খুলনার কয়রা উপজেলার মহারাজপুর ইউনিয়নের শাকবাড়িয়া খালের দু’ পাড়ের দখলকৃত অবৈধ স্থাপনা ছাত্র-জনতার যৌথ প্রচেষ্ঠায় উচ্ছেদের পর সেতু নির্মানের কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে। ফলে দির্ঘদিন হাজার হাজার সুবিধা বঞ্চিত মানুষ সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। জানা গেছে, উপজেলার মহারাজপুর ইউনিয়নের শাকবাড়িয়া খালের দু’ পারের অবৈধ স্থাপনা সরাতে না পারায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘এসএ-জেডটি জেভি’ সেতু নির্মান প্রকল্পের কাজ বন্ধ করে চলে যায়। প্রায় ২ বছর ধরে জায়গা দখলমুক্ত করার চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ায় তারা এই সিদ্ধান্ত নেয়। পরবর্তীতে প্রশাসনের নির্দেশে খালের দক্ষিন পাশের অবৈধ স্থাপনা সরানো হলেও উত্তর পাশের স্থাপনা থেকে যায়। এমতঅবস্থায় ৬ জানুয়ারী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ স্থানীয় জনগনকে সাথে নিয়ে উত্তর পাশের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে। উচ্ছেদের পর ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সেতু নির্মান কাজ শুরু করেছে। এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, শাকবাড়িয়া খালের উপর এই সেতুটি এলাকাবাসীর জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ২০০৯ সালে প্রলয়নকারী ঘূর্ণিঝড় আইলার আঘাতে সেতুটি ভেঙে যায়। যার ফলে কয়রা সদর হতে মহারাজপুর, মহেশ্বরীপুর ও বাগালীও আমাদী ইউনিয়নের জনসাধারনের সাথে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন এবং যানবাহন চলা-চল বন্ধ হয়ে যায়। ব্রিজটির গুরত্ব বিবেচনা করে ২০২২ সালের ৩ আগস্ট স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) থেকে ৩৬ মিটার আরসিসি গার্ডার সেতুর নির্মাণ কাজের জন্য ‘এসএ-জেডটি জেভি’ নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেয়া হয়। কাজটি শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে। কিন্তু শাকবাড়িয়া খালের দু’পাড়ে দখলকৃত অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ না হওয়ায় কাজ শুরু করতে পারেনি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। ফ্যাসিস্টদের দোসররা সেখানে দোকানপাট ও পাকা স্থাপনা গড়ে তুলে দখলে রেখেছিল। যার কারনে সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু করা সম্ভব হয়নি। বিষয়টি নিয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান উপজেলা প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট কর্তপক্ষের কাছে অভিযোগ করেও কোনো সমাধান হয়নি। ফলে বাধ্য হয়ে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজ বন্ধ রেখে চলে যায়। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি মিরাজ হোসেন বলেন, সেতুর দু’পারে অবৈধ স্থাপনা থাকায় যথা সময়ে কাজ শুরু করা যায়নি। অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ হওয়ায় আমরা কাজ শুরু করে দিয়েছি। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কয়রার ছাত্র প্রতিনিধি গোলাম রব্বানী বলেন,শাকবাড়িয়া খালের উপর সেতু নির্মিত না হওয়ায় চায ইউনিয়নের মানুষ দির্ঘদিন চরম ভোগান্তিতে রয়েছে।
কয়রা উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী মোহাম্মদ দারুল হুদা জানান, শাকবাড়িয়া খালের দু’ পারের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ না হওয়ায় কাজ শুরু করা যায়নি। এখন উচ্ছেদ হয়েছে সে জন্য ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজ শুরু করেছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুলী বিশ্বাস বলেন, সেতুর দু’পারের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের পর ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানে কাজ শুরু করেছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে শেষ সেতু নির্মান কাজ শেষ হবে।