ছাত্র রাজনীতি বন্ধসহ ছয় দফা দাবিতে উত্তাল হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)। গতকাল শনিবার (৩০ মার্চ) সকাল ৮টা থেকে বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড হাতে বিক্ষোভ শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। তাদের দাবি, গত ২৮ মার্চ রাত ২টার দিকে ক্যাম্পাসে একটি রাজনৈতিক দলের নেতারা প্রবেশ করেন। ওই সময় বিপুল সংখ্যক বহিরাগত প্রবেশ করায় ক্যাম্পাসজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, মধ্যরাতে ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের প্রবেশে শঙ্কিত তারা। ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক কোনো প্রোগ্রাম করা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুস্পষ্ট বিধিমালা লঙ্ঘন। যেসব রাজনৈতিক ব্যক্তিরা বুয়েটে রাতের আঁধারে প্রবেশ করেছেন তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তারা।
শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো- ১. বিশ্ববিদ্যালয়ের সুস্পষ্ট বিধিমালা লঙ্ঘনের দায়ে আমরা বুয়েটের সব ব্যাচের শিক্ষার্থীরা ২৮ মার্চের মধ্যরাতে রাজনৈতিক সমাগমের মূল সংগঠক ইমতিয়াজ রাব্বীকে বুয়েট থেকে স্থায়ী বহিষ্কার এবং হল বাতিলের দাবি জানাচ্ছি। ২. উক্ত ঘটনায় ইমতিয়াজ রাব্বীর সঙ্গে বুয়েটের যেসব শিক্ষার্থী জড়িত ছিল তাদের বিভিন্ন মেয়াদে হল এবং টার্ম বহিষ্কার চাই। ৩. বহিরাগত রাজনৈতিক ব্যক্তি যারা ক্যাম্পাসে প্রবেশ করলো, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে কিনা? তারা কেন, কীভাবে প্রবেশ করার অনুমতি পেল- এ বিষয়ে সুস্পষ্ট সদুত্তর এবং জবাবদিহিতা বুয়েট প্রশাসন কর্তৃক আসতে হবে। ৪. উপরোক্ত ১ নম্বর এবং ২ নম্বর দাবি শনিবার (৩০ মার্চ) সকাল ৯টার মধ্যে বাস্তবায়ন করা না হলে আমরা সব ব্যাচের শিক্ষার্থীরা ডিএসডাব্লু’র পদত্যাগ চাই। ৫. ক্যাম্পাসে মধ্যরাতে বহিরাগতদের প্রবেশের কারণে আমরা নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত। এর প্রতিবাদ হিসেবে ৩০ ও ৩১ মার্চের টার্ম ফাইনালসহ সব অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম বর্জন করছি। ৬. আন্দোলনরত বুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে কোনো রকম হয়রানিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া যাবে না- এই মর্মে লিখিত প্রতিশ্রুতি দিতে হবে।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ৭ অক্টোবর বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এরপর থেকে বুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন সময় ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি অনুপ্রবেশের বিরুদ্ধে ঐক্য গড়ে তুলে।