মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারী ২০২৫, ০৩:৫৫ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম ::
পটিয়ায় থামানো যাচ্ছে না মাটি কাটা নান্দাইলে বিএনপি থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী এড. কাজী আরমান কটিয়াদীতে বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার চুরি, বোরো ধান রোপন নিয়ে শঙ্কিত কৃষকরা ভালুকায় জিয়াউর রহমানের ৮৯তম জন্মবার্ষিকী পালিত ধনবাড়ী উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে দিনব্যাপী বিজ্ঞান ও তারুণ্য উৎসব টঙ্গীতে প্রধান শিক্ষকের উপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন লামা অবৈধ ৪ ইট ভাটায় যৌথ অভিযান : ১১ লাখ টাকা জরিমানা পাখির কিচির-মিচিরে মুখরিত শ্রীমঙ্গলের ‘বাইক্কা বিল’ কয়রা শাকবাড়িয়া খালের উপর সেতু নির্মান কাজ শুরু আশার প্রতিফলন এলাকাবাসীর ফটিকছড়িতে শহীদ জিয়ার নামে টুর্নামেন্টে প্রধান অতিথি নৌকার চেয়ারম্যান! কারণ দর্শানোর নোটিশ

আরমানকে ‘আয়নাঘর’ থেকে ছাড়াতে টিউলিপের সাহায্য চেয়েছিল পরিবার

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় রবিবার, ১৮ আগস্ট, ২০২৪

দ্য টেলিগ্রাফের প্রতিবেদন
জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলীর ছেলে ব্যারিস্টার আহমাদ বিন কাসেমকে (আরমান) বন্দিদশা থেকে মুক্ত করতে যুক্তরাজ্যের ‘সিটি মিনিস্টার’ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাতনি টিউলিপ সিদ্দিকের কাছে সহায়তা চেয়েছিল তার পরিবার। ‘সবিনয় অনুরোধ’ জানিয়েছিলেন আরমানের আইনজীবীও। কিন্তু তাদের কোনো ধরনের সহায়তা করেননি টিউলিপ। তিনি যদি সহায়তা করতেন, তাহলে হয়তো দীর্ঘ আট বছর ‘আয়নাঘরে’ বন্দি থাকতে হতো না ৪০ বছর বয়সী আরমানকে। অনেক আগেই আলোর মুখ দেখতেন যুক্তরাজ্যে পড়াশোনা করা এ আইনজীবী। গত শনিবার (১৭ আগস্ট) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
লেবার পার্টি থেকে নির্বাচনে জয়ী টিউলিপ শেখ হাসিনার ছোট বোন শেখ রেহানার মেয়ে। সরকারের পতন হলে গত ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে পালান বাংলাদেশের সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বর্তমানে ভারতে রয়েছেন তিনি। টেলিগ্রাফের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, টানা ১৫ বছরেরও বেশি ক্ষমতায় থাকা শেখ হাসিনার শাসনামলে বিরোধীদের আক্রমণ করা হয়, গ্রেফতার করা হয় এবং গোপনে বন্দি করা হয় অনেককে। একই সঙ্গে চলেছে বিচারবর্হিভূত হত্যাকা-ও। ২০১৬ সালে নিখোঁজ হন ৪০ বছর বয়সী কাসেম আরমান। আইনজীবীরা বলেছেন, টিউলিপ সিদ্দিক তার ব্যক্তিগত যোগাযোগ ব্যবহার করে তাকে ‘বন্দিদশা’ থেকে মুক্তি দিতে পারতেন। কিন্তু তিনি তা করেননি।
কাসেম আরমান নিখোঁজ হওয়ার এক বছর আগে ২০১৫ সালে টিউলিপ সিদ্দিক হ্যাম্পস্টেডের এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর সাংবাদিকদের বলেছিলেন, খালা আমাকে সবচেয়ে বেশি শিখিয়েছেন। আমি তার কাছ থেকেই রাজনীতি সম্পর্কে সবকিছু শিখেছি। সামাজিক ন্যায়বিচার, কীভাবে প্রচারণা চালাতে হয় এবং কীভাবে জনগণের কাছে পৌঁছাতে হয়, এসব শিখেছি।
হাউজ অব কমনসে টিউলিপের প্রথম ভাষণের সময় গ্যালারিতে শেখ হাসিনা স্বয়ং উপস্থিত ছিলেন। বাংলাদেশের সরকারি বিভিন্ন অনুষ্ঠানেও টিউলিপের উপস্থিতি দেখা গেছে। যেমন- শেখ হাসিনা ও ভ্লাদিমির পুতিনের সাক্ষাতের সময় সেখানে ছিলেন তিনি। এছাড়া, টিউলিপ নিজেই একবার ব্লগে লিখেছিলেন, তার খালার দল আওয়ামী লীগের হয়ে কাজ করেছেন তিনি।
টেলিগ্রাফ লিখেছে, ব্যক্তিগত যোগাযোগ ব্যবহার করে টিউলিপ সিদ্দিক হয়তো ব্যারিস্টার আরমানকে বন্দিদশা থেকে মুক্ত করতে পারতেন। কিন্তু তিনি তার কোনো উদ্যোগই নেননি। ২০১৬ সালের ৯ আগস্ট ব্যারিস্টার আহমাদ বিন কাসেম আরমানকে নিজ বাসা থেকে ধরে নিয়ে যান আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পরদিন, গত ৬ আগস্ট মুক্তি পান তিনি। ঢাকার অদূরে একটি কর্দমাক্ত জমিতে তাকে ফেলে যাওয়া হয়।
আরমানের পক্ষে লড়াই করা আইনজীবী মাইকেল পোলাক বলেন, আয়নাঘর নামক একটি গোপন অভ্যন্তরীণ বন্দিশালায় কাসেম আরমানকে বন্দি করে চোখ বেঁধে রাখা হয়েছিল এবং কারও সঙ্গে কথা বলার অনুমতি দেওয়া হয়নি। ভয় ছিল, তাকে মৃত্যুদ- দেওয়া হবে।
তিনি বলেন, কাসেম আরমানকে বন্দি করা ছিল শেখ হাসিনার নীতির প্রতিফলন। এটি স্পষ্ট যে, তার শাসনামলে জোরপূর্বক গুম এবং নির্বিচারে আটক রাখার একটি সরকারি নীতি ছিল। আর শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পরপরই আরমানকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। এ আইনজীবী বলেন, আমি এবং আরমানের পরিবার উভয়েই কাসেম আরমানের মুক্তির জন্য টিউলিপ সিদ্দিককে তার খালার কাছে তদবির করার অনুরোধ করেছিলাম। কিন্তু আমরা কোনো সহায়তা পাইনি। তিনি আমাদের কোনো সহায়তা করেননি।
পোলাক আরও বলেন, ২০১৭ সালের নভেম্বরে চ্যানেল ফোর নিউজের একটি প্রতিবেদনে টিউলিপ সিদ্দিককে আরমানের মামলা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল। তারপরেই বাংলাদেশি পুলিশ ঢাকায় বসবাসরত আরমানের বৃদ্ধ মা, বোন, স্ত্রী এবং দুই মেয়ের কাছে যায় এবং তাদের ভয় দেখিয়ে ওই প্রতিবেদন প্রচার আটকানোর চেষ্টা করে। এ থেকে বোঝা যায়, লন্ডনে যা ঘটেছিল তার প্রভাব ঢাকাতেও পড়েছিল।
এ আইনজীবী বলেন, আমি বুঝি না টিউলিপ কেন এমন করেছিলেন এবং কেন শেখ হাসিনাকে নিজের সন্তানদের জন্য রোল মডেল বলেছিলেন, যেখানে তার (শেখ হাসিনা) বিরুদ্ধে শত শত মানুষ গুম করার এত এত প্রমাণ রয়েছে।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com