বর্ষা মৌসুমের প্রথম দিকে বৃষ্টিপাতে শুরু হয় ভারত থেকে আসা পাহাড়ী ঢল। বেড়ে যায় ব্রম্মপুত্র নদ ও হলহলিয়া নদের খোড়¯্রােত। এতে ভারত থেকে আসা চিলমারী ও উলিপুর উপজেলার পুর্বাংশে সাহেবের আলগা ইউনিয়নের ব্রম্মপুত্র নদের কাতলামারীর মুখ বন্ধের উপক্রম হওয়ায় হলহলিয়া নদের পানি প্রবাহ কমে গেছে। পানিতে খোড় ¯্রােত না থাকায় এসব নদের বুকে জেগেছে বালুচর। এসব চরে শুকিয়ে যাওয়া বালুচরে এখন কৃষকেরা বোরোধান আবাদ করছেন। রৌমারী ও রাজিবপুর উপজেলার চর খেদাইমারী, বলদমারা, পালেরচর, ফলুয়ারচর, ধনারচর, ধনারচর চরের গ্রাম. কাটিয়ামারীর চর, ডাটিয়ারচর, চরসাজাই, চরবদরপুর, খারুভান্স চর, ভেলামারীরচর, এবং চিলমারী ও উলিপুর উপজেলার পুর্বাংশের সাহেবের আলগা, খেরুয়ারচর, অষ্টিমির চর, নয়ারহাট ও চরগেন্দার আলগা দিয়ে বয়ে যাওয়া হলহলিয়া নদীতে এখন বিস্তীর্ণ জেগেছে বালু চর। বন্যা মৌসুমে খোড়¯্রােতে পানিতে তলিয়ে যায় সব বালুচর। একসময় এ নদীতে আশপাশের মানুষ মাছ ধরে জীবন যাপন করতো। বর্তমানে বালুচরে পরিপুর্ণ হওয়ায় এবং নদীতে পানি না থাকায় নদের পাশের মানুষের পেশাও বদলে যাচ্ছে। নভেম্বরের দিকে পানি কমে এলে বালুচর বোরো চাষের উপযোগী তোলার কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েন এসব মানুষ। চলে ধান চাষ। ১৫ ডিসেম্বর সরেজমিনে এসব এলাকায় গিয়ে ঘুরে দেখা যায়, বলদমারা ঘাটের পশ্বিম পার্শে হলহলিয়া নদের বুকে চরের জমিতে বাইটকামারীর আফসার আলী নামের একব্যাক্তি বোরো চাষ করেছে। পাশেই অন্য ব্যাক্তিরা জুলহাঁস, করিম উদ্দিন, হাশেম, ফরিদুল হক, তারাও এবার প্রথম শুকিয়ে যাওয়া তাদের জমিতে বোরো ধান চাষ করছেন। বোরো চাষি ফরিদুল হক, আফসার আলী জানান, নদের বালুচরে আবাদ করায় খরচ কম লাগে। এখানে বোরো আবাদে বাড়তি পানির সেচ লাগেনা। খুব বেশী সারও ব্যাবহার করতে হয় না। উলিপুর উপজেলার পূর্বাংশের সাহেবের অলগা গ্রামের মোগল আলী বলেন, ব্রম্মপুত্র নদের কাতলামারীর মুখটি হওয়ার উপক্রম হওয়ায় নদের তলদেশে বরোধান চাষের উপযোগী হয়েছে। এ মুখটি পুর্নাঙ্গ বন্ধ করে দিতে পারলে নদের পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে যাবে। এতে উলিপুর, চিলমারী উপজেলার পুর্বাংশ ও রৌমারী রাজিবপুর উপজেলার পশ্চিমাংশ হলহলিয়া নদের পানি প্রবাহ কমে যাবে। সেই সাথে নদের পারের মানুষ নদের তীর ভাঙ্গন থেকে রক্ষা পাবে। অন্যদিকে গম, ধান, মরিচ, ভুট্রা, পাটসহ মৌসুমী ফসল গুলি ফলাতে পারবে। রৌমারী কৃষি অধিদপ্তর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল কাইউম চৌধুরী বলেন, হলহলিয়া নদে একসময় খোড় ¯্রােতে কিছুই করা যেতো না। এবার এ নদীতে বলুচরে পরিনত হওয়ায় ভুমিহীন কৃষক ও জমির মালিকরা সুযোগে এসব নদী চরে বিভিন্ন ফসলের চাষাবাদ করতে দেখা গেছে। এবার নদের তলি শুকিয়ে যাওয়ায় তাঁরা বোরো আবাদ করছেন।