ফরিদপুরের সালথায় জমি সংক্রান্ত বিরোধ মিমাংসা করে দেওয়ার কথা বলে এক প্রবাসীর স্ত্রীর কাছে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবী করার অভিযোগ উঠেছে দুই ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় প্রতিকার চেয়ে মানববন্ধন করেছেন ভুক্তভোগীর পরিবার ও এলাকাবাসী। রোববার দুপুরে উপজেলার আটঘর ইউনিয়নের আটঘর গ্রামে ভুক্তভোগী পরিবারের বাড়ির সামনের সড়কের উপর এই মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। এতে এলাকার শতাধিক নারী ও পুরুষ অংশ নেন। অভিযুক্ত ইউপি সদস্যরা হলেন, আটঘর ইউনিয়ন পরিষদের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারন ইউপি সদস্য মোঃ লতিফ মাতুব্বর ও ওই ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী ইউপি সদস্য রাজিয়া বেগম। মানববন্ধনে ভূক্তভোগী প্রবাসীর স্ত্রী রাজিয়া আক্তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, জীবিকার তাগিদে আমার স্বামী মোঃ রবিন মোল্যা দীর্ঘদিন ধরে মালয়েশিয়ায় অবস্থান করছে। স্বামী বিদেশে থাকায় কয়েক বছর আগে আটঘর মৌজার আটঘর উচ্চ-বিদ্যালয়ের সামনে আমাদের বাড়ির দক্ষিণ পাশে ১৪ শতাংশ জমি ক্রয় করে দেয় আমার শশুর আবজাল মোল্যা। যা আমাদের ভোগ দখলে রয়েছে। বছর খানেক আগে স্থানীয় দুলাল মোল্যা নামে এক ব্যক্তি ওই জমির পিছনে ৬ শতাংশ জমি ক্রয় করে তার মতো করে তিনি ভোগ দখল করে আসছে। কিন্তু কিছুদিন আগে আমার জমিতে টিউবয়েল স্থাপন করতে গেলে দুলাল মোল্যা তার জমি দাবি করে স্থানীয় ইউপি সদস্য লতিফ মাতুব্বর ও রাজিয়া বেগমকে নিয়ে বাধা সৃষ্টি করে। তিনি আরও বলেন, পরে আমরা নিরুপায় হয়ে জমির বিরোধ মিমাংসার জন্য ওই দুই ইউপি সদস্যের কাছে গেলে তারা আমার কাছে পাঁচ লাখ টাকা দাবি করেন। দাবিকৃত টাকা না দেওয়ায় তারা আমার পরিবারকে নানাভাবে হুমকি-ধামকি দিতে থাকে। একপর্যায় কোন উপায় না পেয়ে আমি বাদী হয়ে অভিযুক্ত ইউপি সদস্যদের বিরুদ্ধে আদালতে চাঁদাবাজির মামলা দায়ের করি। মামলা করার পর আরও বেপরোয়া হয়ে উঠে ওই দুই ইউপি সদস্য। তারা মামলা তুলে নেওয়ার জন্য আমার পরিবার ও মামলার স্বাক্ষীদের বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে হুমকি দিয়ে আসছে। আমরা বর্তমানে চরম নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছি। এদিকে জমিতেও যেতে পারছি না। এমনাবস্থায় সাংবাদিকদের মাধ্যমে ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে আমাদের নিরাপত্তা দাবী করছি । সেই সাথে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ারও জোর দাবি করছি। অভিযুক্ত ইউপি সদস্য লতিফ মাতুব্বর ও সংরক্ষিত নারী ইউপি সদস্য রাজিয়া বেগম বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা চাঁদাবাজির মামলা দেওয়া হয়েছে। মুলত স্থানীয় খালেক মোল্যার ৫ ছেলে ও ৪ মেয়ের কাছ থেকে বিভিন্ন দাগের অংশ থেকে মোট ২৬ শতাংশ জমি ক্রয় করে দুলাল, জহুর ও আবজাল মোল্যা। ওই জমি কে কোথা থেকে ভাগাভাগি করে নিবে তা নিয়ে ঝামেলা বাধে। বিষয়টি নিয়ে আমরা একাধিকবার শালিস- মিমাংসার চেষ্টা করি। থানায়ও একাধিকবার মিমাংসার জন্য বসা হয়েছে। কিন্তু সবাই মেনে নিলেও আবজাল মোল্যা মেনে নেয়নি। পরে বিবাদমান জমিতে টিউবয়েল স্থাপন করতে গেলে ৯৯৯ নম্বরে ফোন পেয়ে পুলিশ এসে বাধা দেয়। এ সময় আমরা উপস্থিত ছিলাম না। তারপরেও আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ এনে মামলা দিয়ে হয়রানি করছে।