শীতের প্রকোপ বাড়ার সাথে সাথে নরসিংদীর প্রায় ঘরে ঘরেই ঠান্ডাজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। রোগীরা কেউবা বাসা-বাড়িতে টোটকা চিকিৎসা নিচ্ছে। গুরুতর অসুস্থ রোগী ও শিশুরা ভিড় জমাচ্ছে বিভিন্ন হাসপাতালের বহির্বিভাগ ও চিকিৎসকদের চেম্বারে। শীতের শুরুতেই সব বয়সী মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে ঠান্ডাজনিত সর্দি, কাশি ও জ্বরে। তবে শিশু ও বৃদ্ধদের ক্ষেত্রে এ রোগের প্রভাব বেশি দেখা দিয়েছে। কোনো কোনো শিশু আবার আক্রান্ত হচ্ছে ডায়রিয়ায়। মৌসুমি এসব রোগ শিশু আর বৃদ্ধদের বেশি হলেও এতে আক্রান্ত রোগী ও অভিভাবকদের আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পরিবেশ দূষণ, রাস্তায় ধুলোবালিসহ বাতাসে বিভিন্ন ধরনের ভাইরাসের কারণেই বেড়েছে শ্বাসকষ্টজনিত রোগের প্রকোপ। তবে সামান্য চিকিৎসায় এসব রোগ সেরে যায় বলেই জানিয়েছেন তারা। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, শীতের শুরুতেই সব বয়সী মানুষ আক্রান্ত হয় ঠান্ডাজনিত সর্দি, কাশি ও জ্বরে। শিশু ও বৃদ্ধদের ক্ষেত্রে এ রোগের প্রবণতা দেখা দেয় বেশি, যে কারণে ঝুঁকিও রয়েছে তাদের। সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, নরসিংদী সদর হাসপাতাল সহ জেলা হাসপাতালের বহির্বিভাগ ও আন্তঃ বিভাগে বর্তমানে জ্বর, হাঁপানি, ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে বহু রোগী চিকিৎসারত রয়েছেন। কর্তব্যরত নার্সরা জানান, শীতের শুরু থেকে প্রতিদিন নিউমোনিয়া, জ্বর, হাঁপানিসহ বিভিন্ন ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে ৩০-৪০ জন করে শুধু শিশু ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন সদর হাসপাতালে। ভুক্তভোগী রোগী সোলায়মান বলেন, হঠাৎ মোটরসাইকেল চালাতে যেয়ে আমার ঠান্ডা লাগে। পরদিন সকালে নাক বন্ধ, মাথাভারী হওয়া সাথে জ্বর, বুকে কফসহ কাসিতে এখন আমি গুরুতর অসুস্থ হয়ে বাসায় চিকিৎসাধীন আছি। এ ব্যাপারে নরসিংদী সদর হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ ডাঃ আব্দুল বাকির বলেন, শীতের কারণে বিভিন্ন রোগ দেখা দিতে পারে। ঠান্ডার কারণে এ্যালার্জির প্রকোপ বাড়ে। তার মধ্যে শ্বাস-প্রশ্বাস ও চামড়ার রোগও বেড়ে যায়। বিশেষ করে শিশু বাচ্চাদের, বৃদ্ধদের, গর্ভবতী মায়েরা বেশি আক্রান্ত হয়। প্রতিদিন হাসপাতালে যে রোগীরা আসছেন চিকিৎসা নিতে তার মধ্যে প্রায় ৪০ শতাংশ রোগী আসছেন ঠান্ডাজানিত রোগে আক্রান্ত হয়ে। তবে শিশুদের বেলায় ৩টি বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে। যদি কোনো শিশুর সর্দি-জ্বরের সঙ্গে কাশি, বুকে ঘ্যাড় ঘ্যাড় শব্দ হয় আর যদি শিশুর শ্বাস নিতে কষ্ট হয় তবে অবশ্যই ওই শিশুকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতে হবে। আর এখন শিশু রোগীর সাথে বয়স্কদের আরও বেশি সতর্ক থাকতে হবে।