গতকাল সোমবার অপরাহ্নে (বেলা সাড়ে ১২ টা) জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক, গোয়েন লুইসের সাথে সাক্ষাৎ ও বৈঠক করেছে আমার বাংলাদেশ পার্টি, এবি পার্টি’র এক প্রতিনিধিদল। পূর্বনির্ধারিত এ বৈঠকে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের প্রক্রিয়া, নিরপেক্ষ অন্তর্র্বতীকালীন নির্বাচনকালীন সরকারের প্রয়োজনীয়তা, এবি পার্টির রাজনৈতিক অবস্থান সহ নানা বিষয়ে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
এবি পার্টির প্রতিনিধিদলে ছিলেন দলের যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম, সদস্য-সচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু, যুগ্ম সদস্য সচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, ব্যারিস্টার যোবায়ের আহমেদ ভূঁইয়া এবং এবি পার্টির সহকারী সদস্য-সচিব ও মহিলা বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার নাসরীন সুলতানা মিলি। এক ঘণ্টারও অধিক সময় ধরে চলা ওই বৈঠকে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক, গোয়েন লুইস ছাড়াও ঢাকা দপ্তরের সিনিয়র মানবাধিকার উপদেষ্টা হুমা খান উপস্থিত ছিলেন।
এবি পার্টির প্রতিনিধিদল প্রাথমিকভাবে বিগত তিন বছরে তাদের দল গঠনের ইতিহাস, এর প্রেক্ষাপট এবং বিস্তৃতির বিস্তারিত অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। বর্তমান জটিল রাজনৈতিক পরিস্থিতি, এর থেকে উত্তরণ এবং পরবর্তী নতুন প্রজন্মের রাজনীতি ও এর বিপরীতে রাষ্ট্রযন্ত্রের চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে জাতিসংঘের পক্ষ থেকে জানার যে আগ্রহ, এবি পার্টি নেতৃবৃন্দ তাকে স্বাগত জানান। এবি পার্টি পুরোনো ধারার গতানুগতিক বংশ পরম্পরার রাজনীতি থেকে পরিত্রাণের জন্য একটি নীতি ভিত্তিক, সমস্যা সমাধানের রাজনীতির প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি বৈঠকে তুলে ধরেন।
সামনের দিনে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের প্রক্রিয়া নিয়েও বৈঠকে দীর্ঘ আলোচনা হয়। এবি পার্টি নেতৃবৃন্দ একটি অন্তর্র্বতীকালীন নিরপেক্ষ নির্বাচনকালীন সরকারের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে বলেন; পূর্ববর্তী অভিজ্ঞতায় এটা বারবার প্রমাণ হয় যে, দলীয় সরকার কখনোই একটি বিশ্বাসযোগ্য ও আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন পরিচালনা করতে পারে না। ঢাকা- ১৭ আসনের সাম্প্রতিক উপনির্বাচন প্রমাণ করেছে বর্তমান সরকারের অধীনে কোনো অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন সম্ভব নয়। প্রতিনিধি দলটি আবাসিক প্রতিনিধিকে গত বছরের ডিসেম্বরে এবি পার্টি ঘোষিত দুই দফা দাবির কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলে, সেখানে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে আসন্ন নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রস্তাব করা হয়েছিল। আশা করা যায় এতে সকল প্রধান রাজনৈতিক দল সম্মত হবে। এবি পার্টি বিরোধীদলগুলোর বিক্ষোভ এবং সমাবেশের সময় দেশজুড়ে ব্যাপকভিত্তিক মানবাধিকার লঙ্ঘন, সাম্প্রতিক রাজনৈতিক সহিংসতার বিষয়ে দলীয় উদ্বেগ তুলে ধরেন। ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট বাতিল করা এবং অন্য একটি বিতর্কিত সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্টের মাধ্যমে এটা প্রতিস্থাপনের বিষয়টি উল্লেখ করে এবি পার্টি নেতৃবৃন্দ বলেন; এটা চোখে ধুলা দেয়ার একটি অপপ্রয়াস এবং নতুন বোতলে পুরানো মদ উপস্থাপনের উজ্জ্বল নজীর। জাতিসংঘের প্রতিনিধি নির্বাচন-পরবর্তী সংস্কার সম্পর্কে এবি পার্টির ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে আগ্রহ প্রকাশ করলে এবি পার্টি প্রতিনিধি দল এ ব্যাপারে দলীয় দৃষ্টিভঙ্গী ও খসড়া পলিসি সমূহ তুলে ধরে রাষ্ট্র সংস্কারের নীতি সমূহের উপর গুরুত্বারোপ করে।