বরিশাল নগরীর ত্রিশ গোডাউন এলাকায় নির্মানাধীণ সম্পূর্ন অত্যাধুনিক শিতাতাপ নিয়ন্ত্রিত হাতের স্পর্শছাড়া প্রযুক্তি মেশিনদ্বারা সম্পর্ন কাজের মাধ্যমে ৪৮ হাজার মেট্রিকটন ধারণ ক্ষমতার স্টিল রাইস সাইলো প্রকল্পের কাজ প্রায় ৮০ ভাগ সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়াও কীর্তনখোলা নদীতে নির্মাণাধীন পল্টুন (যেটি) নির্মাণ কাজও দ্রুত গতিতে কাজ শেষ করে প্রকল্পের কাজ শেষ করা হবে। বরিশাল নগরীর ত্রিশ গোডাউন কীর্তনখোলা নদী সংলগ্ন এলাকায় এই স্টিল সাইলোটি কাজ শেষে চালু হলে খাদ্যপণ্যের গুণগতমান ও পুষ্টিমান দীর্ঘ তিন বছর সময় বজায় রাখা সম্ভব হবে। প্রায় ৩৬২ কোটি ৪৩ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত হচ্ছে ৪৮ হাজার মেট্রিকটন ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন এই আধুনিক স্টিল সাইলো।
৫২০ শতক জমির উপর নির্মিত এই সাইলোতে একসঙ্গে তিন বছরের জন্য সংরক্ষণ করা যাবে ৪৮ হাজার টন চাল। সংশ্লিষ্ট সূত্র আরো জানায়, যে কোন দুর্যোগকালীন সময় খাদ্য সঙ্কট মোকাবেলায় স্টিল সাইলোতে সংরক্ষণ করা চাল হবে দূর্যোগে ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের জন্য হবে বড় সহায়ক । বরিশাল বিভাগের ছয় জেলাসহ দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের খাদ্য নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আন্তরিকতায় সরকারিভাবে দীর্ঘদিন মজুদ রাখার উপযোগী আধুনিক ও উন্নতমানের খাদ্য সংরক্ষণাগার নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। পৃথক-পৃথক ১৬টি বিনের মাধ্যমে প্রতিটি বিনে ৩ হাজার মেটিকটন চাল ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন হবে এ সাইলো। সর্বাধুনিক সাইলো পাইল, ফাউন্ডেশন স্টিল স্ট্রাকচারের মাধ্যম সহ নদী ও সড়ক পথে চাল আমদানী করা হলে তা জেটি থেকে কনভেয়ার বেল্টের মাধ্যমে অটোমোশন লোডিংয়ের মাধ্যমে সংরক্ষণাগারে এসে প্রতিটি বিনে মজুদ হবে। এতে কীটনাশক ছাড়া আধুনিক চিলার (স্বয়ংক্রিয় তাপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র) যন্ত্রের মাধ্যমে আদ্রতা ও তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ রেখে প্রায় তিন বছর চাল সংরক্ষণ করা সম্ভব হবে। এটি স্বয়ংক্রিয় প্রক্রিয়ায় চাল সংরক্ষণ, ব্যাগিং ও লেডিং-আনলোডিং প্রক্রিয়া করবে। একাজে নিয়োজিত অপারেটর নিজ কক্ষে বসে প্রতিটি সাইলো বিনের তাপমাত্রা স্বয়ংক্রিয় মেশিনের মাধ্যমে বুঝতে পারবেন। ফলে সঠিক তাপমাত্রা ও আদ্রতা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে। ইতিমধ্যে ১৬টি স্টিল সাইলো বিন ১৬টির কাজ সম্পূর্ন হয়েছে এখন শুধু বাকি কনভেয়ারে কাজ তাও দ্রুতগতিতে চলছে বলে জানান প্রকল্প কাজে সংুশ্লষ্ট সদস্যরা। অন্যদিকে বাংলো,সাইলো অফিস,পাম্প হাউজ সহ গোডাউনের কাজ সম্পূর্ন করার পাশাপাশি আমাদের এখানের কাজ দ্রুতগতিতে চলছে ও আগামী বছরের জানুয়ারী মাসে এ প্রকল্পের কাজ কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর এবং ফেব্রয়ারী মাসে সাইলোর উদ্ধোধন করা হতে পারে হবে বলে বিষয়টি নিশ্চিত করেন সাইলো প্রকল্প প্রকৌশলী বরিশাল সাইলো আ.জ.ম ইফতেখার। এ বিষয়ে বরিশাল আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বরিশাল বিভাগের ছয় জেলায় স্থানীয় পদ্ধতিতে প্রায় ৯০ হাজার টন খাদ্য মজুদের ব্যবস্থা রয়েছে। অত্যাধুনিক খাদ্য মজুদের ক্ষেত্রে স্টিল সাইলো হবে বাড়তি শক্তি। খরা, ঝড়, বন্যা ও জলোচ্ছ্বাসের পর খেতে ফসল ওঠা পর্যন্ত এই সাইলোর মাধ্যমে খাদ্য সহায়তা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে। এ ব্যাপারে আলাপকালে স্টিল সাইলো প্রকল্প প্রকৌশলী আ.জ.ম. ইফতেখার বলেন, স্টিল সাইলো নির্মাণ প্রকল্পটির চুক্তি সম্পাদিত হয় ২০২১ সালের জুন মাসে। প্রাথমিক ভাবে ধারনা করা হচ্ছে প্রকল্পটি শেষ হবে ২০২৩ সালের আগস্ট মাস নাগাদ শেষ হবার কথা ছিল মাঝে জমি সংক্রান্ত একটু জটিলতার কারনে কিছুটা সময় বৃদ্ধি করা হয়েছে। দ্রুতগতিতে স্টিল সাইলো নির্মাণ কাজের প্রায় ৮০ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। আশা করি আমরা ২০২৪ সালের জানুয়ারী মাসে কাজ সম্পূর্ন করে হস্তান্তর করে দেব। যা পরবর্তী সময় ফেব্রয়ারীতে চালু করা হবে বলে জানান। সরকার ও বিশ্বব্যাংকের যৌথ অর্থায়নে নির্মিত আধুনিক খাদ্য সংরক্ষণাগার নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন করছে। এটি সম্পূর্ণ পরিবেশ বান্ধব ও কীটনাশকমুক্ত।