গণভবনে থাকা ফ্যাসিবাদী দৈত্য নাই, পালিয়ে গেছে। কিন্তু দ্রব্যমূল্যের বাজারসহ সর্বত্র পলাতক ফ্যাসিবাদের প্রভাব বিদ্যমান বলে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে এবি পার্টি। গতকাল বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলন থেকে দলের নেতারা বলেন; জনসাধারণের নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণে চাহিদা, উৎপাদন ও সরবরাহ ব্যবস্থার দিকে সরকারকে নজর দিতে হবে। আমরা প্রতিবছরই দেখছি দ্রব্য মূল্য নিয়ে কারসাজি শুরু হয়, মিডিয়ায় নানা আলোচনা চলে কিন্তু এর সমাধানে সরকারের স্বল্প বা দীর্ঘমেয়াদি কোন ব্যবস্থা চোখে পড়েনা। পতিত ফ্যাসিবাদী আওয়ামী সরকার এই বাজার সিন্ডিকেট বানিজ্যকে পারিবারিক বানিজ্যে পরিনত করেছে। কয়েকটি পরিবারের নিকট পুরো জাতিকে জিম্মি করে এর ফায়দা লুটেছে শেখ পরিবার। যার ফলাফল জনগণ এখনো ভোগ করছে বলে দাবি করেন তারা।
“নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি ও সিন্ডিকেট বানিজ্য রোধে অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের করনীয়” বিষয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে উপরোক্ত বক্তব্য রাখেন এবি পার্টির নেতারা। সংবাদ সম্মেলনে দলের পক্ষ থেকে বক্তব্য উপস্থাপন করেন এবি পার্টির যুগ্ম সদস্য সচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ।
সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন এবি পার্টির আহবায়ক প্রফেসর ডাঃ মেজর (অবঃ) আব্দুল ওহাব মিনার ও সদস্যসচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন এবি পার্টির যুগ্ম সদস্য সচিব ব্যারিস্টার যোবায়ের আহমেদ ভুইয়া, প্রচার সম্পাদক আনোয়ার সাদাত টুটুল, সিনিয়র সহকারী সদস্য সচিব এবিএম খালিদ হাসান, মহানগর উত্তরের আহবায়ক আলতাফ হোসাইন, সহকারী সদস্য সচিব ব্যারিস্টার সানী আব্দুল হক সহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।
ব্যারিস্টার ফুয়াদ বলেন, প্রতিবছর আমরা একই চিত্র দেখি এবং মিডিয়ায় নানা আলোচনা শুনি কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় বিগত সরকার গুলো জনগণের এই ভোগান্তি নিয়ে কার্যকর কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য সামগ্রী নিয়ে বিগত আওয়ামী সরকার গুটিকয়েক পরিবারের হাতে পুরো দেশকে জিম্মি করে লুটপাটের সাম্রাজ্য কায়েম করে। যার ফল এখনো দেশবাসী ভোগ করছে। আমরা মনেকরি বর্তমান অন্তর্র্বতীকালীন সরকারকে দ্রব্যমূল্যের এই সমস্যা সমাধানে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। স্বল্প মেয়াদে জনগণের দুর্ভোগ লাঘবে অতি প্রয়োজন বিবেচনায় বিশেষ পণ্য সমুহের তালিকা নির্ধারণ করে তার আমদানি উন্মুক্ত করা ও শুল্ক হ্রাস বা প্রয়োজনে শুন্য শুল্কে আমদানির সুযোগ দিতে হবে। দীর্ঘ মেয়াদে জনগণের চাহিদা নিরূপণ করে অতিপ্রয়োজনীয় ২০ থেকে ২৫ টি পণ্য উৎপাদন ও সরবরাহে কর্পোরেট এবং ডিজিটাল সিস্টেম চালু করতে হবে। কৃষক পর্যায় থেকে ভোক্তা পর্যন্ত সরবরাহে মধ্যসত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য বন্ধ করতে হবে। সরকার চাইলে আমরা এবিষয়ে বিস্তারিত পরিকল্পনা সরকারকে সরবরাহ করবো যেখানে খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে কোন সংকট তৈরির কোন সুযোগ হবেনা। খাদ্য নিরাপত্তা সংকট দিনশেষে রাষ্ট্রের নিরাপত্তা সংকট তৈরি করে বিধায় বর্তমান সরকারকে এই সংকট সমাধানে আমরা স্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের আহবান জানান।
উপস্থিত সাংবাদিকদের ধন্যবাদ জানিয়ে মেজর মিনার বলেন, দেশের জনগণ, রাজনৈতিক দল সমুহ, ছাত্র-জনতা সবাই এই সরকারকে ব্ল্যাংক চেক দিয়েছে যেন তারা নিরাপদে জীবন যাপন করতে পারে। খবার কিনতে ঋণ করতে না হয়, চিকিৎসার জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরতে না হয়। আমরা সরকারের উপদেষ্টাদের বলবো দয়া করে জনগণের কষ্ট বুঝে সেভাবে ব্যবস্থা নিবেন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন এবি পার্টি ঢাকা মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব সেলিম খান, দক্ষিণের যুগ্ম সদস্য সচিব সফিউল বাসার, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল হালিম নান্নু, যুবনেতা তোফাজ্জল হোসেন রমিজ, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মশিউর রহমান মিলু, রিপন মাহমুদ, শরণ চৌধুরী, আমেনা বেগম, সুমাইয়া শারমিন ফারহানা সহ কেন্দ্রীয় ও মহানগরীর বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।