প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ চট্টগ্রামের লালদিয়ায় একটি নতুন কন্টেইনার টার্মিনাল নির্মাণ ও পরিচালনার জন্য ডেনিশ শিপিং এবং লজিস্টিক জায়ান্ট মায়েরস্ক গ্রুপের প্রস্তাব বিবেচনা করবে। শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ লালদিয়ায় নতুন কন্টেইনার টার্মিনাল নির্মাণ ও পরিচালনার বিষয়ে মায়েরস্ক গ্রুপের প্রস্তাব বিবেচনা করবে।’
মায়েরস্ক গ্রুপের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রবার্ট মায়ের্স্ক উগলা এবং বাংলাদেশে ডেনিশ চার্জস ডি’অ্যাফেয়ার্স অ্যান্ড্রেস বি কার্লসেন গতকাল সোমবার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর কার্যালয়ে সাক্ষাত করতে গেলে তিনি একথা বলেন। প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম বৈঠকের পর সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে বলেন, শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘বাংলাদেশে ৫০টিরও বেশি ডেনিশ কোম্পানি কাজ করছে এবং মায়েরস্ক গ্রুপ এখন লালদিয়ায় এপিএম টার্মিনাল নির্মাণ ও পরিচালনা করতে আগ্রহ দেখাচ্ছে।’ শেখ হাসিনা বলেন,বন্দর উন্নয়নে লজিস্টিক নীতিমালা প্রণয়নে একটি জাতীয় কমিটি গঠন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দর ইতোমধ্যেই দীর্ঘদিন ধরে চালু রয়েছে এবং সরকার পায়রা বন্দর নামে আরেকটি বন্দর উন্নয়ন করছে এবং শিগগিরই এটি চালু হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ভারত, নেপাল এবং ভুটানকে পারস্পরিক সুবিধার জন্য এই বন্দরগুলো ব্যবহারের সুযোগ দেয়া হয়েছে।’ তিনি আরো বলেন, এসব বন্দরে বিশেষকরে পায়রা বন্দরে অনেক সুযোগ ও সুবিধা থাকবে। জাতির উন্নয়ন ও কল্যাণে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদানের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, মহান নেতা জনগণের অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য সারাজীবন সংগ্রাম করেছেন।
বৈঠকে মায়েরস্ক গ্রুপের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, বাংলাদেশে কনটেইনার শিপিং এবং লজিস্টিক সাপোর্টের ক্ষেত্রে প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে।
রবার্ট মায়েরস্ক উগলা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার স্বপ্নকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরে এর প্রতিফলন ঘটবে।
তিনি বাংলাদেশে বন্দর ও লজিস্টিক সাপোর্টের উন্নয়নে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করে বলেন, এসব খাতে অনেক সুযোগ রয়েছে।
এই প্রসঙ্গে মায়েরস্ক গ্রুপের সিইও বলেন,এইচএন্ডএম, এম এন্ডএস, ওয়ালমার্ট এবং অন্যান্য বড় কোম্পানিগুলো বাংলাদেশ থেকে আরও আরএমজি পণ্য আমদানি করতে আগ্রহী।
তিনি বলেন, সহযোগিতার বৈচিত্র্যের অনেক সুযোগ রয়েছে। ডেনিশ সরকার লজিস্টিক নীতিকে অনেক বেশি সমর্থন করে।
এ সময় প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব এম. তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া এবং চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ সোহাইল উপস্থিত ছিলেন।
সাবেক ধর্মমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা মতিউর রহমানের মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রীর শোক: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সাবেক সদস্য, ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও সাবেক ধর্মমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যক্ষ মতিউর রহমানের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন। আজ এক শোক বার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, মতিউর রহমান বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের একজন নিবেদিতপ্রাণ নেতা ছিলেন।
তিনি বলেন, শত প্রলোভনের মুখে এবং বারবার কারাবরণ করা সত্ত্বেও সারাজীবন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ ও আওয়ামী লীগের রাজনীতির প্রতি অবিচল থেকে তিনি তাঁর সাংগঠনিক দায়িত্ব পালন করে গেছেন।
তিন দশকের বেশি সময় ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃত্বদানকারী এই নেতা মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষক ও সফল সংগঠকের দায়িত্ব পালন করেন। মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদানের জন্য ২০২২ সালে তিনি একুশে পদক লাভ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর মৃত্যুতে দলের এক অপূরণীয় ক্ষতি হলো এবং আমি হারালাম একজন বিশ্বস্ত সহযোদ্ধাকে।
শেখ হাসিনা অধ্যক্ষ মতিউর রহমানের রুহের মাগফিরাত কামনা এবং তাঁর শোক সন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।