দিনাজপুরের হিলি রেলস্টেশনের আধুনিকায়ন ও সকল ট্রেনের যাত্রাবিরতি সহ ভারতীয় পণ্যবাহী ট্রেন খালাসের দাবিতে দেড় ঘন্টাব্যাপী এলাকাবাসীর মানববন্ধন। এসময় রাজশাহী থেকে ছেড়ে আসা চিলাহাটিগামী তিতুমীর আন্তঃনগর ট্রেনটি এক ঘন্টা আটকে রেখে মানববন্ধন করেন তারা। এতে উত্তরবঙ্গের সাথে ট্রেন যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। রোববার (১০ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০ থেকে সাড়ে ১১ টা পর্যন্ত স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, হিলি নাগরিক কমিটি, শিক্ষার্থী এবং হিলির বিভিন্ন সংগঠনের উদ্যোগে এলাকাবাসী মানববন্ধন করেন। দেশের অন্যান্য রেলস্টেশনের মতো হিলি রেলস্টেশনটিও গুরুত্বপূর্ণ। যেটি বৃটিশ আমলে নির্মিত। দেশ ভাগাভাগির পরও ভারতের সাথে এই স্টেশনে ট্রেন যোগাযোগ স্বাভাবিক ছিলো। ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এই রেলস্টেশন পরিদর্শন করেন এবং স্টেশনে দাঁড়িয়ে বক্তব্য দিয়েছিলেন। ১৯৫৩ সালে হিলি চেকপোস্ট ও ১৯৮৬ সালে হিলি স্থলবন্দর চালু হয়। এবন্দর থেকে সরকার প্রতি বছর প্রায় ৫০০ কোটি টাকা রাজস্ব পেয়ে থাকেন। কিন্তু এতো গুরুত্বপূর্ণ স্থান হওয়া সত্বেও এই স্টেশনে কোন ঢাকাগামী কোন আন্তঃনগর ট্রেনের যাত্রাবিরতি নেই। ভারত থেকে আসা পাসপোর্ট ধারী যাত্রী, দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা স্থলবন্দরে ব্যবসায়ীরা এই রেলস্টেশন ব্যবহার করতে পারে না। পাশাপাশি হিলিসহ আশপাশের লোকজন এবং কলেজ, ভার্সিটি ও বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা রেল সবা থেকে বঞ্চিত। এছাড়াও ভারত থেকে পণ্যবাহী ওয়াগন এই স্টেশনে খালাস করতে দেওয়া হয় না। ২০১৮ সালে দিনাজপুর-৬ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য শিবলী সাদিক হিলি রেলস্টেশনের সকল ট্রেনের যাত্রাবিরতি সহ স্টেশনটির আধুনিকায়নের প্রস্তাব সংসদে উপস্থাপন করেন। তৎকালীন রেলমন্ত্রী হিলি রেলস্টেশনের সকল সমস্যার সমাধানের আশ্বস্ত করেন। কিন্তু গত ৫ বছরেও হিলি রেলস্টেশনের কোন সমস্যার সমাধান হয়নি। যার ফলে হিলিবাসীর মনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এর ফলে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, হিলি নাগরিক কমিটি, বিভিন্ন স্থানীয় সংগঠন ও স্থানীয়রা মানববন্ধন করে ট্রেন থামিয়ে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, আমরা হিলিবাসী অবহেলিত। সরকারকে প্রতি বছর কোটি কোটি টাকা রাজস্ব দিয়ে থাকি। কিন্তু আমাদের হিলির কোন উন্নয়ন নেই। আমাদের এই রেলস্টেশনের উপর দিয়ে ঢাকাগামী সকল ট্রেন যাতায়াত করে। কোন স্টপেজ নেই। আমরা হিলি রেলস্টেশনের আধুনিকায়ন সহ সকল ট্রেনের যাত্রাবিরতি চাই। আমরা ট্রেন দাঁড়িয়ে রেললাইনে অবস্থান করছি। আমাদের দাবি না মানা হলে প্রয়োজনে রেললাইনে জীবন দিয়ে দিবো।