দুর্গাপুরে ইউএনও‘র কর্মকাল ছিলো ২বছর ৭মাস। প্রশাসনিক কাজের পাশাপাশি কর্ম এলাকার সর্বস্তরের মানুষের হৃদয় জয় করেছেন তিনি। বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ, নৈতিক শিক্ষা, শিশুদের কুইজ প্রতিযোগিতা, অফিসিয়াল দায়িত্ব, শিক্ষার গুণগত মান বৃদ্ধি, করোনা কালীন সময়ে আক্রান্তদের বিশেষ সেবাদান, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ্যদের বাড়ী বাড়ী গিয়ে ত্রান ও শীতবস্ত্র বিতরণ সহ অতিরিক্ত দায়িত্ব পালনে ইতিবাচক ভূমিকা রেখেছেন তিনি। যার স্বীকৃতি স্বরূপ জেলায় শ্রেষ্ঠ ইউএনও পদক, বিভাগীয় পদক সহ স্থানীয় বহু পদক পেয়ে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করেছেন কবি, লেখক ও সাংস্কৃতিক ইউএনও রাজীব-উল-আহসান। মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) ছিল তাঁর শেষ কর্মদিবস। শেরপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক হিসেবে পদোন্নতি পাওয়ায় তিনি দুর্গাপুর উপজেলা থেকে বিদায় নিয়েছেন। এ উপলক্ষে উপজেলা শিল্পকলা একাডেমি‘র বিভিন্ন শাখার শিশু-শিল্পীরা তাঁদের প্রানের অভিভাবক ইউএনও রাজীব-উল-আহসান কে পায়ে হাত রেখে সালাম করে অশ্রু ভেজা নয়নে তাকে বিদায় জানিয়েছে। শিশুদের বোবা কান্না যেন থামছে না। কি মায়া জন্মিয়েছেন ইউএনও রাজীব-উল-আহসান শিশুদের মনে? প্রিয় কর্মস্থল দুর্গাপুর ত্যাগ করার আগে তিনি জেলা ও উপজেলা প্রশাসন, দুর্গাপুর প্রেসক্লাব সহ বিভিন্ন দপ্তর, বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন ও বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের কাছ থেকে প্রায় ৫০টি বিদায় সংবর্ধনা পেয়েছেন, যা দুর্গাপুর উপজেলার ইতিহাসে বিরল। রাজীব-উল-আহসান ২০২১ সনের ২৫ ফেব্রুয়ারী ইউএনও হিসেবে দুর্গাপুরে যোগদান করেন। এখানে যোগদানের পর থেকে বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শন করে ঝরে পড়া রোধ ও বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতির হার বৃদ্ধিকরণে শিক্ষক, অভিভাবকদের সাথে পরামর্শক্রমে গ্রহণ করেছেন। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের মাঝে বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ, নৈতিক শিক্ষা বিস্তারের লক্ষে বিভিন্ন জাতীয় অনুষ্ঠানে কুইজ প্রতিযোগিতা, কবি সাহিত্যিকদের নিয়ে সেমিনার, শিল্পকলা একাডেমির সংস্কৃতি বিস্তারে বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহন করে শিশুদের মনে জায়গা করে নিয়েছেন তিনি। মঙ্গলবার দুর্গাপুর থেকে বিদায় কালে নানা শ্রেণি পেশার মানুষের ভালবাসায় অশ্রুসিক্ত হয়ে বিদায় নেন তিনি। বিদায়ের সময় তিনি নিজেও যেমন কেঁদেছেন, তেমনি উপস্থিত সকলেই ঝরিয়েছেন চোখের পানি। বিদায়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাজীব-উল-আহসান বলেন, এখানকার মানুষ খুবই আন্তরিক বিধায় সকলকে নিয়ে সুন্দরভাবে কাজ করতে পেরেছি। কতটুকু পেরেছি তা বলতে পারব না, তবে চেষ্টা করেছি। দায়িত্ব পালনে সবাই যেভাবে আমাকে সহযোগিতা করেছেন, সে জন্য আমি সকলের প্রতি কৃতজ্ঞ। আপনারা আমার জন্য দোয়া করবেন আমি যেন দেশ ও জাতীয় সেবায় নিজেকে নিয়োজিত রাখতে পারি।