মেঘনা অববাহিকায় ১০ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত ২২দিন মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা থাকার পর নদীতে পাওয়া যাচ্ছে ঝাঁকে ঝাঁকে পোয়া মাছ। প্রত্যাশার চেয়েও বেশি মাছ ধরতে পারায় খুশি জেলেরা। লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার বালুরচর, আলেকজান্ডার, চরআলগী, বিবিরহাট, রামগতি বাজার এবং টাংকি মাছঘাট ঘুরে এমন দৃশ্য চোখে পড়েছে। প্রতিটি মাছ ঘাটেই ক্রেতা-বিক্রেতা ও মাছ ব্যবসায়ীদের সরব উপস্থিতিতে উৎসবমূখর পরিবেশ বিরাজ করছে। একুশ দিনের নিষেধাজ্ঞায় ঝিমিয়ে পড়া মাছ ঘাটগুলো দিনরাত চব্বিশ ঘন্টাই এখন সরগরম।দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে পাইকারদের পাশাপাশি খুচরো গ্রাহকারাও আসছেন পোয়া মাছ কিনতে। ২৫ থেকে ৩০কেজি ওজনের প্রতি ক্যারট (ঝুঁড়ি) পোয়া মাছ বিক্রি হচ্ছে ৪ হাজার থেকে ৬ হাজার টাকা পর্যন্ত। নিলামের পাশাপাশি ব্যক্তি পর্যায়ে দামাদামি করেও কেনা যায়। ২/৩ পোয়া মাছে এক কেজি হয় এমন প্রতি কেজি মাছের দাম ৩০০-৪০০ টাকা। ৬-১০টিতে এক কেজি হয় এমন প্রতিকেজি পোয়া মাছ বিক্রি হচ্ছে ১২০-২০০ টাকায়। আলেকজান্ডার মাছ ঘাটের ব্যবসায়ী শাহ আলম, তবারক হোসেন এবং জেলে তুহিন ও নুর মোহাম্মদ জানান, অন্যান্যবারের তুলনায় এবার পোয়া মাছ বেশি ধরা পড়ছে। মেঘনা নদীর নামার দিকে এবং বঙ্গোপসাগরের আশপাশে সবচেয়ে বেশি পোয়া মাছ ধরা পড়ছে। জেলেদের সাথে আলাপকালে জানা যায়, ভোরের দিকে যাত্রা শুরু করে সন্ধ্যার আগে ফিরে আসলে গড়ে ১০ থেকে ১৫ ক্যারট মাছ ধরা পড়ে। ঘাটে ক্রেতা থাকায় দামও ভালো পাচ্ছেন তারা। বড় ধরনের ফিশিং ট্রলারগুলো পোয়া মাছ ধরায় আগ্রহ না থাকায় মধ্য মানের ট্রলার বা নৌকা গুলোয় মূলত পোয়া জাল পাঁতছেন নদীতে। পাশ্ববর্তী জেলার নোয়াখালীর সোনাপুর থেকে আসা ইমদাদ জানান, অভিযানের পর এসেছিলাম ইলিশ মাছ কিনতে। কিন্তু বাধ্য হয়ে পোয়া মাছ কিনতে হয়েছে। দামও সস্তা পেয়েছি। অন্যদিকে, প্রচুর পরিমানে পোয়া মাছ ধরা পড়ায় উপজেলার বিশটি বরফকলও বরফ উৎপাদনে ব্যস্ত সময় পার করছে। দেখে মনে হবে প্রতিটি বরফ কলই যেন এক একটি পোয়া মাছের গুদাম। রামগতি উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো: জসিম উদ্দিন জানান, অন্যান্যবারের তুলনায় এবার অনেক বেশি পরিমান পোয়া মাছ ধরা পড়ছে। আমরা উপজেলার প্রতিটি মাছ ঘাট পরিদর্শন করেছি। মাছ সংরক্ষন ও বিপনন কার্যক্রম বিষয়ে জেলেদের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।