বক্তব্যে বলেন এই বিদ্যালয়ের প্রাঙ্গণ তোমাদের কখনোই ভুলবে না। আকাশে উজ্জ্বল নক্ষত্রের মতো, বাগানে ফুটে থাকা ফুলের সৌন্দর্যের মতো আমরা আমাদের হৃদয়ের তুমাদের আজিবন রেখে দিব তোমরা আমাদের হৃদয়ে অমলিন হয়ে থাকবো। তোমাদের এই বিদায় শুভ হোক। তোমরা নিয়ম-শৃঙ্খলা মেনে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবে। এই সময়টা খুব স্পর্শকাতর। একেবারেই সময় নষ্ট করা যাবে না। ফেসবুক, ণড়ঁঃঁনব, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এসব তোমরা মনোযোগ নষ্ট করবে,না, এসবের কপাট বন্ধ করে দাও। অতিরিক্ত রাত জাগা যাবেনা অবশ্যই ভালোভাবে ঘুমাবে সময়ের সর্বোচ্চ ব্যবহার করতে হবে। পরীক্ষার কেন্দ্রে ৯.৩০সময় অবশ্যই উপস্থিত থাকতে হবে। রাস্তার যানজট থাকতে পারে সেই দিকটা খেয়ালরেখেই যথা সময় উপস্থিত হতে হবে, জীবনে অনেক কিছুই করতে পারবে কিন্তু পড়াশোনা শুরুটা গুরুত্বটা সঠিক সময় দিতে হবে। যারা পড়াশোনা না করে গুরুত্ব না দিয়ে অবহেলা করেছে তারা অনেকপদে পদে কষ্ট পাচ্ছে। এজন্য কখনো পড়াশোনাকে অবহেলা করবেনা,প্রশ্নপত্র ফাঁস গুজবে কান দেওয়া যাবে না কখনোই কোনভাবে প্রশ্নপত্র ফাঁস সম্ভব নয়। জীবন বড়ই কঠিন। তোমরা শিক্ষকের কথা মেনে চলো, যার বাবা-মার কথা মেনে চলো, বিদ্যালয়ের মুখ উজ্জ্বল কর এবং সর্বোপরি তোমাদের নিজেকে আলোকিত মানুষ হিসাবে গড়ে তুলো। জীবনে সব সময়ই বড় স্বপ্ন দেখবে এবং সেটা অর্জনের জন্য পরিশ্রম করবে দেখবে তোমারা অনেক দূর এগিয়ে গেছো। বিদ্যালয়ের প্রাঙ্গনে উপস্থিত সকলের প্রতি আমি আবারো আমার শ্রদ্ধেয় ভালোবাসা জানাচ্ছি। ইতিপূর্বে আমাদের সাফল্য ধারাবাহিকতায় এই বিদ্যালয়ে ছাত্রছাত্রীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সহ মেডিকেল কলেজ ও বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় পড়াশোনা সুযোগ পেয়ে অধ্যায়নরত রয়েছে আশা করছি তোমরা তোমাদের সেরা সাফল্য অর্জন করে দেশের বিভিন্ন খ্যাতিমান পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় পড়াশোনা করবে। আবার দেখা হবে। আল্লাহ হাফেজ। বিদায়ী শিক্ষার্থীদের বক্তব্যে বিদ্যালয়ের মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থী সাদিয়া ইসলাম তন্নী তার বক্তব্যে বলেন, অত্যান্ত দুঃখ ও ভারাক্রান্ত মন নিয়ে বলতে হচ্ছে আজ আমাদের বিদায় অনুষ্ঠান। যদিও আমরা মনে করি এটা একটা বিদায়ের আনুষ্ঠানিক মাত্র। কারণ মন থেকে চিরতরে বিদায় নেওয়া হয়তো সম্ভব হবে না। দীর্ঘদিন ধরে আমরা এই প্রতিষ্ঠানে পড়েছি এবং এই প্রতিষ্ঠানের প্রতিটি শিক্ষক শিক্ষিকাবৃন্দ আমাদেরকে বিভিন্ন বিষয় অত্যান্ত দক্ষতার সাথে পড়িয়েছেন তা আমরা কখনোই ভুলবোনা, আর আমাদের শিক্ষকরা সবসময় আমাদের উৎসাহ দিয়েছেন। এজন্য আমরা আপনাদের কাছে চিরকৃতজ্ঞ। আপনারা আমাদের জন্য দোয়া করবেন যেন অত্যন্ত সফলতার সাথে পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হয়ে ভবিষ্যতে শিক্ষাজীবনে আরো উন্নতি করে দেশ ও জাতি গঠনে ভূমিকা রাখতে পারি। এখানে দীর্ঘ শিক্ষাজীবনে আপনাদের অনেক শাসন-বাড়নের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে যা সাময়িক বিরক্তিকর মনে হলেও এখন এই শেষ মুহূর্তে বুঝতে পারছি এটা আমাদের জন্য কতটা দরকারি ছিলো। তাই আমাদের কোনো আচরণের যদি কোনো শিক্ষক/শিক্ষিকা কষ্ট পেতে থাকেন বা ছোট কিংবা বড় কোনো ভুল করে থাকি তাহলে আমাদেরকে ক্ষমা করবেন। সমস্ত ছাত্র-ছাত্রীদের পক্ষ থেকে আমি বিনীতভাবে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। যাই হোক, বিদায়ী মুহূর্তে আর বেশি কিছু বলতে চাই না, এই প্রতিষ্ঠান এবং প্রতিষ্ঠানের সকল শিক্ষক/শিক্ষিকাবৃন্দের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ ও দীর্ঘায়ু কামনা করে আমি আমার বক্তব্য এখানেই শেষ করছি। ধন্যবাদ সবাইকে।