১৯৭১ সালে ৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে স্বাধীন হয়েছে বাংলাদেশ। এর মাধ্যমে আমরা পেয়েছি বিজয়। আজ বিজয়ের এই দিনে খুশির সঙ্গে জাতির সেই শ্রেষ্ঠ সন্তানদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করছেন সামাজিক, রাজনৈতিক, সরকারি, বেসরকারি বিভিন্ন সংগঠনসহ সমগ্র জাতি। সেই সঙ্গে প্রতিবন্ধীরাও পিছিয়ে নেই। মহান বিজয় দিবসে ১৬ ডিসেম্বর ভোরে প্রায় ১২ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে রিকশা চালিয়ে ময়মনসিংহের নান্দাইল কেন্দ্রীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিতে ছুটে আসেন প্রতিবন্ধী কিশোর শাহরিয়ার হাসান আরিফ। তার দুই পা পঙ্গু। চলতে ফিরতে কষ্ট হয়। একটি ছোট্ট অটোরিকশা যোগে চলাফেরা করেন তিনি। ফুলের তোরা হাতে অটোরিকশা থেকে নেমে স্মৃতিসৌধে যেতে কষ্ট হচ্ছে আরিফের। এ অবস্থায় তাকে সহযোগিতা করতে দৌড়ে ছুটে আসেন স্মৃতিসৌধে ডিউটিরত নান্দাইল মডেল থানার এএসআই আলয় চন্দ্র সরকার। বিষয়টি নজর কারে অনেকের। প্রতিবন্ধী কিশোর শাহরিয়ার হাসান আরিফ জানান, তার গ্রামের বাড়ি উপজেলার জাহাঙ্গীরপুর ইউনিয়নে। বাবা আব্দুস সালাম মাস্টার একটি হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক। তার নিজের জন্য তৈরি করা তিন চাকার ছোট অটোরিকশা যোগেই চলাফেরা। নান্দাইল বাজারে প্রতিবন্ধী আরিফের ছোট একটি দোকান রয়েছে। সেখানেই কর্ম করেন। আজ মাহান বিজয় দিবস তাই কাক ডাকা ভোরে ঘুম থেকে উঠে প্রায় ১২ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে উপজেলা সদরে এসেছেন। তিনি বলেন, নিজের চোখে অনেক মানুষ স্মৃতিসৌধে ফুল দেওয়া দেখে খুব ভালো লাগছে। এখানে এসে সবার সাথে ফুল দিতে পেরে নিজেকে খুব খুশি লাগছে। স্মৃতিসৌধে ডিউটিরত থানা পুলিশ এএসআই আলয় চন্দ্র সরকার বলেন, আজ মহান বিজয় দিবস। নান্দাইল উপজেলা প্রশাসন, উপজেলা আওয়ামী লীগ সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন স্মৃতিসৌধে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেছেন। ফুলের তোড়া হাতে এই প্রতিবন্ধী ছেলেটি রিকশা থেকে নামতে কষ্ট হচ্ছে দেখে আমার সহযোদ্ধা উপজেলা প্রেসক্লাব সাধারন সম্পাদক শামসুজ্জামান বাবুল দৌড়ে এসে তাকে নামিয়ে স্মৃতিসৌধে ফুল দিতে সহযোগিতা করেন। তিনি বলেন, আমার খুব ভালো লাগছে। মনের ভিতর থেকে প্রতিবন্ধী এই ছেলেটির প্রতি আমার শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা।