শুক্রবার, ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ১০:০৩ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম ::
জুড়ীতে টিলা কাটার মহোৎসব ঝুঁকিতে ঘরবাড়ি কালীগঞ্জ বিএনপির জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস পালন জামায়াতে ইসলামী এবং শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন কখনোই চাঁদাবাজি ও টেন্ডারবাজি সমর্থন করে না রায়গঞ্জে ভূমিহীন সম্মেলন ও আলোচনা সভা বাংলাদেশে গ্যাস সম্প্রসারণের বিরুদ্ধে মোংলায় এশিয়া ডে অফ অ্যাকশন কর্মসুচি পালন মহাদেবপুরে কোটি টাকার চেক বিতরণ অপেক্ষা পরিণত হয়েছে আক্ষেপে, তবুও হয়নি পাকা রাস্তা শ্রীমঙ্গল উপজেলা বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের পক্ষ থেকে সাবেক এমপি এম নাসের রহমানকে ফুলেল শুভেচ্ছা শেরপুরে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসে জেলা বিএনপির বর্ণাঢ্য র‌্যালি ও আলোচনা সভা ভালুকায় বিপ্লব ও সংহতি দিবসে বিএনপির র‌্যালি ও আলোচনা সভা

চুল পাকে কেন, গবেষণা কী বলছে?

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ১৫ আগস্ট, ২০২৩

কবি প্রিয়ার চুলকে ‘মেঘবরণ’ বলেছেন। মূলত তিনি বুঝিয়েছেন মেঘের মতো কালো চুলের কথা। কিন্তু, হায়! বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রিয়ার মেঘবরণ কালো চুলেও পাক ধরে। কবি পছন্দ না করলেও, চুল পাকা প্রত্যেকের মতো, তার প্রিয়ার জন্যও অবধারিত নিয়তি। এখন প্রশ্ন হলো- চুল পাকে কেন? চুল কালো রাখারই বা উপায় কী? চুলের রং সাধারণত কালো। তবে বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কালো চুল ধূসর হতে শুরু করে। অনেকের শগতভাবেও চুল ধূসর রঙের হতে পারে। চুল পাকার রহস্য উন্মোচন করতে নিউ ইয়র্ক ইউনিভার্সিটির (এনওয়াইইউ) একটি দল গবেষণা চালিয়েছেন ইঁদুরের ওপর। তারা বলছেন, যে কোষ চুলের রং তৈরি করে, তা পরিপক্ব হওয়ার ক্ষমতা হারিয়ে ফেললে চুল ধূসর হতে শুরু করে।
যে কোনো সময় চুল কেটে ছোট করা হলে স্বাভাবিক চক্রের মতোই আবার বড় হয়। মাথার ত্বকের ফলিকল থেকে নতুন চুল গজায়। ওই ফলিকলেই থাকে মেলানোসাইট নামে এক ধরনের স্টেম সেল। যা চুলের রং উৎপাদন করে। মেলানিন অর্থাৎ চুলের রঞ্জক পদার্থ প্রত্যেক চুলের গ্রন্থিকোষে মেলানোসাইট নামক কোষ উৎপাদন করে। আর এই কোষগুলো দুটি ভিন্ন ধরনের মেলানিন তৈরি করে, যা ইউমেলানিন ও ফিওমেলানিন নামে পরিচিত।
ইউমেলানিন হলো গাঢ় রঞ্জক। অর্থাৎ এটি যত বেশি থাকবে, চুল তত গাঢ় রঙের হবে। কাজেই ইউমেলানিনের পরিমাণ বেশি থাকলে চুলের রং কালো বা বাদামি হয়। মেলানিন না থাকলে চুল হয় সোনালি রঙের। আর ফিওমেলানিন থাকলে চুলের রং হয় লাল। কিন্তু চুলের রং ধূসর হয় কখন? ধূসর চুলের জন্য দায়ীও মেলানিন। ধূসর চুলে মেলানিনের পরিমাণ সবচেয়ে কম থাকে। আর সাদা বা রুপালি চুল বর্ণহীন, অর্থাৎ এ চুলে মেলানিন থাকে না। বিজ্ঞানীরা বলছেন, চুলের রং এ রকম ধূসর, রুপালি বা সাদা হওয়ার প্রধান কারণ হলো বার্ধক্য। গবেষণার জন্য এনওয়াইইউর ল্যাঙ্গোন হেলথ টিম বিশেষ স্ক্যান ও ল্যাব কৌশল ব্যবহার করেছে বলে জানিয়েছে বিবিসি। গবেষক দলের প্রধান ডা. কিউই সান নেচার জার্নালকে বলেন, মেলানোসাইট স্টেম সেলগুলো কীভাবে চুলের রং তৈরির কাজ করে, সে বিষয়ে তারা প্রাথমিকভাবে কিছু ফল পেয়েছেন। আর তাতে চুল ধূসর হওয়া ঠেকানোর উপায় উদ্ভাবনের সম্ভাবনাও জাগছে।
বিশেষজ্ঞরা এখনও আমাদের মেলানোসাইট কোষগুলোর মারা যাওয়ার কারণ বোঝার চেষ্টা করছেন। আর বার্ধক্যের কারণ নিয়েও কয়েকটি তত্ত্ব রয়েছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, প্রধানত দু-ধরনের বার্ধক্য আছে একটি অন্তর্গত অপরটি বহির্গত। অন্তর্গত বার্ধক্যের জন্য দায়ী মৌলিক জৈবিক কাজ সম্পন্ন করা অভ্যন্তরীণ জৈবিক কোষ। একটি কোষ যখন বিভাজিত হয়, প্রতিবারই এটি ডিএনএ হারায়। এতে কোষগুলোর বয়স বাড়ে এবং ঠিকমতো কাজ করার ক্ষমতা কমে যায়। বহির্গত বার্ধক্য হয়ে থাকে বাহ্যিক ফ্যাক্টরের কারণে। মানসিক চাপ, খাদ্যাভ্যাস এবং ভিটামিন বি-১২-এর অভাব বা অটোইমিউন রোগের মতো কিছু অসুস্থতার কারণেও চুল ধূসর হয়ে যেতে পারে।
অবশ্য বিজ্ঞান জার্নাল ইলাইফ-এ প্রকাশিত সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে, আমাদের চুলে পাক ধরা আটকে দেয়া কিংবা বিলম্বিত করা সম্ভব। চুলে পাক ধরার অন্যতম কারণ মানসিক চাপ। যুগ যুগ ধরে প্রচলিত এ বিশ্বাসের সপক্ষে যথেষ্ট প্রমাণ পেয়েছেন কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটি ভ্যাগেলোস কলেজ অভ ফিজিশিয়ানস অ্যান্ড সার্জনস-এর একদল গবেষক। গবেষকরা ৯ থেকে ৬৫ বছর বয়সি ১৪ জন সুস্থ স্বেচ্ছাসেবকের ৩৯৭টিরও বেশি চুলের গোছা নিয়ে পরীক্ষা করেছেন। স্বেচ্ছাসেবকদের কেউই তাদের চুলের প্রাকৃতিক রং বদলানোর জন্য কোনো হেয়ার ডাই বা রাসায়নিক ব্যবহার করেননি।
একটি হাই রেজ্যুলেশন স্ক্যানার দিয়ে স্বেচ্ছাসেবকদের চুলের গোছার ছবি তোলা হয়। স্ক্যানারে চুলের রঙে অতি ক্ষুদ্র ও সূক্ষ্ম পরিবর্তন ধরা পড়ে, যা সাদা চোখে ধরা পড়ে না। গবেষকরা অবাক হয়ে দেখেন, স্বেচ্ছাসেবকরা চাপমুক্ত হওয়ার পর তাদের ধূসর চুল ফের আসল রং ফিরে পেয়েছে। এই পরিবর্তন দেখে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ১০ জন চাপ কমানোর জন্য সক্রিয় ব্যবস্থা নেন। যেমন, তারা ছুটিতে যান কিংবা কোনো উত্তেজনাপূর্ণ সমস্যার সমাধান করেন। প্রত্যেক অংশগ্রহণকারীর বেলায়ই দেখা গেল, চাপ কমানোর পর চুলের ডগা সাদা থাকলেও গোড়ার দিকে রং গাঢ় হয়েছে কিংবা আসল রং ফিরে পেয়েছে।
তবে এ খবর শুনে ধূসর চুলের হাত থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য যদি চুল রং করা বন্ধ করে দিয়ে লম্বা ছুটিতে যাওয়ার পরিকল্পনা শুরু করেন, তবে আপনার জন্য একটা দুঃসংবাদ আছে। মানসিক চাপ কমানো স্বাস্থ্য ও চুলের জন্য ভালো হলেও এটি আমাদের চুলের স্বাভাবিক রং ফিরিয়ে দেওয়ার নিশ্চয়তা দেয় না। কাজেই দেখা যাচ্ছে, চুলের রঞ্জক পদার্থ সবার বেলায় ফিরে আসে না। গবেষণাটির ফল বলছে, মধ্যবয়সে মানসিক চাপ কমালে চুলে পাক ধরা বন্ধ কিংবা অন্তত স্থগিত রাখতে পারার সম্ভাবনা অনেক বেশি। তবে আপাতত আমরা এটুকু ভেবে সান্ত¡না পেতে পারি যে, আমরা শুধু আমাদের একার চুলেই রুপালি রং খুঁজে পাইনি, আরও অনেকেই পেয়েছেন এবং পাবেন। লেখক: জাহিদ সাদেক । উৎস:রাইজিংবিডি.কম




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com