শুক্রবার, ০১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:০০ পূর্বাহ্ন

আজও ভক্তদের হৃদয়জুড়ে নায়করাজ

বিনোদন ডেস্ক:
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ২২ আগস্ট, ২০২৩

ঢাকাই সিনেমার ইতিহাস রচনায় যে কয়েকজন নায়কের নাম সবার আগে উঠে আসবে তার মধ্যে নায়ক রাজ্জাকের নাম সবার ওপরেই থাকবে। বাংলা সিনেমাকে তিনি নিয়ে গেছেন অনন্য উচ্চতায়। নায়করাজ সিনেমাকে বিনোদন ভুবনের সেরার ভূমিকায় আনতে গিয়ে নিজেও মাহিমান্বিত হয়েছেন। সিনেমাশিল্পে অসামান্য অবদান রাখার জন্য তিনি পেয়েছেন ‘নায়করাজ’ উপাধি। ঢাকাই সিনেমার দর্শকরা নায়করাজ বলতে শুধু রাজ্জাকেই বোঝেন। তিনি আজও সবার মনে রাজার মতোই রাজত্ব করছেন। সবার হৃদয়ের মণিকোঠায় অবস্থান করছেন।
নায়করাজ রাজ্জাক শুধু বাংলাদেশেরই নয়, তাকে উপমহাদেশের কিংবদন্তি অভিনেতা, বাংলা চলচ্চিত্রের সম্রাট বলে বিবেচেনা করা হয়। সবার হৃদয়ে জায়গা করে নেওয়া এই নায়কের গত ২১ আগস্ট ছিল ষষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী। ২০১৭ সালের এই দিনে তিনি তার অসংখ্য ভক্ত-অনুরাগীকে শোকের সাগরে ভাসিয়ে পরপারে পাড়ি জমান। নায়করাজ রাজ্জাক নিজেকে সিনেমার পর্দায় এমনভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন, ফলে তিনি সব শ্রেণির দর্শকের নজর কাড়তে সক্ষম হয়েছেন। তার সিনেমা মুক্তি পাওয়া মানে যেন দর্শকদের কাছে উৎসব ও আনন্দের প্লাবন।
নায়করাজ রাজ্জাক ১৯৪২ সালের ২৩ জানুয়ারি ভারতের দক্ষিণ কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ষাটের দশকে নির্মাতা সালাউদ্দিনের ‘তেরো নম্বর ফেকু ওস্তাগার লেন’ সিনেমায় পার্শ্বচরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে আত্মপ্রকাশ করেন। তবে রাজ্জাক এর আগে থেকেই কলকাতার থিয়েটারের যুক্ত ছিলেন। নির্মাতা জহির রায়হানের ‘বেহুলা’ সিনেমায় রাজ্জাক লখিন্দরের ভূমিকায় অভিনয় করে নায়ক হিসেবে অভিষিক্ত হন। নায়ক হওয়ার লালিত স্বপ্ন নিয়ে রাজ্জাক ১৯৫৯ সালে ভারতের মুম্বাইয়ের ফিল্মালয়তে সিনেমার ওপর পড়াশোনা ও ডিপ্লোমা করেন। এরপর কলকাতায় এসে ‘শিলালিপি’ ও আরও একটি সিনেমায় কাজ করেন। ১৯৬৪ সালে নায়করাজের জীবনের পট পরিবর্তন হয়। কলকাতায় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার কবলে পড়ে রাজ্জাক তার পরিবার-পরিজন নিয়ে ঢাকায় চলে আসতে বাধ্য হন।
জীবনের এই পালাবদলে রাজ্জাক তার স্বপ্নের কক্ষপথ থেকে একবিন্দুও বিচ্যুত হননি। ঢাকায় এসেও স্বপ্ন নিয়ে লড়াই চলমান রাখেন। কাজ শুরু করেন একজন সহকারী পরিচালক হিসেবে। ‘উজালা’ সিনেমায় পরিচালক কামাল আহমেদের সহকারী হিসেবে কাজ করেন রাজ্জাক। এরপর পরিচালক সালাউদ্দিনের সিনেমায় অভিনয়ের কিছুদিন পরই নির্মাতা জহির রায়হান তার ‘বেহুলা’তে রাজ্জাককে লখিন্দরের ভূমিকায় অভিনয় করার সুযোগ করে দেন। এর মধ্য দিয়েই নায়ক হিসেবে রাজ্জাকের প্রথম পরিচয় ঘটে। ‘বেহুলা’ সিনেমায় চিত্রনায়িকা সুচন্দার বিপরীতে নায়ক হিসেবে অভিনয় করে রাজ্জাক তুমুল আলোচনায় আসেন। সেই থেকে একের পর এক সিনেমায় তিনি তার অভিনয়ের ক্যারিশমা দেখান। নায়করাজ রাজ্জাক অভিনীত উল্লেখযোগ্য সিনেমাগুলোর মধ্যে রয়েছে, ‘যে আগুনে পুড়ি’, ‘জীবন থেকে নেয়া’, ‘কী যে করি’, ‘অবুঝ মন’, ‘নীল আকাশের নীচে’, ‘ময়নামতি’, ‘মধু মিলন’, ‘পিচ ঢালা পথ’, ‘রংবাজ’, ‘বেঈমান’, ‘আলোর মিছিল’, ‘বাদী থেকে বেগম’‘অশিক্ষিত’, ‘অনন্ত প্রেম’ ইত্যাদি। তিনি তিন শতাধিক সিনেমায় নায়ক হিসেবে অভিনয় করে সবার প্রিয় নায়কে পরিণত হন। তিনি তার মনোমুগ্ধকর অভিনয় দিয়ে সবার হৃদয়ে বেঁচে থাকবেন অনন্তকাল।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com