এশিয়ান গেমসের মতো বড় ক্রীড়া আসরে প্রথম অংশ নেবে বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল। গত সেপ্টেম্বরে সাফ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার কারণেই সাবিনা-কৃষ্ণাদের সামনে খুলে গেছে এশিয়ান গেমসের দুয়ার। প্রথম অংশগ্রহণেই বাংলাদেশের মেয়েরা পড়েছে সাবেক বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন জাপানের সামনে। গ্রুপে আছে সর্বশেষ বিশ্বকাপ খেলা ভিয়েতনাম, আর দক্ষিণ এশিয়ার দল নেপাল।
গেমসের পুরুষ ফুটবল অননূর্ধ্ব-২৩ দল (তিন জন সিনিয়র) হলেও নারীদের দলে নেই বয়সের সীমারেখা। তাই অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডে হওয়া সর্বশেষ বিশ্বকাপের দল নিয়েই যে চীনে আসবে জাপান ও ভিয়েতনাম সেটা ধরেই নেওয়া যায়। জাপান ও ভিয়েতনাম পূর্ণশক্তির দল নিয়ে গেমসে অংশ নিলে এই দুই ম্যাচে বাংলাদেশের মেয়েদের কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি হতে হবে।
সেপ্টেম্বরে সাফ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর নারী ফুটবল দলের ওপর দিয়ে বেশ ঝড় বয়ে গেছে। অলিম্পিক ফুটবলের বাছাইয়ে খেলতে পাঠানো হয়নি ফ্র্যাঞ্জাইজি লিগ হবে-হচ্ছে করে করে কয়েকজন ফুটবলার অন্যদেশে খেলার প্রস্তাব পেলেও তাদের অনুমতি দেওয়া হয়নি। জাতীয় দলের দুই অভিজ্ঞ খেলোয়াড় ডিফেন্ডার আঁখি খাতুন ও ফরোয়ার্ড সিরাত জাপান স্বপ্না ক্যাম্প ছেড়ে চলে গেছেন। দায়িত্ব ছেড়ে দিয়েছেন নারী ফুটবল জাগরণের অন্যতম কারিগর কোচ গোলাম রব্বানী ছোটনও। এশিয়ান গেমসের জন্য সাবিনাদের প্রধান কোচের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সাইফুল বারী টিটুকে। পুরুষ জাতীয় দলের সাবেক এই কোচের অধীনেই অনুশীলন চালিয়ে যাচ্ছেন মেয়েরা।
প্রথম অংশগ্রহণে নারী ফুটবল দল প্রধান টার্গেট করেছে নেপালকে। অন্য দুই ম্যাচের ফল নিয়ে ভাবনা নেই। নেপালে হারাতেই হবে- এমন মানসিকতা নিয়েই ১৮ সেপ্টেম্বর রাতে চীনের উদ্দেশ্যে উড়াল দেবে নারী ফুটবল দল। প্রথম ম্যাচ ২২ সেপ্টেম্বর জাপানের বিপক্ষে।
কোচ সাইফুল বারী টিটুও পাখির চোখ করেছেন নেপালের বিপক্ষে ম্যাচকে, ‘নেপালের বিপক্ষে ম্যাচটা আমাদের জিততে হবে। জাপান ও ভিয়েতনাম অন্য লেভেলের দল। বিশেষ করে জাপান। তারা একবার বিশ্বকাপ জিতেছে। ভিয়েতনাম প্রথম বিশ্বকাপ খেলেছে। সেখানে যুক্তরাষ্ট্র, পর্তুগাল, নেদারল্যান্ডসের মতো দলগুলোর বিপক্ষে খেলার অভিজ্ঞতা হয়েছে তাদের। জাপান ও ভিয়েতনামের বিপক্ষে খেলা দারুণ অভিজ্ঞতা হবে আমাদের মেয়েদের’- বলছিলেন সাইফুল বারী টিটু।
নেপালকে ফাইনালে হারিয়ে বাংলাদেশের মেয়েরা সাফ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। এর পর জুলাইয়ে নেপাল ঢাকায় এসে দুটি প্রীতি ম্যাচ খেলে ড্র করে গেছে। নেপাল চাইবে ঘরের মাঠে হারের প্রতিশোধ চীনের মাটিতে নিতে। বাংলাদেশ অবশ্যই চাইবে না সেটা হতে দিতে।
কোচ সাইফুল বারী টিটুর বলেছেন, ‘নেপালের বিপক্ষে কৌশল থাকবে- জিততেই হবে। জাপান ও ভিয়েতনামের বিপক্ষে খেলতে হবে অন্য কৌশলে। সাফের ফাইনালে নেপালকে হারিয়েছি, দক্ষিণ এশিয়ার সেরা হয়েছি। তাই এশিয়ান গেমসেও তাদের হারাতে চাই। সবাইকে সেই মানসিকতায়ই তৈরি করছি।’